মঙ্গলবার, ১ ডিসেম্বর, ২০১৫

সম্পাদকীয়





কবিতার কথা কবিতায় বলা ভালো

ছন্দপতন হলোই না হয় তাতে

তবুও তো ঘুম ভাঙবে আগামী কালও 

রেশটুকু শুধু থেকে যাবে কবিতাতে...


শুভেচ্ছা নিরন্তর...








এবং একুশ

স্বপন দেব



চাহিদা…
স্বপন দেব



চাহিদার কোন শেষ নেই যেন... 

মনের উইশ-লিস্ট এ প্রতিদিন

জমা হচ্ছে কি কি পেতে চাই এখনো।

মেঘ হয়ে ছুঁয়ে যেতে চাই পৃথিবীর

হর্ষিত ললাট, ছায়াহীন মাতাল মাঠে 

তোমার হাত ধরে হেঁটে যেতে চাই…

আমাদের অনাগত সন্তানের বুকে

বিপ্লবের বীজ পুঁতে দিয়ে যেতে চাই। 

শব্দের গ্রন্থি খুলে বেহাগে সেতার বাজাই। 

ফেরারী বাজের মত হানা দিতে চাই 

কবিতার রহস্য শরীরে। বিহ্বল আকাশে 

কাটা ঘুঁড়ি হয়ে ভেসে যেতে চাই আর এবং ,

I want to keep my tongue young !!




এবং একুশ

ইন্দ্রনীল ভাদুড়ী





তুমি
ইন্দ্রনীল ভাদুড়ী



এক মেঠো পথ ধরে হাঁটতে হাঁটতে 
উদাসী বাউলের গান কানে ভেসে এল 
ভোলা মন উঠল নেচে মাতাল করা সুরে 
অজানা ভালবাসা , সুগভীর প্রেমের রেষ গেল ছড়িয়ে 
বৈরাগী ভবঘুরে এই মনে 
আর দূর দিগন্তের সীমানায় 
যেখানে নীলাভ আকাশ ছুঁয়েছে সোনালি জমি 
সেখানে দৌড়ে চলে যেতে ডাক দিল প্রাণ । 
তীব্র গতিতে ছুটে যেতে যেতে 
ঝোড়ো বাতাসের চেয়েও জোরে 
বিষাক্ত ভাবনাকে পিছনে ফেলে 
চরম একাকিত্যের সাথে লড়ে 
খুঁজে পাওয়ার চেষ্টা করলাম সেই তোমাকে ... 
আল পথের বাঁকে দাঁড়িয়ে 
এলচুলে মাথা ভরিয়ে 
মিষ্টি হাসির মোহ ছড়িয়ে 
তাকালে, আমার চোখের দিকে ।। 
আর প্রশ্ন করে উঠলে – 
‘ ভাল আছো তুমি?’ 
নিমেষে চারিদিক হল কৃষ্ণবর্ণ ... নিবিড় আঁধারে 
মেঘের গর্জন ভরিয়ে সজোরে 
বিদ্যুতের রূপোলী রঙে গগন গেল ভরে 
শীতল বারিধারা নামলো অঝোরে ...। 
বৃষ্টির তোড়ে সিক্ত তুমি,আমি আর দুটি আত্মা ... 
ভিজতে ভিজতে একদৃষ্টে চেয়ে প্রস্ফুটিত 
অন্তরের লুকোনো বার্তা অস্ফুট উচ্চারণে ... 
‘তোমারই পথ চেয়ে ছিলাম আমি 
কয়েকটি বৃষ্টির কণা উপহার দেবো বলে ‘










এবং একুশ

সুধাংশু চক্রবর্তী



একে কি বেঁচে থাকা বলে 
সুধাংশু চক্রবর্তী

চারিদিকে বারুদের গন্ধ। অসহায়ের করুণ
আর্তনাদে বাতাসের ডানা ভারী হয়।
আনন্দের ছিটেফোঁটা আর অবশেষ নেই
ইতস্তত ছড়িয়ে আছে রাশিরাশি ভয়।
আতঙ্কে কথা নেই কারও কারও মুখে
ফ্যাকাসে মুখগুলিতে জমেছে বিন্দু বিন্দু ঘাম
হতাশার গ্লানি ছিন্নভিন্ন করে যায় মনটাকে
সাহস কোথায় করে প্রতিবাদ অবিরাম । 
একে কি মানুষের মতো বেঁচে থাকা বলে? 
তবুও ব্যর্থ জীবনের ভার বয়ে চলতেই হয়
আতঙ্কগ্রস্ত দু’চোখের সামনে থাকে ঝুলে 
তথাকথিত সভ্য সমাজের নিদারুণ অবক্ষয়।





এবং একুশ

সেখ সাদ্দাম হোসেন



পাঠক
সেখ সাদ্দাম হোসেন


বয়স্ক চশমা। ঝোলা ব্যাগ আর
ষাটোর্দ্ধ যুবকটিকে নিয়ে হেঁটে যাচ্ছে
কবিতা। বায়না
বাকি সব দাঁড়িয়ে দেখা পাঠক ।




এবং একুশ

শিবলী শাহেদ



অনন্তব্রত
শিবলী শাহেদ


নখাঘাতে আহত সহস্র সৈনিক দাঁড়িয়ে আছে তোমার ওই জারুল গাছটার নীচে। প্রিয় বোন পারুল— অথচ এই ঘরের ভেতর তুমি কার জন্য এত জমিয়েছ কান্না, বড় যত্নে লালিত! কার জন্য এই অনন্তব্রত...
বলছিলাম, কিছুটা নমনীয় হ'লে আরো ভালো হতো। নাকি নমনীয়তার ভীষণ চূড়ায় দাঁড়িয়েই তুমি ভাবছ— এই যে অগণিত সৈনিকেরা, গুঁড়ো ধোঁয়াশায় এক হরিণ-শাবক খুঁজতে গিয়ে তারাও একদিন কুয়াশা হবে?









এবং একুশ

পিয়ালী বসু




এপিসোড
পিয়ালী বসু 


শীতের এপিসোড শুরু 
দক্ষিণাপণের পাঞ্জাব এম্পরিয়াম থেকে কেনা আমার ফুলকারি কুর্তিটায় তোমার অবাধ্য অঙ্গুলির ডোরাকাটা ছোঁয়া 
বাতাস এখন আর্দ্র 
আমাদের শেষ মন কষাকষির ছবিটা তাই বেশ অস্পষ্ট 
সোহাগী দুপুর গুলোর আহ্লাদী আদর গুলো বরং স্পষ্ট সেখানে 
বাতাসে রক্তের দাগ পড়ে কি ? 
নিজের ইজারা করা সম্পত্তি বেহাত হলে 
হয়ত বা এমনই 
তবুও ঘাড়ে পিঠে বুকে কানের লতি তে 
আজও 
তোমার অবাধ্য অঙ্গুলির ডোরাকাটা ছোঁয়া ~
একা মেয়েটার নরম গালে আজও প্রহরীর মত রাত জাগে ভালবাসা ~







এবং একুশ

অনিন্দ্য মুখোপাধ্যায়




কথকতা 
অনিন্দ্য মুখোপাধ্যায়



নাম জিজ্ঞেস করতে ঘাড় সোজা করে চুল এলিয়ে বলেছিলে,"অপরাজিতা,আপনি না হয় দোলন-ই বলবেন ।" উত্তর দিইনি , শুধুই হেসেছিলাম , এছাড়া তখন আর কি ই বা করার ছিল ।

তুমি: "আপনার হাত ভীষণ ভলো" বলেছিলাম, "রোগা রোগা কালো লোমশ হাত , একে তুমি সুন্দর বলছ !!"

তুমি (হেসে, বলেছিলে): "ভালো লেখেন, ভালো আঁকেন তাই সুন্দর বলেছি ।"

আমি: ন্যাটা তো আমি নই , লিখি বা আঁকি সবই ডান হাতে , বাঁ হাত টা তবে কেন সুন্দর হবে !! বামপন্থী বলে ?"

তুমি: (হাসতে হাসতে),"কথাও বলেন ভীষণ সুন্দর , শুনতে কিন্তু সত্যি ভালোলাগে , কখন যেন সময় কেটে যায় ।"

আমি: "সময় বহিয়া যায় নদীর স্রোতের প্রায়, তুমি কি কিছু বলতে চাইছো আমায় ?"

তুমি: ( চোখ নামিয়ে বললে)" নামটা ও আপনার সত্যি দারুন, আপনার জন্য মানানসই ।" আমি : " ঠিকই বলেছ , কানা ছেলেই তো পদ্মলোচণ হয় ।"

তুমি : " ওই দেখুন , ও ভাবে বলছেন কেন , আপনার সত্যি অনেক গুন, নিন্দে করার যো টি কিন্তু নেই ।"

আমি: " কবি বলেছেন ' চাঁদের হাসি বাঁধ ভেঙ্গেছে,উছলে পড়ে আলো,' তবু জানতো লোকে এখনও বলে চাঁদের গা টা কলঙ্কেতে কালো ।"

তুমি: " সে যা ইচ্ছে আপনি বলুন , আমি কিন্তু আমার কথায় স্থির ।"

আমি: "কতটা জানো আমায় ? জানো কত জনকে বলেছি মিথ্যে কথা, দিয়েছি সাথে চলার মিথ্যে প্রতিশ্রুতি ।"

তুমি: " কেন ভারি করছেন বলুনতো এই সুন্দর সময়টা কে ,তার চেয়ে বলুন অন্য কোনো কথা, আপনার জীবনের ।"

তোমার স্টেশন এগিয়ে আসছিল , তাই হয়ত চেয়েছিলে মোবাইল নম্বর । সত্যিই একদিন ফোন এসেছিল, " কে বলছি বলুন তো ?"

আমি: "ওঃ কি খবর দোলন ?"

তুমি: " বাঃ কি ভীষণ শ্রবন ক্ষমতা !, টেলিফোন ই চিনতে পেরে গেলেন,আমিতো ভেবেছিলাম আপনার সব বান্ধবী দের ভীড়ে আমি হয়ত দূরের কোনো তারা ।"

আমি: " তুমি কি আমায় আকাশ ভাবো নাকি !! কি ভাবো আমারও আছে লক্ষ লক্ষ তারা !!"

তুমি: "আমি তো তাই ভাবি । আপনি আকাশ আর আমি একটা অনেক দূরের তারা । আমায় মনে রাখবেন তো, বলুন না আমাকে ভুলে যাবেন না তো।

আমি (বলেছি আমার পুরোনো কথার প্যাঁচেই ,): "কি যে বলো !! তোমায় কি ভুলতে পারা যায় !!"

তুমি: " সত্যি বলছেন ! আমার যেন বিশ্বাস ই হয় না । আপনার তো অনেক অনেক তারা, কোন টা কখন ঝরে যায়,সব খবর কি রাখেন?"

আমি: " হ'ল কি তোমার !! কেন বলছ আবোল তাবোল কথা ?"

তুমি কিন্তু বলেই চলেছ : "জানেন আকাশের অনেক অনেক তারা, কিন্তু তারা দের শুধু একটাই আকাশ ।",







এবং একুশ

দর্শনা বসু




অবুঝ সীমায়
দর্শনা বসু


সম্পর্কের ক্ষয়ে আসা আলোও কি 
উৎসুক অলিন্দের জাফরি খুঁজে বেড়ায়- 
আনত মুখের ছদ্মগম্ভীর রেখায়, 
কনে দেখা আভা ছুঁড়ে দিয়ে 
লুকিয়ে পড়ে আনাচে কানাচে। 
সীমাহীন নীল দ্বন্দ্বেরাও 
খুঁজে নেয় নিবিড় আলিংগন- 
তীব্রগন্ধী মুগ্ধতারা উপচে পড়ে 
শরীরের অবুঝ সীমায়।








এবং একুশ

পলাশ কুমার পাল

কবি
পলাশ কুমার পাল

কত কথা বুকের ভিতর করে কোলাহল!
বলতে চাওয়ার আকুল রোদন খুঁজে যায় তল....
ওড়ে কত ঝরাপাতা নীল আকাশকে ছুঁতে,
ডানাহীন অসহায়তা তবু মাটিতেই সুখ পাতে-
ভাগ্যলিখন প্রচ্ছদে আঁকতে চাওয়া ছবি,
রঙের হাহাকারে প্রাণপিপাসা সে সবই!
তারপরেতেও মাদল বাজে মনের দ্বারে দ্বারে,
কোমর দুলিয়ে মনও নাচে বসন্ত-আঁধারে....
আঁধারেতে নাচে ধূপের ধোঁয়া , একচিলতে ছবি
আত্মদহনের নেশায় দাহ্য ধূপই কবি।





এবং একুশ

জাফর পাঠান



অর্ধাঙ্গিনী
জাফর পাঠান




জৈব চাহিদা বা সন্তান উৎপাদনে শুধু নয়
আরো অনেক চাওয়া পাওয়া নেপথ্যে কথা কয়,
তোমার রূপ যৌবনরে চাঁদ রোসনাই চমক
আঁকা বাঁকা দেহের সর্পিল ছন্দের ছন্দ ছমক,
ঐ চোখের হরিণী চাহনি যদি বুকে এসে বিঁধে
তবু থেকে যায় ধর্ম বন্ধনে-ধার্মিক কিছু ক্ষিধে,
নারীর নারীত্বকে মেনে যদি তুমি-নারিত্ব সও
তবে তুমি পূর্ণ নারী, আধা নর-আধা নারী নও।


নারীর ভূষণে নারী সুন্দর, মেয়েলী আচরণ
চলনে বলনে তুমি স্ত্রী, না বুঝার নাই কারণ,
দেখো, তোমার শক্তি কি সম-কোনো পুরুষের মত
নাকি পুরুষালী গতর তোমার দেহে আছে তত,
তুমি যদি হও ধরণীর তরী, স্বামী তার মাঝি
ডুববেনা সে তরী-ভক্তি বিশ্বাসে তুমি যদি রাজি,
নারী যদি নর হয়ে, নরকে বানাতে চায় নারী
সুখকে ত্যাগীছে সে নারী-দিব্যি দিয়ে বলতে পারি।




এবং একুশ

মমতা দাস




এখন জীবন 
মমতা দাস




হিমেল ছায়া নামে, ঠান্ডা হয়ে আসে রোদ্দুর 
জানিনা জীবন পথে চলা কদ্দুর 
সাথী সব মাঝপথে ছেড়ে গেল 
নিঃশব্দ বিকেল ঘের ,
মায়া তবু ভালোবেসে জড়িয়ে থাকে 
মনকে সঙ্গ দেয়,
স্মৃতি রাখে ঘিরে।





এবং একুশ

পুণ্যশ্লোক দাশগুপ্ত




সুনিপুণ আকাঙ্ক্ষার কবিতা
পুণ্যশ্লোক দাশগুপ্ত 



১ 
তুমি চাইলে অহংকার একটি স্লোগান
তুমি না চাইলে ফড়িঙ অথবা ফিরে যাব
আজকাল তুমি পরের কথায় কান দিচ্ছ,
ঝিলের পাশেই অন্য আর একটি ঝিল
আমি সেখানেও বসি কবিতা লিখি
অনেক চেষ্টা করেও ফোনে তোমায় পেলাম না
সেলফিতে আছো মনে হয়,
নিজের মধ্যে থাকো পুরোনো প্রেমিকের গুণগান করো
আমার তাতেও কোনো আপত্তি নেই
প্রেম তো আর পালিয়ে যাচ্ছে না
সেখানে আর কিছু নেই,তোমার কুরুশ-কাটা উল
তুমি নেই কিন্তু তুমি আছো যেন 
সেই মুগ্ধতা এসেছিল সুধার তাড়নায়
ভেঙে দাও মৃদু কেঁপে উঠব আর কিছু নয়
জীবন তবে শরীরের খাঁচার ভিতরেই থাকে না
দরজা খুলে সে বেড়িয়েও আসে
আগে বুঝিনি





এবং একুশ

তন্ময় বসু



ইডিয়েট - দুটো
তন্ময় বসু



শুভ এক সকালে

কোন পাখীর যদি ঘুম না ভাঙে

সব ফুল যদি আদালতে যায় এজাহার দিতে

হরিণের সারি যদি কুচকাওয়াজ করে প্রাসাদ অভিমুখে

যত মৌমাছি আর পিঁপড়েরা শ্লোগান তোলে তোমায় ঘিরে

শত শত ভীমরুল গান্ধীঘাটে হুল কামিয়ে কৌপিন পড়ে

শকুন শেয়ালরা হ্যবিষান্ন খেযে মুখশুদ্ধি চায়

ঋতুমতী কুকুরীর ফি চায় কুকুরের দল

শুকনো পাতা হরিনাম গায়

খসে পড়ার মুহুর্তে -

মুরগীর ঠ্যাং

গেরস্থ ব্যাঙ

বেজে ওঠে খোল

হরিবোল হরিবোল।












এবং একুশ

শঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়



আকাঙ্খা 
শঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়



আমায় একটু বৃষ্টি দাও, একটুখানি আলো
আমায় একটু আকাশ দাও, তারায় ঝলোমলো
আমায় একটু উঠোন দাও, পিঁড়িটা বড় একা
আমায় কিছু স্বপ্ন দাও সঙ্গোপনে দেখা
আমায় কিছু রক্তরাঙা গোলাপ এনে দাও
আমায় দিও নাছোড়বান্দা আজন্ম ভরসাও
আমায় দাও ভোরের বাতাস, এক-দু মুঠো ভাত
আমায় দাও পূর্ণিমার কিরণসম্পাত
আমায় দিও বাঁচার লোভ আস্থাভরা হাতে
আমায় দাও দৃপ্ত সুর ক্ষিপ্ত মধুরাতে
আমায় দাও ভরা কোটাল, ছড়িয়ে দিই পথে
আমায় একটু লজ্জা দাও বাঁচব কোনোমতে
আমায় কিছু বিছন দাও, নতুন ফসল চাই
আমায় একটু আগুন দাও দুচোখ ভরে খাই
আমায় একটা কলম দিও, নিব’এর তরবারি
আমায় একটু অহং দাও, মাথা তুলতে পারি
আমায় একটু শক্তি দাও দুঃখ সয়ে নিতে
আমায় কিছু বন্ধু দাও আজান আরতিতে
আমায় একটা জীবন দাও মানুষ সবটাই
আমায় একটু সুযোগ দিও উজাড় হতে চাই ।




এবং একুশ

ব্রতী মুখোপাধ্যায়




একটু এগিয়ে যাও
ব্রতী মুখোপাধ্যায়



একটু এগিয়ে যাও, নদীচিহ্ন পাওয়া যাবে
গাছগাছালির কঙ্কাল ছাড়া বাতাসযাননির্ভর ধুলোময়লা ছাড়া
আর কেউ নেই এখন যে তোমায় বলতে পারে
তিনখানি ইট কোথায় ছিল


একটু এগিয়ে যাও, শোনা যাবে কিভাবে
মাতাপিতৃহীন বালিকার মতো অন্ধকার একা একা কাঁদছে
এই সেদিনও চাঁদের রোদ্দুরে
(বেপরোয়া চোখের জলের গান গেয়ে উঠলে কোথাও কেউ)
স্বপ্নের পড়শিরা
পরস্পরকে জড়িয়ে ধরে ভালোবাসার অলঙ্কার হয়ে উঠত

এগিয়ে যাও,
পাবে
শুকিয়ে গেছে যে রক্ত, বেশিদিন বাসি হয় নি দাগ
পাবে
উৎসন্ন হওয়ার আগে অনাদরের হাহারব আকাশের দিকে উড়ে গেছে
তার স্পর্শ যা এখনও ঠান্ডা হয় নি

তারপর ?
তারপর কি করবে ?
বলো কিছু
কিছুই বলবে না ?

[রাত্রিপাঠ]







এবং একুশ

ত্রিভুবন জিৎ মুখার্জী


সকালের চা
ত্রিভুবন জিৎ মুখার্জী



ভরা পেয়ালায় তৃপ্ত মনে শেষ চুমুকেই মহা শূন্যতা
ধূমায়িত উষ্ণ শিহরন ক্ষণে মনের কাটায় বিষণ্ণতা। 
উদ্বুদ্ধ হলাম খানিক ক্ষণে কাটিয়ে দিলাম নীরবতা,
যত আলস্য নেই অবশ্য সকালের এই স্তব্ধতা।
এক পেয়ালা চা অবশ্য পুলক অনুভবের পূর্ণতা,
এর অন্যথা জীবন ব্যর্থ নেই তাতে কোন পূর্ণতা।










এবং একুশ

সিয়ামুল হায়াত সৈকত




অঙ্ক
সিয়ামুল হায়াত সৈকত



আফিমের উষ্ণ অনুভব-
ঠোঁটে, কামড়ে দিয়েই ঘুমচোখ তোর!
আদুল হাত-নোখে ভালোবাসি বলিস্
দিনরাত কি অসহ্য ভালোবাসি।
একমাত্র স্বপ্নকন্যা যে কিনা উডেই..
তুই আর তুই, ঘুমিয়ে পড় এক্ষুণি;
ভালোবাসা বড্ড বেহিসেবি অঙ্ক!














এবং একুশ

দীপঙ্কর বেরা




অতীতের মূর্ছনা 
দীপঙ্কর বেরা




নদীর বাঁকে নদীর কথা চিনতে করিনি ভুল

মাটি খুঁড়েই রহস্যভেদ ফুটছে জীবন ফুল ,

কষ্টের হাতে হাত রেখে এগিয়ে চলা পথে

কাঁটার বকুল মুকুট মাথায় চলি নিজের মতে

যাত্রা শেষে নির্যাসটুকু চেনায় গোলাপ শোভা

হাজার বাণী লুকায় বুকে থাকে নীরব বোবা ।

চাপা পড়া কান্না হাসি নাচে সৌধ সীমানায় 

একে একে হয় যে অতীত বর্তমানের পায় ।

নদীর কথা নটে শাকেও মুড়িয়ে মোটে যায় না

জীবনের সুর বাজিয়েই চলে অতীতের মূর্ছনা ।



















এবং একুশ

পলাশ কুমার পাল

সম্পর্ক
 পলাশ কুমার পাল



বোতল আর ছিপি
সম্পর্ক-

সিঁদুর আর স্ত্রী
সম্পর্ক-

লিপস্টিক আর ঠোঁট
সম্পর্ক-

গাড়ি আর চাকা
সম্পর্ক-

১, ২, ৩, ৪
ক্রমশ...

নূতন সমীকরণে কবিতা,
ছন্দহীন চিত্রকল্প।













এবং একুশ

অরুণিমা মন্ডল দাস






জবাব
অরুণিমা মন্ডল দাস



পার্ক স্ট্রীট চত্বরের রেস্তোরাঁ গুলিতে
গলা কাটা খাসি, পাঁঠা, সদ্য ঘাস খেয়ে আসা বাছুরটা ঝুলছে!??
মশারি পরিহিত আধুনিক রমনী আর উরু আর পশ্চাৎদেশের ঠিক নিম্নভাগে ছিদ্র করা জিন্সের প্যান্ট পরিহিত মডার্ণ ভদ্রলোক নাকে রুমাল চাপা দিয়ে হাঁটছেন !!!??
আঁকা বাঁকা চলাফেরা, উদ্ধত শিক্ষিত চাউনিতে রাস্তার ধুলোবালি ভয়ে সন্ত্রস্ত!!!
গলাকাটা বাছুরটা কিছু বলতে চাইছে!!!
মনে মনে ক্ষুব্ধ হয়ে সমাজকে ধিক্কার দিচ্ছে!!
দাম্ভিক হিন্দুত্বের পাষাণ ছাতিতে তীর বর্ষনের মত প্রশ্ন ঠুকে দিচ্ছে!
আর নিজেই আঘাতে জর্জরিত হয়ে পড়ছে!!
আমি মাদার টেরিজা হতে চাই /
কাদম্বিনী হতে ,চাই ইন্দিরা গান্ধী হতে চাই/
সনিয়া গান্ধী হতে চাই ,কামিনী রায় হতে চাই ,বেগম রোকেয়া হতে চাই ,পি টি উষা হতে চাই/
মন্তব্যে পড়ে চমৎকার আর ফুলের মালার ছবি!!!!
যদি বলি ভাগ্যের পরিহাসে পুরুষসমাজের প্রোলোভনের স্বীকারে জর্জরিত বিতর্কিত লেখিকা তশলিমা হতে চাই !
বলিউডের সানি লিওনে, টলিউডের পাউলি দাম!
মন্তব্যে ঠাসা হয় গালির ফুলঝুরি, বিকিনি, যৌনাঙ্গের ছবি, কুৎসিত ছবির সংগে কুৎসিত গালাগাল!???
#
আমরা সংকীর্ণমনা ভারতবাসী কবে প্রকৃত মানুষ হব!!!
বহিরঙ্গের চপলতা না দেখে অন্তরঙ্গের সুমিষ্টতা গ্রহণ করতে শিখব!!
স্যুট বুট পরা ভিখারীদের অনুকরণ করে, গান্ধীগিরি অনুসরণ করে, কতদিন রাস্তার ধারে ভিখারীদের লাইন বাড়াব!!!
যে দেশে অর্ধেক মানুষ ঠিকমতো খেতে পায় না সে দেশে নির্মল ভারত কি করে হয়!!!!!
#
পেটের দায়ে হাড়ভাঙ্গা খাটুনির পর বাড়ি ফেরে টেলিভিশনের পর্দায় ১৩বছরের মেয়ের ধর্ষণের খবর দেখায়!!
তখন ঠিক কি মনে হয়/
বিধানসভায় শিক্ষিত নেতা নেত্রীদের বক্তৃতার হাত পিঠ চাপড়ানি ,লাঠালাঠি, চেয়ার টেবিল ভাঙ্গা দেখলে ঠিক কি মনে হয়!
ছেলের এস স সি প্রাইমারী রেজাল্টের আগেই হাইকোর্ট
মেয়ের প্রেমিকের মা সোনার বিছে পণ চাইল!?
ভাই মহাপুরুষ ইঞ্জিনীয়ার বশিনী র লেজ ধরে ঘরজামাই!!???
বাবা মা জঞ্জাল রূপ বৃদ্ধাশ্রমে পড়ে!!
ইঞ্জিনীয়ার ভাই মাঝেমধ্যে পাঁচ দশটাকার অমৃতবৃষ্টি করুণার ঝুলিতে ঘটান!!!??
#
বলতে পারো সমাজের সুস্থতা কোথায়!!??
বড়রা ছোট কে
ছোট রা তার ও ছোটকে
ম্যাৎসান্যায় পক্রিয়ার মত অভিযোজিত হচ্ছে!!??
জটিল পরিস্থিতি তে বড় মাছ যেমন ছোটো মাছকে উদরস্থ করে/
তেমনি স্বার্থপর বড়লোকেরা চুনোপুঁটি গরিবদের যাঁতাকলে পিষে খাচ্ছে!??
#
ধানের জমির মিষ্টতা হারাচ্ছে কীটনাশকের প্রখর তিক্ততায়!
ঢাকার মসলিন কেটেকুটে রুমাল টপ আর সর্টকার্ট ড্রেস তে পরিনত হচ্ছে!?
#
রাজনৈতিক মিছিলদের জবাব চাই 
চিৎকার/
ঠিক কিসের জবাব আর কিসের জন্য/ ব্রিগেডে জমজমাট ভাষণ 
দোষারোপের কেচ্ছা আর মহিলা নির্যাতনের আগাম ভর্তুকি!!??
#
পঁাচ বছরের বাচ্চা বুঝতে পারে না 
সে ঠিক কোন দলে যাবে!
কোন জিন্দাবাদে নাম লেখাবে!!
#
একজন ভালো অভিনেতা 
একটা ভালো ছবি তেই মনে দাগ কাটে!!
একজন লেখক যত ভালোই লিখুক না কেন/
ষ্পট বয় ,ওয়েটার দের মত বড়বাবু আর বাবুনী দের হাত পা ঘসেঘষে দিন কাটাতে
হয়!!??
যতক্ষণ না সম্পাদকদের চোখ আর কান না খোলে!!
অনেকের চোখটা খোলা থাকে/
কানটা বিড়ি সিগারেটের ধোঁয়ায় বন্ধ থাকে/
অনেকের কানটা খোলা থাকে /
কিন্তু চোখটা নতুনদের পান্ডুলিপি দেখলে খচখচ্ করে ওঠে /
সিবিআই জেরা করে রবীন্দ্রনাথ আর শক্তি চট্টোপাধ্যায়ের পিতামহ হয়ে ওঠেন!!????
#
সাইকেলে বাইকে ঘুরে ঘুরে আন্দোলন ঠিক করতে পারি না/
লাঠি মেরে মাথা ফাটিয়ে আন্দোলন করতে পারি না/
গনপিটুনি গনধর্ষণ করে আন্দোলন করা যায় না/
মিডিয়ার বৈঠকখানায় দামী চা, বিস্কুট খেয়ে তর্ক করে টেবিল ফাটিয়েও আন্দোলন হয় না/
#
কিন্তু
বাচ্চা ছেলেকে চায়ের দোকানে বেদম প্রহার করলে কষ্ট হয়/
ভিখারীদের চিৎকার ,মূর্খামি ,অন্ধত্বের হাহাকার দেখলে কষ্ট হয়/
গরিবের মুখের খাওয়ার কেড়ে নিয়ে
মন্ত্রীদের সুইস ব্যাঙ্কে টাকার পাহাড় 
দেখলে কষ্ট হয়/
প্রধানমন্ত্রীর ভাষণে দেশের মন্ত্রীদের নিন্দা উপহাস বিদেশের
মাটিতে গিয়ে করলে খুবই কষ্ট হয়/
#
হিন্দু মুসলিম ভাই ভাই/
পিছনে উসকানি আর 
হাই ভোল্টেজের কারেন্ট শক
বিনিময় করছে তাই!?
#
ক্ষমতা থাকলে ভাই ভাই !
না হলে গনধোলাই দিয়ে
গর্তে কবর দিয়ে ভজন কীর্তণ গাই!?
#
টিকটিক আর ঝিঁ ঝিঁ পোকার ডাক
শুনে বেঁচে আছি তাই!
হাত পা বাঁধা পাবলিক
আমরা/
বেঁচে থেকেও মড়ার মত বাঁচি ভাই!!???



















এবং একুশ

পিনাকী



তুমিই সেই মেয়ে...
পিনাকী




তুমিই সেই মেয়ে...

জন্মাবধি কাল্পনা করে এসেছি যাকে,

যৌবনে পা রাখার পর থেকে

কল্পনায় রং মিশিয়ে ছবি এঁকেছি যাকে মনে মনে,

তুমিই সেই মেয়ে।



হ্যাঁ, তুমি...তুমিই সেই নারী,

যার সাথে সংসার পাততে পারব না জেনেও

কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে, পায়ে-পা

মিলিয়ে এক সাথে হাঁটতে চেয়েছিলাম।

যার শরীরে উগ্র মাংসের গন্ধ নয়,

পেয়েছিলাম সুগন্ধি আতরের সুবাস।



তুমিই সেই মেয়ে...

যার ছবি ভেসে আসে কালের তিমির রজনী ভেদ করে,

অনাদি অনন্ত হৃদয় উৎস হতে।

নিজেরে হারাই বারে-বারে

শুধু তোমাকেই খোঁজার ছলে।



তুমিই সেই নারী

যার শরীরের নরম স্পর্শ আজও অনুরনন তোলে

প্রতিটি শিরায়-শিরায়,

মন ভরে যায় স্নিগ্ধ আবেশে।

শরীরী কামনার জন্য নয়, আজও ভালোবাসি

নিজেকে তোমার মাঝে খুঁজে পাই বলে,

তোমার চোখের তারায়, মনের মাঝে

চাই যে নিজেকে হারাতে ।

বাঁচতে চাই যাকে আঁকরে ধরে

তুমি, হ্যাঁ, তুমিই সেই মেয়ে।




















এবং একুশ

রবিবার, ১ নভেম্বর, ২০১৫

সম্পাদকীয়




কি বলিস মন? কষ্টকুমারী?
কিসের এত খবরদারী? 
তুই তো জানিস- 
তোর জন্য সব ছাড়তে পারি... 
তোর জন্য ঘুম ভাঙা ভোর 
রাতের আকাশ- সেও তো তোর 
তোকেই দিলাম বৃষ্টি আমার 
ফাগুন রাতে মন হলো ভার...


কি বলিস মন? কষ্টবিলাস? 
সত্যি বল, 
স্পষ্ট করে দেখতে কি পাস? 
মনের ভিতর তোর বসবাস 
রঙিন সুতোয় বাঁধছি যে 
প্রাণ 
দেখ তো চেয়ে, তোরই তো নাম...


সব ছেড়েছি... ‘অগ্রাধিকার’ 
‘আইনানুগ’ 
চাই তো শুধু ‘শেষটুকু থাক’ 
তাও বলবি দুঃখবিলাস?
পারলি এমন? 
আর কি ছাড়বো? 
আর কী কী চাস?



জানি তুমি প্রতিবারই পড়ো, এবারও পড়বে। উত্তরের অপেক্ষায় রইলাম...

ওমা, আপনারা আবার আমার কথা শুনে সময় ব্যয় করছেন কেন? ‘এবং একুশ’ তো তৈরী। আপনারা বরং ডুব দিন একুশ কবিতায়, আমার তো শবরীর প্রতীক্ষা... 


সর্বাঙ্গীন সমৃদ্ধির শুভ কামনা নিরন্তর...
সুস্মিতা বসু সিং

















এবং একুশ

সৌম্য বন্দ্যোপাধ্যায়



তোর উঠোনে
সৌম্য বন্দ্যোপাধ্যায়




আর কি দেবো?
আর কি কি চাস?
এক মহাদেশ প্রাক্‌ইতিহাস
প্রতিবাদের স্বপ্ন-ভরা কলমখানা...
কোথায় কলম? কোথায় কালি?
এমন করে ডাক পাঠালি
সব ফেলে তাই খুঁজতে যাওয়া
তোর ঠিকানা...


পাসনি খুঁজে
শব্দগুলো?
তাই কি আজও একটু ভুলও
এক মহাকাশ বৃষ্টি আনে 
ঘরের কোণে?
ওই তো ক'টা ধুলোয় ঢাকা
ব্যক্তিগত শব্দ রাখা
যুগান্তরের ফাটল-ধরা তোর উঠোনে


নাই বা পেলি
কি আসে যায়...
ব্যক্তিগত তত্ত্বকথায়?
সময় এখন উঠোন জুড়ে 
আঁকছে ছবি
পালটে যাবে তোর মহাকাশ
পালটে যাবে প্রাক্‌ইতিহাস
মন ছুঁয়ে বল, 
তবুও কি তুই আমার হবি...?












এবং একুশ

সুপ্রভাত লাহিড়ী


অন্ধকারের রঙ
সুপ্রভাত লাহিড়ী






বাজারি হতে হতেও-
সওদাগর যুবকের হাত ধরে
ফিরে আসা কচি মেয়েটা
ব্রাত্য হলো সে সংসারে!
রামায়ণে সম্ভব যা
বাস্তবে তার কী নিরিখ?
কাকুতি-মিনতি-শতদিব্যি
ঘোচাতে অক্ষম তার অসতীত্ব!
ওদিকে,
সংসারী হয়েও বাজারি রাতপাখি
হোটেল-ডিস্কোনাচে যৌবন দুলিয়ে-
ঢুলু ঢুলু চোখে কী সুখেই না করছে
ঘরকন্না, সেই বা কী নিরিখে?
‘এ যো আপোষ কা মামলা হ্যায়,
কোথায় হারালো সেই মেয়ে...
আরও কতজন!
















এবং একুশ

পুণ্যশ্লোক দাশগুপ্ত




পাস্টমর্ডানিজম ৩
পুণ্যশ্লোক দাশগুপ্ত


প্রণয়পটু কবির জন্য তরোয়ালের কেশ
তুচ্ছ হয়ে যাচ্ছিল মেঘ মিষ্টি অবশেষ
নেহাৎ কবির ওভারকোটে অশ্বারোহীর পখি
উঁচুনীচু হৃদয়বৃত্তি আলখাল্লায় রাখি
চারদিকে তার ঈগলপাখি যৌনক্ষুধা-শ্রম
ম্যাসাজ করো, তরতা্জা হোলি দোষক, মায়াবী ফ্যান্টম
ক্রাইম-থ্রিলার অউটলেটে বদলে দেবো শ্লেষ
মদের কি দোষ সাজিয়ে রাখে দূরের অবশেষ











এবং একুশ

তহমিনা সামি



কাব্যিক চিঠি
তহমিনা সামি



সক্কালে, ঘুমে ঢুলু ঢুলু চোখ,
খট খট কড়া নাড়ে দরজায়
অসীম বিরক্তি নিয়ে দরজাটা খুলতেই
সফেদ শার্ট পরা কাঁধে ঝোলা ব্যাগ দু’হাত ভর্তি চিঠি
আর গোঁফওয়ালা লোকটা হা হয়ে দাড়িয়ে
কিছু বলার আগেই নাম খানা বললে,
আমি হ্যাঁ সূচক মাথা নাড়াতেই বলে,
‘আগে সইটা দিন’ ততক্ষণে উধাও সব ঘুম
আমি নিশ্চুপ, অবাক হয়ে তাকিয়ে
আমার নামে চিঠি! যেখানে সই করতে বললে
তার প্রতিটি অক্ষরই আবছা অস্পষ্ট
হতবিহ্বল হয়ে খুঁজতে থাকি চশমাখানা....,
সে নোটবুকের বিশেষ এক স্থানে অঙ্গুলি নির্দেশ করে বললে,
‘এখানে ম্যাডাম’। আমি অস্পষ্ট সইখানা দিতেই
একখানা পার্সেল হাতে ধরিয়ে দিয়েই উধাও লোকটা।
ততক্ষণে উবে যাওয়া ঘুম, আমি নিশ্চুপ
রাজ্যের অবাক চোখে খুলে দেখি
একখানা ছয় ফর্মা কাব্যিক চিঠি!











এবং একুশ

মৈনাক সেনগুপ্ত


হে বন্যা, হে বন্য
মৈনাক সেনগুপ্ত



আকাশ যখন ঢাকল আমায় মাঝরা‌তে, 
চাঁ‌দের সা‌থে একলা ছিলাম বর্ষা‌তে। 
চন্দ্রজ‌ল শরীর আমার খুঁড়‌ছিল; 
জোয়ারনদী, আর সেতা‌রে সুর ছিল।
 গলছে চাঁদ, কী উত্তাপ, হায় আগুন! 
বানভা‌সি, তোর তী‌রে, শূন্যতূণ। 















এবং একুশ

কাশীনাথ গুঁই




বিউটিস্পট 
কাশীনাথ গুঁই


অনেক খুঁজেছি -
গালের তিলটা তোমার।
রাতের আঁধারে পেয়েছি
শুধু শরীরী পেলবতা -
ক্ষণিকের ভালোলাগা।
অনেক দূর থেকেও
খুঁজে বেড়াই মনে মনে
গালের তিলখানা -
ফিরে পাই ভালবাসা।













এবং একুশ

ব্রতী মুখোপাধ্যায়



লিখেই একটি পদ
ব্রতী মুখোপাধ্যায়




লিখেই একটি পদ ভাবো কেমন কেউ যদি শুনতে রাজি হয় দু-এক লাইন
এখনো ঝরনাগুলি পাথরভাঙার ব্রতে মাতোয়ারা নিজের খেয়ালে
এখনো ধ্বনিস্নাত শব্দে শব্দে আলো পড়ছে ছায়া পড়ছে চলায় থামায়
এক পশলা বৃষ্টি হয়ে গেল, সোঁদা গন্ধ উঠে আসছে ধুলো থেকে ঘাস থেকে ক্রমশ
কিছু রঙ কিছু রূপ হাসিমুখ, উঁকি দিচ্ছে আনাচেকানাচে, ছুঁয়ে দেখছে এ কেমন বাস
লিখেই একটি পদ ভাবো কেমন কেউ যদি শুনতে রাজি হয় দু-এক লাইন
আকাশভেজানো বৃষ্টি --- চমৎকার কানে বাজছে, ভালো লাগছে – বিদ্যুৎ ডিঙিয়ে গেল
মুহূর্তে মোলায়েম আদুরে বাতাস, মুহূর্তে থামছ তুমি একবার, থামছ একথা ভেবে
কোথাও কল্যাণী নেই, মনোরমা, অপরূপা অথবা ছুটিন --- বর্ষার কবিতায় কেউ নেই এরা ?
তাহলে কি ছেনি হাতে নেবে ? সোনার দোকানে বসে সারাক্ষণ যে বালক কবিতাই লেখে
হো হো শব্দে হেসে উঠবে সে, আর কাগজের নৌকার মতো তোমার ওই লেখা
জলে ভেসে জলে ডুবে বিলক্ষণ কোথায় যে বেহদিশ হয়ে যাবে অতঃপর
সরে এসো তার চেয়ে, দূরে সরে এসো, মায়ার কুহক থেকে, দেখো এইবার
নাচের মুদ্রার মতো হাতের আঙুলগুলি দুলে উঠছে কিনা, দেখো চোখের কাজলে
ভেজা ভেজা আছে কিনা কিছু, দেখো দেখি তাতাথই তাল বলে কিনা পায়ের নূপুর
সরে এসো, সরে এসে দূর থেকে দেখো, সত্যি লাগছে কি গোপন হিয়াটি তার
ভালোবাসিবার মতো, নিদেন ব্যথায় ভরা নেই কোনো কারুকাজ যেরকম একলা প্রদীপ
লিখেই একটি পদ ওইভাবে ভাবো কেন কেউ যদি শুনতে রাজি হয় দু-এক লাইন























এবং একুশ