শুক্রবার, ১ মে, ২০১৫

সম্পাদকীয়




চতুর্থ সংখ্যা রেডি। একটা সম্পাদকীয় লিখব ভেবে বসছি লেখার টেবিলে, ল্যাপটপের ধাক্কায় হুড়মুড় করে পড়ে গেল কতকগুলো বই। তাড়াতাড়ি সেগুলো তুলতে গিয়ে হঠাৎ হাতে এলো একটুকরো মলিন হয়ে যাওয়া চিরকুট – অপরিচিত, মুক্তোর মতো হাতের লেখা-

কবি তুমি আমার, সাহিত্য-সরস্বতীর বরপুত্র, সাহিত্য-সরোবরের কানায় কানায় কি সাবলীল তোমার বিচরণ। তুমি তো কবিতা লেখ না, কবিতাই তোমায় আশ্রয় করে মুক্তির পথ খোঁজে। আমার কতো অভিমানে, কতো অনুরাগে, বিষণ্ণতায় তুমি ছুঁয়েছো আমায় তোমার কবিতা দিয়ে। আমি তো পারিনা, ভাবের এমন ছন্দবদ্ধ সমাহারে নিজেকে উজাড় করে দিয়ে তোমায় ছুঁতে !  নিতান্তই অ-কবি আমি; তবুও তোমার কাব্যচেতনায় দ্রব করে, জারিত করে তোমার সাত সমুদ্দুর ভালবাসায় নিমজ্জিত করে রাখো –

আমার   জীবনপাত্র উচ্ছলিয়া মাধুরী করেছ দান
            
তুমি   জান নাইতুমি জান নাই,
                  
তুমি   জান নাই তার মূল্যের পরিমাণ ...

তোমাকে কিছু লিখতে গেলে যে আমাকে ধার করতে হয়... তোমার কাব্য-সরস্বতী তাঁর এক বিন্দু করুণা বর্ষণ করেও আমাকে সিক্ত করেন না। তাই, তুমিই আমার কবি তুমি আমারই কবি একার......

আরো কএক লাইন লেখা ছিল। শেষের দিকটা আর পড়া যায় না। ধূসর হয়ে গেছে। কিছুতেই মনে করতে পারলাম না, কার উদ্দেশ্যে কার লেখা, আমার কাছেই বা এলো কোথা থেকে...!! শুধু অবাক হয়ে ভাবতে থাকলাম, এটাও কি একটা কবিতা নয়??

এমনই কাব্যময়তায় ডুবে থাকুক এবং একুশ

শুভেচ্ছান্তে
সুস্মিতা বসু সিং













এবং একুশ

স্বপন দেব

মহাপ্রস্থান
স্বপন দেব



অবহেলা পেলেসরে যাবো নিঃশব্দে
রণক্ষেত্র ছেড়ে ঘরে ফিরে যাবো।
দূরে সরে গেছে নদী---স্বপ্ন মনে হয়
পূর্ণিমায় পূর্ণিমায় জোয়ারের গান।
কপালভ্রূ এর ভঙ্গি মনে আছে
রোজকার সহাস্য সম্ভাষ
মনে হলে চোখে জল
বুক জুড়ে আসে অট্টহাস 
অরণ্যের কাছে মোক্ষের মন্ত্র চাইতেই
সে এসেছিলকিন্তু অঞ্জলিবদ্ধ না হতেই
তার বাকরোধ করে দেওয়া হল !
সে কিছুই চাইতে পারেনি।
তুই থেকে আপনিতে নেমে এসে )
মন্তর দেন ---
রামকিঙ্কর বাবু !! চলুনযাবেন ?
আমিও এয়ার নিইভীষণ নবাবি
হাই তুলে বলি –দেখি ,

ভাবি......









এবং একুশ

শমীক জয় সেনগুপ্ত

এত ভয় কেন মনেতে তোমার
শমীক জয় সেনগুপ্ত



এত ভয় কেন মনেতে তোমার-
না হয় একটু হাতে মেখে নিলে পাপ,
না হয় একটু নাড়াঘাটা করে মন
কুড়িয়ে নিলে প্রেমিকের অভিশাপ।


এত জড়োসড়ো কিসের জন্য তুমি-
না হয় একটু বকা খাবে এরপর-
না হয় একটু ভেঙে মোম হবে চাঁদ;
প্রেম গড়িয়েছে, প্রশ্নটা তারপর।


এত সংশয় এই হাত দুটো ধরে !
না হয় এবার অধঃপাতেই যাবে,
ভরা শ্রাবণে না হয় আকাশ ভিজিয়ে-
লিফলেট জুড়ে ভালোবাসা হাতড়াবে।










এবং একুশ

দর্শনা বসু


ডাক
দর্শনা বসু




মহুয়াতে আজ বুঁদ হয়ে আছে
অজানা সিক্ত সুখ,
পলাশ ও তুই বেহায়া গালেতে
কেন যে দেখিস মুখ।

মরণ তো জানি ডেকেছে আমায়
ভোরের ভৈরবীতে,
সেও কিছু রাত কিনে নিতে চায়
হয়তো আচম্বিতে।

যে ফুলে আমার গেঁথেছি সকাল
সাঁঝ বিকেলের গান,
সেই সুবাসেই বাঁধা পড়ে থাক

অনন্য অভিমান।










এবং একুশ

শৌনক দত্ত


লেগে থাকো যার চোখে চশমায়..
শৌনক দত্ত



কাঁচরোদ শহরের পথে হেঁটে যায়
বুকের বোতামে তুমি সোনালী সুখ
আনন্দযজ্ঞে বিগত রাত্রির তন্ময়তা
আমার নিমন্ত্রণ সুনীল আকাশ ছুঁয়ে
তোমার চোখে রেখে দেয় আহুতি
অমীমাংসিত সুখবোধ বুকে
নিগুঢ় গুহাচিত্রের আগুন
ভায়োলিন বাজায় কে
করপুটে দেখি তুমি
হাতের রেখা জুড়ে নিদ্রামগ্ন মুখ
আকুলতায় মোড়া এক পৃথিবী প্রেম!













এবং একুশ

রত্নদীপা দে ঘোষ


হাত
রত্নদীপা দে ঘোষ



ঘুম খোলার পরে
ঠিক এইরকমই চোখ হয়ে থাকি
আমার চোখ পান করো তুমি
তোমার চোখ অনবরত
দৃষ্টি লুকিয়ে রাখি

পৃথিবীর শ্বাস শুঁকে মুক্তি নিই
অন্ধকার ভাগ হতে হতে বেড়েছে
রসাধার , ভাসমান কণা
আদরের নাম যদি মৃত্যু হয়
সেই মৃত্যু চেয়েছি প্রবাহ সমেত
একশত একাধিক বার

তর্জনী তুলো না মেঘ
ঝড় বৃষ্টি হাওয়াঅফিস, করুণ
গৃহের সমুদ্র বরং ভ্রূকুটি কর
যেভাবে চোখ ফোটে ভীরু বাতাসের
পাহাড় ওড়ে দু মুঠো প্রজাপতির গন্ধে
যেভাবে অর্সগাজমের সময়ে
আমরা একে ওপরের পিঠে
হাত রাখি













এবং একুশ

মৈনাক সেনগুপ্ত


সুজেটের জন্য
মৈনাক সেনগুপ্ত


শহরে নিয়ন-রাতে
মেয়েটি একলা হাঁটে
অজানা অগ্নিপথে ।
নিয়নে ঘোর তমসা;
শহরে রোজ কুয়াশা ।
কেন মেয়ে চলার নেশা?
তুফানে আকাশঢাকা ।
জানি তোর পলকা পাখা।
হাতে স্রেফ প্রদীপশিখা
দুপাশে দত্যিদানো ;
পায়ে পায়ে চোখরাঙানো।
মেয়ে তুই থামলি কেন?
হঠাৎ ই থামলে হবে?
মেয়ে তুই বুঝবি কবে?
আমি তোর পথ চেয়ে যে ।
হেঁটে হেঁটে ক্লান্ত নাকি ?
এখুনি দিস না ফাঁকি ।
মুখ তোল চোখটা দেখি ।
মৃত চোখে ঐ তো আগুন ।
তোর লাশে জ্যান্ত ফাগুন ।

তুই সব আগামী ভ্রূণ ।







এবং একুশ

কাশীনাথ গুঁই



এলোমেলো
কাশীনাথ গুঁই



অনেক দিন ধরে,
বহুপথ ঘুরে ঘুরে
গেছি সাতসমুদ্র পারে।


বালিয়াড়ি মাড়িয়ে
অবিরাম স্রোতে
সাগরে সুর বাজে।


ঢেউ আসে
ফিরে যায়
অব্যক্ত বেদনাহত।


রাত বাড়ে
কোলাহল কমে
সাগরে কান্না বাড়ে।


বালুকাবেলা পড়ে
থাকে একা
রাত ক্লান্ত হয়।


সকাল পুবে
লালচে রঙে
দিনমণি ওঠে।


অনেক সামুদ্রিক জীব
অক্টোপাস জেলিফিশ
ঝিনুকেরা পড়ে থাকে তটে।


কাঁকড়া পালায়
দূরে ঝিনুকেরা ঝলমলে

মুক্তো মেলেনা।








এবং একুশ