শুক্রবার, ১ এপ্রিল, ২০১৬

সম্পাদকীয়



সম্পাদকীয়






প্রকাশিত হলো 'এবং একুশ', ২য় বর্ষ, ১৪তম সংখ্যা



এই সংখ্যার নির্বাচিত কবিরা হলেন -

















এবং একুশ

রণদেব দাশগুপ্ত





দোলপুরাণ
রণদেব দাশগুপ্ত


  কেমন করে বেঁধেছ এই হাত 
নিয়েও আমি নিঃস্ব আকাশ একা 
অদৃশ্য কোন্ ছুরির আঘাত লাগে 
দর্পণে সেই রক্ত ছুঁয়ে দ্যাখা 
ঘোর লাগানো সাতরঙা উত্সবে 
নীরবে এই অনন্ত যন্ত্রণা 
আবীর জানে জ্যোত্স্নামাখা নেশা 
ফাগুন জানে , সকলে অন্ধ না 
রঙের ঢেউয়ে বান ডেকেছে বলে 
সাঁতার তোমায় দিতেই হবে বুঝি ? 
নীরক্ত এই পত্রাবলী বোঝে 
ক্ষুধার বানান রুটি এবং রুজি 
দরজা কোনো খোলে না আজকাল 
প্রাণের 'পরে স্বার্থমুখর দিন 
আগুন জ্বলে মুখলুকোনো বনে 
লোভের ঘুড়ি একান্তে উড্ডীন 
পলাশ শিমূল অশোক ভালোবাসা 
ঋতুর মাঝে শ্বদন্ত দেয় উঁকি 
বাসন্তী রং দেয় না জীবন খুঁজে 
তোমায় ভোলায় প্রকান্ড বুজরুকি 
তবুও এই তাসের দেশেই বাঁচো
 নিয়মমতে চলো সঠিক মাপে 
কারা যেন ওপরতলায় বসে 
হিসাব মেলায় নিখুঁত খাপে খাপে 
তরঙ্গ তার আসঙ্গ উল্লাসে
 যদি ডাকে দু'হাত মেলে দিয়ে
 তখন বলি , এমন বেঁধেছ যে 
 নিঃস্ব হলাম সকলটুকু নিয়ে ||









এবং একুশ

স্বপন দেব

স্বপ্নসহচরী
স্বপন দেব



ঘুম আসুক, ঘুম...
রাত তিনটেয় মোরগ ডাকছে…… 
ভেসে যাওয়া পূর্ণিমার জ্যোৎস্নায়
ব্যালকনীতে ঠায় দাঁড়িয়ে
মধ্যরাত্রি থেকে এক মেয়ে
ওর ঘুম আসছেনা…...
নিস্তব্ধ রাত্রি, সমস্ত শহর 
হারিয়ে গেছে প্রগাঢ় নিদ্রায় 
ধু-ধু রাজপথে 
একটি পাখিও ডাকেনা, 
শুধু মেয়েটির ঘুম আসছেনা…… 
ওর হৃদস্পন্দনে বীজমন্ত্র দাও কলকাতা
ওকে স্বপ্ন দাও, বহুদিন স্বপ্ন দেখেনি সে 
ওর প্রাণে দাও দিন-যাপনের দুঃসাহস
টায়রার মত সিঁথিতে ঝুলিয়ে দাও 
মুগ্ধতার কবচকুণ্ডলী 
ওকে অরুন্ধতী নক্ষত্র দেখাও 
ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালের রাতপরি 
ছায়াপথ ছুঁয়ে যাক ওর আঁখি-পল্লব 
ঘুম আসুক…ঘুম…স্বপ্ন-সহচরীর 
অনিদ্র নয়নে।







এবং একুশ

সৌম্য বন্দ্যোপাধ্যায়






আমাদের বাড়ি
সৌম্য বন্দ্যোপাধ্যায়


তোমার বাড়ি

টিভির স্ক্রীনে স্বচ্ছ ধুলো
নকশা কাটা পর্দাগুলো
দেওয়াল ফ্রেমে ইম্প্রেশনিস্ট ছবি
কাঁথা-সেলাই গালচে পাতা
এক পাশে তার তানপুরাটা
বেশ কিছুদিন গাইছে না ভৈরবী

শোবার ঘরের দরজাখানা
দুপুরবেলা খুলতে মানা
ভুলতে মানা অভিজ্ঞতার রাশি
বাষ্প হয়ে স্নানের ঘরে
সন্ধ্যেবেলা বৃষ্টি পড়ে
ভিজতে তাতেই তোমার কাছে আসি


আমার বাড়ি

দেওয়াল ছুঁলে ভুল হবে দিক
ছাদের কোণে ঝুলের গ্রাফিক
শুঁয়োপোকার স্বপ্নে সেটা
সমস্তদিন ক্লান্তিবিহীন এফ এম রাগে বাজে

সঙ্গতে তার ঘুরতে থাকা
বিষণ্ণ নীল সীলিং পাখা
মধ্যরাতে বাধ্য করে
পদ্যলেখা, ইতাদি সব অর্থবিহীন কাজে








এবং একুশ

প্রণব বসুরায়




স্পর্শ 
প্রণব বসুরায়



হঠাৎ কিছু ঘটতে পারে যেই ভেবেছি মনে
আমায় কেহ জড়িয়ে ধরে চন্দনে চন্দনে
আমি তখন টলায়মান, মাটিতে নেই পা
আঁধারও যে এমন আলো, জানাই ছিল না

#

এসব বুঝি কীর্তি তোমার? চুল খুলেছো রাতে
আঁশবঁটিটা সরিয়ে রাখো, স্পর্শ দেবো হাতে









এবং একুশ

সুদীপ গুপ্ত





সম্পর্ক
সুদীপ গুপ্ত



রাশি জানা নেই 
বতিচেল্লীর তুলিতে ভেনাসের জন্ম 
ক্যানভাস জুড়ে রঙ 
রীনা বৌদি এসে দাঁড়ান ব্যালকনিতে 
রাঙা ঠাকুরপো এখনো মুখচোরা 
অথচ মার্চেই ইয়ার এন্ডিং 
যদি কথা ওঠে 
একটা একটা করে ছিঁড়ে ফেলবেন ফুল 
সব ফুলে তো আর পূজো হয়না






এবং একুশ

পিয়ালী বসু ঘোষ



বৃষ্টি বিকেল 
পিয়ালী বসু ঘোষ



বৃষ্টিসড়ক ঝাপসা হলেও 
দৃষ্টি তেমন বার্তাবহ 
ফেরার পথে সাহস করে 
বন্দী করি মিথ্যে মোহ!

আজই কেবল ডুব দিয়েছে 
সূর্য দেখি তোমার চোখে 
আমিও কিছু শব্দ সময় 
ধার চেয়েছি নিজেই যেচে!

জলের তলায় লুকিয়ে রাখি 
নাম হারানো বিকেল যত 
দুহাত দিয়ে মুছছি সবই 
শ্যাওলাগুলো ইচ্ছেমত!

কাব্যি নামক প্রেম ছিল বেশ
বৃষ্টিদাগে মুছিয়ে দিল 
একটু আলোর হা ঘরে সুখ 
বেড়াল পায়ে পালিয়ে গেল!







এবং একুশ

শান্তনু দাশ



বনপলাশী
শান্তনু দাশ



এখন শহর কৃষ্ণচূড়া
বনপলাশী গন্ধে

উজান এলো শাখায় শাখায় !
পর্ণমোচী সন্ধে

শরীর জুড়ে নরম আলো
বেহিসেবী জ্যোৎস্না

বুকের ভেতর গোপন ছোঁয়াচ
উতল কেন হোস না?

নিষেধ নদী পার হয়ে যাই
শুনতে পেলে ডাক

স্রোতের উপর হিমেল তুফান
জল যে পুড়ে খাক

কোথায় থাকে এতো আগুন
কোথায় থাকে জল?

সারাটা দিন ছলাৎ ছলাৎ
লক্ষে অবিচল!

নদী বলতে বালিকা গাছ
বাসন্তী রঙ শাড়ি,

ডাক পাঠালে শেষ বিকেলে
ভালবাসতে পারি !








এবং একুশ

পাপিয়া গাঙ্গুলি




ঘুটি হাতে একা
পাপিয়া গাঙ্গুলি



এক্কা দোক্কা ছক্ কেটে 
খেলতে ডাকলি একদিন।
চক টানা ঘরে লাফালাফি,
বৃষ্টি নামিয়ে, সব মুছে 
চলতি পায়ে বলে গেলি 
'খেলা শেষ, বাড়ি ডাকছে'
আমার তোকে যে
বিশ্বাস করা হলনা।










এবং একুশ

রেজা রহমান



আমার কী দোষ? 
রেজা রহমান



মড়া আমি পোড়া আমি ভালো
এক শুধু তুমি ছাড়া কে আর আমাকে পোড়ালো
আমারই আঙ্গিনা দিয়ে সেই তুমি গেলে আনবাড়ি
আমার কী দোষ বলো আমি যদি আর না-ই পারি?
আমি বিষে নীল আমি কালো
আঁধার মেঘের বুকে বিজুরিবহ্নিশিখা জ্বালো 
নির্বাপিত আমি স্তব্ধবাক
দেহাবশেষ নিক শ্মশানবন্ধু্রা ধূপ সুরভি ছড়াক ।
ঐ তো ফুটেছে ফুল পাখি ডাকে রাত্রি পোহালো 
চিতাভস্মটুকু শুধু নিজ হাতে অশ্রুজলে ঢালো ।






এবং একুশ

শর্মিষ্ঠা মুখোপাধ্যায়






"Tonight I can write the saddest lines"
শর্মিষ্ঠা মুখোপাধ্যায়



নেরুদা কবিতা বেয়ে
টুপটুপ ঝরে বিষাদবিন্দুরা।


একটি বিগত জীবন

একটি আগামী জীবন

তোমার কাছে পৌঁছোবার অপেক্ষায়
একটি নীল যতিচিহ্নের অপেক্ষায়

ঠিক কোনখানটিতে নির্ণীত 
সূর্যাস্ত আর সূর্যোদয় আকাশের 
বিভাজিকা রেখা?
কোন মুহূর্তটিতে 
বিষণ্ণতার মাকড়সা-জাল ছিঁড়ে ফেলে
সামুদ্রিক হাসি?
কোন সেই দিগন্তরেখায় 
তোমার আর আমার ওষ্ঠ অবশেষে মেশে 
ব্যপ্ত চুম্বনে?

কোন পবিত্রক্ষণে
চলে আসা, আর ফিরে যাওয়ার রঙ মিলে
অনন্ত গোধূলি?

তুষার চাদরে হিমায়িত
আমি প্রতীক্ষা করি
খোলা জানালার উষ্ণতার

ফেরারি
সেই মাহেন্দ্রলগ্নটির









এবং একুশ

হিমাদ্রি মুখোপাধ্যায়



‪বেলাশেষে‬
হিমাদ্রি মুখোপাধ্যায়




সুন্দরী উৎপলবর্ণা
বিগলিত নির্ঝরপ্রান্তে,
কিছু কথা রয়ে গেলো ঊহ্য,
যদি তুমি কখনো তা জানতে


গলে তুমি নদী হ'তে পারতে,
সোনা রং আকাশেতে লাগতো,
হয়তো বা কিছু পাপ চন্দ্রে,
আলো হ'য়ে সারারাত জাগতো।






এবং একুশ

কৌশিক গাঙ্গুলি



শপথ 
কৌশিক গাঙ্গুলি 


অনেকদিন পরমস্নেহে মা কপালে রাখেনি হাত .... 
অনেকদিন ভাইয়ের সঙ্গে গল্পে থাকেনি মত্ত , 
অনেকদিন তোমার আমার দেখা হয়নি বন্ধু - 
অনেকদিন কোনো নারীর ওষ্ঠ ছুঁয়ে বলিনিঃ 
ভালোবাসি.... 
সেদিন স্বপ্নে হারিয়ে যাওয়া সবুজ অরণ্যকে স্বাক্ষী রেখে রেখেছি শপথ মানবতার।




এবং একুশ

শ্যমল সোম



শুঁড়িখানায় সুখে আছি
শ্যমল সোম



সবাই কেমন আজ খোলা বাজারে, একে অন্যকে পিছনে ফেলে, 
সময়ের তালে তালে সাবধানে পা ফেলে, একে তাকে পেছন 
থেকে ধাঁই করে ল্যাং মেরে, খুব ছক কষে, সতর্ক হয়ে বসে, 
ঘন ঘন মাথা নেড়ে, অনেক ভেবে চিন্তে ধীরে সুস্থে, ঘুষের-
পয়সায় বিদেশী মাল-- টেনে, হেসে হাসিয়ে, যুবতী ললনাকে 
ফাঁসিয়ে, ভারি মস্তিতে, দাঁও বুঝে ঝপাং করে কোপ মেরে, 
একে তাকে ধাক্কা দিয়ে, ঘোরানো সিঁড়ি বেয়ে তড়-তড়িয়ে,
কত রকম কেয়াবত-করসত - ক্যারামতি দেখিয়ে- ঐ উঁচু -
মগ ডালে উঠে গেল; সহবতই চাঁদ হাতে ধরা দিলো।
সুখের প্রাণ গড়ের মা ঠ, আহ্লাদে আটখানা, ফানুসের মতো-
ফন ফন উড়ছে, অনাদায়ে রইলো পড়ে সব জরিমানা। 
এক আমিই হাবা গোবা হয়ে- আকাশের দিকে চেয়ে, সাগরের 
ঢেউ গুনে, পাহাড় ঝর্না নদীর অথৈ জলে পড়ে রইলাম নিরবধি, 
ঠায় অপেক্ষায় আছি; দিন পালটায় কখন ? আজ বাদ্ধ্বর্কের চৌকাঠে 
এসে থমকে থেমে দাঁড়িয়ে, আপন যা ছিলো সব হারিয়ে- ঠোঁ ট উলটিয়ে,
ফোকলা দাঁত কেলিয়ে-চশমার আড়ালে, ছানি পড়া আড় চোখে চেয়ে- 
আসমানের সিঁড়িটা আবার দুলতে দেখে,-গুঁ ড়ি গুঁড়ি বৃষ্ঠির ঝাপটা রহে-
সহে, আশপাশে এদিক ওদিক চেয়ে, সু ড় সুড়িয়ে সটাং ঢুকি গিয়ে সেই -
খালাসী টোলার শুঁড়ি খানায়। তোমরা কেউ আমার সঙ্গে আসবে নাকি ?





এবং একুশ

তন্ময় বসু


সেলফি
তন্ময় বসু



চাঁদের সেলফি তুলতে মিনিমাম কত মেগাপিক্সেল?
আনুগত্যে পুষিয়ে যাবে, কিছুটা
রিচার্জ করতে অল্প কিছু প্রেম; বাকীটুকু দিয়ে বোরখা।
ফেল কড়ি, 

সবাই নিজের -
সেলফি জুড়ে জেগে থাকে রাত
রেজলিউশন বাড়তেই থাকে তোমার।






এবং একুশ

প্রনবেশ ঘোষ



রক্তক্ষয়ী অস্তিমান 
প্রনবেশ ঘোষ



এই যে নীরবতার রক্তক্ষরণ
নিঃশব্দের মশালে আমার রক্তে আগুন লাগা,
নীরবতার এই কুহকী রক্তচক্ষু আমার জ্বলছে
কারো এক নিশ্চুপ তীক্ষ্ণ আখেটক দৃষ্টি-জ্যোতির প্রেমানুরক্তী আগুনের মশালে!
তারই শ্বাস-প্রশ্বাসের শব্দহীন আভাসের সমূলোত্পাটন রেশে,
ভেসে যাচ্ছে আমার রক্ত পোড়া গুমোট গন্ধটা-
ব্যপিত কালো ধোঁয়ার উচ্ছিষ্ট জৈবধংসাবশেষ হয়ে!
হঠাৎই মোর নীরব জীবন মেঘের বুক চিঁড়ে
প্রতিটা লাব্‌-ডুব্‌ তরঙ্গের চাপে রক্ত নিঃসরণ বিদ্যুৎ-বজ্র স্রোতের
আজ নীরবেই বহিঃপ্রকাশ আমার এই নিশ্চুপ কুহকী রক্তচক্ষু।
তার অক্ষটি দৃষ্টিরেখার এক প্রেমাগ্নি-তন্তুবিণ্যাসী নিঃস্তব্ধ মশালের
ভৌতিক অগ্নিগর্ভের নিশ্চুপ স্তব্ধকাতর গুণিন লগ্ন-প্রবাহী আনাগুনায়
নীরবেই এ আমার স্তব্ধ রক্তচক্ষুর প্রশান্ত রক্তাভ সৃজনী রক্তরাগ দহনে
আজ তার প্রেম-মোহিতে মুগ্ধ মোর নীরবতার ক্রমবর্দ্ধমান রক্তক্ষরন
এ হৃদ-খাঁচাটা ফাঁটিয়ে চিঁড়ে-খুঁড়ে বেড়োচ্ছে
নিস্তব্ধ আমার চক্ষুপ্রণালীর পথ দিয়ে!
মশালরূপী তার ঐ অগ্নিকুন্ড এক রক্তখুর পিশাচ!
জ্বালিয়ে পুড়ে পুড়ে রক্ত খেয়েও তার ক্রমবর্দ্ধিত রক্তখেঁকো নেশায়
নিশ্চুপে শুষেই নিচ্ছে মোর নীরবতায় প্রাণবন্ত সৃজনী অনুশক্তির রক্তপ্রবাহ
তার পৈশাচিক অনল জ্বলন্ত নিঃশব্দ ভৌতিক মশালের আগুনে!
জীবন নামের রক্তপদ্মটা আমার আজ
শুকিয়ে মূর্চ্ছিত শ্বেতপাপড়ির একচিলতে তন্তুর মহাকাল রূপের অধিষ্ঠিত!
মোর রক্তে বেঁচে থাকা প্রীতিবিহ্বল সৌভিক নীলাত্মিক বীজ
তার প্রেমতন্তুর তীক্ষ্ণবিণ্যাসী দৃষ্টিজ্যোতির উদ্দীপ্ত নিলম্বন জাগরুক অগ্নিসজ্জার
ঐ অদূষ্য মশালের শোষনে পুড়ে গিয়ে হয়েছে চির ধ্বংসানুসায়ী-নিকুচি!
আজ এই পোড়া রক্তচিত্রের লাল-কালো রক্তাল্পনার অভ্যন্তরে
তার কর্কশ রক্তখেঁকো পৈশাচিক উল্লাসী হাসির অনুরননে
আমার নীরবতার রক্তক্ষরন এক ক্রমবর্দ্ধিত রক্তিম ঝড়নার উন্মুক্ত বর্ষণধারা!
একলা যে কাঁদে আজ শুধু নিজেরই ভেতর রক্তপোড়া গন্ধের স্তব্ধ ধোঁয়ার কালো রেশে
মোর এই পোড়া স্বীয়-রক্তধারার নিথর নিশ্চুপ চিত্তবৃত্ত,
নিঃশব্দের গুনিন-কুহকী সন্নিধিস্থ রহস্যের অবগুন্ঠিত আবরনে
আমার এই নীরবতার রক্তক্ষয়ী অস্তিত্ব !!







এবং একুশ

অরুনিমা মন্ডল দাস



দেবাঞ্জনের ইচ্ছা
অরুনিমা মন্ডল দাস



কালো পাথরের খোসা ছাড়িয়ে হঠাৎ করে খনিজ তেলের আশায় ডুব দিলে!
তুমি ভেবেছিলে,
পেট্রোলের কালো রূপের তেজে নিজেকে নিয়ে লং ড্রাইভের তেজে হারিয়ে যাবে!
কোনো বলিউডি ম্যাগাজিনের ফার্স্ট পেজের দামী মডেলের কামুক চাউনি আবার মনে করিয়ে দেবে তোমার সেই প্রথম প্রেমের বিদগ্ধ যন্ত্রনার কাহিনী!
ম্যাটিনি শো এর প্রথম প্রেমিকার স্পর্শে রজনীগন্ধার পাপড়ির আদুরে ইঙ্গিতে নিজেকে প্রথম তরুন হিসেবে আবিস্কার করার কথা!
সে সৌন্দোর্যের অহ্ং তে মদগামিনী হস্তিনীর মতো তোমাকে গ্রাস করছিলো!
তুমি যৌবন সুরাপানে আক্রান্ত হয়ে অত্যাচারের সব লুডোর গুটি গুলো হজম করছিলে!
র' বেসামাল মাতালের মত মাতলামি করছিলে মদের ঠেকে!
একটু সুরা পানের জন্য!







এবং একুশ

অভিজিত রায়

রবীন্দ্র-নজরুল
অভিজিত রায়




আমি রামও মানিনা,বামও মানিনা - মানিনাকো টুপি দাড়ি
যারা অলীক গপ্পে প্রতিদিন বাঁচো - তোমাদের সাথে আড়ি

আমি মানিনাকো কোন আষাঢ়ে স্টোরির, ক্লিশে হয়ে যাওয়া মিথ
যেখানে শান্তি নিশান ধুলোয় লুটায়,চাহনি ঘোলাটে পীত

বাবরি থেকে দাদরি (মাঝে গুজরাট) - 
কালা হ্যায় সব ডাল
দাঙ্গা লাগায় অমৃতসর আর হজরতবাল 

যতই ঢাকোনা কদর্য রূপ,শান্তি-শান্তি খেলাতে
তোমাদের রূপ চিনে গেছি মোরা,পারবেনা আজ পালাতে

শোনো ধর্মের বখাটে পুত্র,ধার্মিক ভেকধারী -
তোমাদের পাপ,জীবনে মরণে আমি কি ভুলিতে পারি ?

যতই খেলোনা রক্তের হোলি,যতই করোনা ভুল
মম তরুশাখে ফুল হয়ে ফোটো, রবীন্দ্র-নজরুল







এবং একুশ

মাহমুদ নজির

ধ্বস
মাহমুদ নজির 



একটানা
বাতাস বয়ে চলছে পাল্লা দিয়ে। 
হৃদয়জুড়ে জাগছে 
শিরশিরে কাঁপন ; 
মনোভূমির পাললিক স্তর ভেঙে ক্রমাগত ক্ষয়ে পড়ছে 
স্বপ্নের পলেস্তারা! 
ভাবি
যে ভিত স্থাপন করেছিলাম 
তিলতিল শ্রম আর ঘামে 
সেইখানেও অনন্ত ফাটল...
অর্জুন বৃক্ষের গোড়ায় 
গজিয়েছে ঘাস, পাথরকুচি! 
মাঝখানে ফুটো করে
চলে গেছে কাঠঠোকরা 
নিরুদ্দেশ পথে। 
কুয়াশার আড়ালে
ঘুমিয়ে আছে দিনের সূর্য ! 
হতাশায় বুক ধরফর, 
বাতাস থামছেনা। 
ভেঙে চলছে ডালপালা, 
ফসলি ভূমি...







এবং একুশ

অশোক তাঁতী



অচিন কইন্যা ও তুই
অশোক তাঁতী


সদ্য গজানো শালুকপাতার ওপর একটা ডিমফোটা ফড়িং
ছায়াকে নিজ্ঝুম অঞ্জলি দিচ্ছে, শুরু হয়নি দিন 
রোদ তখনো ফুটে ওঠে নি, নিষ্পাপ পুকুরের জল 
তবুও একটা ভাঙন, যমুনা গাঙে ফাটল 
ঘরতনে বের হল সে, আমার কান্দিল পরাণ 
শোক যেন। পটচিত্র লাল হয়নি, সাদাকালো মেশা 
আউলা ঝাউলা অঙ্গের বসন মাথার কেশ খুলা। 
এ কোন অচিন কইন্যা জলের ঘাটে এসেছে একলা।। 
আমি শুরু করছি, শুরু করছি গাওয়া
নীরবতা ভেঙে পড়ছে বাঁশি যোগিয়া
আজকের দিনটা তোর জন্য না





এবং একুশ

ইন্দ্রাণী সরকার





পাখির মন্ত্র 
ইন্দ্রাণী সরকার




ছোট্ট পাখিটা মাথা দুলিয়ে রোজ গান গেয়ে যায় 
ধূসর চোখের তারা, বাদামী ঠোঁট, ডানার সোনা 
ডানা ঝাড়লে রাশি রাশি পালকের মেঘলা ওড়ে
পায়ে তখনো লেগে পথের বিন্দু বিন্দু ধুলিকণা |

ওর গানের সুর যখন আকাশে মুখরিত হতে হতে 
সোনালী ডানার একরাশ স্বপ্নে মেহেন্দি মাখায়,
ঠিক সেই মূহুর্তে তার মত সুখী কেউ থাকে না 
তার ছোট্ট মনের স্বর্গীয় মন্ত্র আমায় কাঁদিয়ে যায় |







এবং একুশ

জাফর পাঠান



দুখ-তরী
জাফর পাঠান



দুঃখ আমার পিছু নিয়েছে-সেই শিশুকাল থেকে
সে জানেনা মায়ের উদরে-সুখকে এসেছি রেখে,
এসেছি বানে ভাসা, ঐ কচুরিপানার মত ভেসে
যদিও দুখি মা জন্ম দিয়েছে আমায়-হেসে হেসে।

ভয় পাইনা এখন, ভয়ের কারণ ঐ দুখকে
সুখ পাইনা-চলার পথে যদিবা দেখি সুখকে,
দুহাত বাড়িয়ে ওরা ডাকে-হাতে হাত রাখি যাতে
আমি চলি আমার মত করে-কান দেইনা তাতে।

ধরণীর মেকি সুখকেও, টেনে নেইনা এ বুকে
ভয় হয় সুখেরে যদিবা, সুখ মারে ধুঁকে ধুঁকে,
কোথায় সুখ কোথায় দুখ পাইনা যে খুঁজে তাকে
সুখের মাঝে দুখের বাস জন্ম তার ঝাঁকে ঝাঁকে।

সুখ সাগরের দোলায় আমি, দুখের তরী বাই
নাওয়ের নাইয়া হয়েও তটের দেখা না পাই।



















এবং একুশ