রবিবার, ২২ ফেব্রুয়ারী, ২০১৫

সম্পাদকীয়


সম্পাদকীয়

শব্দের বন্ধনে ধরে ভালোবাসাকে 
একখানি উপহার দেওয়া হলো ভাষাকে 
ইথারের তরঙ্গে সযত্নে রাখা সে 
জন্মদিনের দিন  একুশের আকাশে 
ফুটফুটে তারা হয়ে মিটিমিটি জ্বলবে 
চুপি চুপি কানে কানে ‘‘ভালোবেসো’’ বলবে 
সোচ্চার হয় যদি, তবে জেনে রেখো তার 
বিপ্লবে অস্ত্রের চেয়ে বেশি অধিকার 
ভাষার সে মূর্ছণা, আশার সে প্রেরণা 
কোনও বিনিময়ে তাই কবিতাকে ছেড়ো না

                                                                             
                                                    - অমৃত অধিকারী







এবং একুশ

শনিবার, ২১ ফেব্রুয়ারী, ২০১৫

সুচেতা মন্ডল

'আমার মাতৃভাষার প্রতি'
সুচেতা মন্ডল



মুক্ত মনে, চোখের কোণে,
এক আকাশের নিচে,
'হোক কলরব' দুরন্ত সব
ভাবনা কেন মিছে?

একটি দিনের নয় তো ফসল,
সবার প্রচেষ্টায় 
প্রাণ পেয়েছে বাংলা ভাষা 
আজ কে, এ দিনটায় !

শব্দেরা আজ মেলছে ডানা
ফুল-পাখিদের দেশে,
'ডুয়ার্স' যখন ঝর্ণা বেয়ে 
'বক খালি' তে মেশে !!









এবং একুশ

বলাকা দত্ত

অসময়
বলাকা দত্ত 



অজান্তে ফুটেছে পলাশ বড় অসময়ে।
পলে পলে মিশে গড়িয়েছে দিন হারিয়েছে বছর
অবয়ব হীন এক সুখ নিয়ে নাড়াচাড়ায়।
রঙীন ফানুসে চড়ে রূপকথার দেশেতে উড়ে
দুরন্ত সাহসে ভেসে ডিঙি নিয়ে মাঝ দরিয়ায়।
অাদিম নেশার ঝোঁকে অরণ্যের পথে পথে
জনসমুদ্রের ভীড়ে একাকী খেয়ালে দীর্ঘ অপেক্ষায়
গোধূলির শেষ লগ্নের কম্পিত মৃদু অাশায়।
পলক না পড়া রাতে বেজে চলা নূপুরের ধ্বনিতে
সদ্য ফোঁটা ভোরের হাসিতে নিরন্তর উপস্থিতির ছোঁয়ায়।
হতাশার দোলাচলে বিদীর্ণ হৃদয়ে বেজে চলে সুর
অজান্তে ফুটেছে পলাশ বড় অসময়ে।










এবং একুশ

সংযুক্তা মজুমদার

বাংলার ছেলে 
সংযুক্তা মজুমদার



পুরাণের এক গল্পকথা 
রূপকথা না, সত্যি
শুনি ছিল, রাজার কন্যা 
সুন্দরী একরত্তি 
পালিয়েছিল বনবাদাড়ে 
সঙ্গীসাথী নিয়ে ধরে নিল 
এক সিংহ পুরুষ 
করল তাকে বিয়ে . 
পুত্র হল সিংহবাহু 
করল বাংলা জয় 
তার সন্তান বিজয়সিংহ 
কুখ্যাত পরিচয় 
অন্যায় কাজ কিছু বাকি নেই 
যা করেনি এই পুত্র 
খুন রাহাজানি অত্যাচারের 
প্রমাণ যত্রতত্র 
প্রজাসকলের প্রার্থনা তে 
ছেলে পেল নির্বাসন 
সিংহবাহু আহত মনেও 
চালাল রাজ্যশাসন। 
তিন জাহাজ বন্দী সঙ্গী 
বিজয়সিংহ অভয় 
দাপিয়ে সাগর বাংলার ছেলে 
করে নিল লঙ্কা জয় 
ছিল সেখানে অদ্ভুত এক 
জংলি শাষনপাট 
ঘোড়া ছুটিয়ে যে জিতবে খেলা 
সেই হবে সম্রাট 
এক বছরের সাম্রাজ্যের 
পরেই আবার বদল 
নতুন খেলা, নতুন রাজা 
এমনি ছিল আদল 
রাজা হয়েই সে বন্ধ করল 
খেলা এ রাজা হবার 
বুদ্ধি বলে গড়ে নিল সে 
সিংহল দেশ তার 
এই হল সেই গল্পকথা 
তবে একবার ভাব 
এই গল্পের সময় বাছতে
 কোন যুগে ফিরে যাব
রামায়ণের আগের সময় 
জাহাজ যদি ছিলো 
তবে বানরসেনার সেতুবন্ধনে 
সময় কেন গেল
আর যদি হয় পরের কথা 
তাহলেও পাব ব্যথা 
রাবণ রাজার সোনার দেশে 
ছিলো এই বর্বরতা
এমন কত গল্প আছে 
সময়ের কাছে নীরবে 
আজ শুধু ভাব বিজয়সিংহ 
এর সিংহল জয় কবে?








এবং একুশ

বৃষ্টি মিত্র

ফাঁদ 
বৃষ্টি মিত্র


তাকে
আঙুল দিয়ে দিগন্ত দেখিয়েছিলাম একদিন,
হাতে হাত রেখে
প্রদীপ জ্বালিয়ে ..
স্বপ্নে ভরিয়েছিলাম
আমাদের আর ওই অসীমের
মাঝখান -

তারপর ..
জানতে চেওনা
কিভাবে নিভলো আলো

আর কিভাবে একাই আমি
দিগন্তে পুড়ে যাওয়া
ধুসর ধোঁয়ার দিকে হাত বাড়িয়ে
নিভে যাওয়া স্বপ্ন গুলো হাতড়ে যাই -

শূন্যে !







এবং একুশ

ইন্দ্রাণী সরকার

তিলোত্তমা আমি
ইন্দ্রাণী সরকার



 
চকমকি নুড়ি পাথরে আলো জ্বালা সন্ধ্যায় 
অবাক চোখে দেখি তোমায়
তোমার প্রশস্ত ললাট, আবেগী ঠোঁটের হাসি 
চোখ জুড়ে শুধু স্বপ্ন আঁকা
জরির ফিতেয় বাঁধা রেশমী চুল বিছিয়ে দিই 
তোমার মুখে আলতোভাবে
নরম আবেশে বুজে আসে তোমার দুই চোখ
তিলোত্তমা আমি তোমার সাথী 
এক জনমে নয়, জন্ম জন্মে পড়ে আছি বাঁধা |








এবং একুশ

দোলা ঘোষাল

মিশে যাও জ্বলন্ত অরুন্ধতী
দোলা ঘোষাল 


শব্দেরাও এখানে আসে নিঃশব্দ চরণে;
জীবন এখানে পড়ে থাকে মরুভূমির মত শুকনো হয়ে;
তবু কি এক মোহ জুড়ে থাকে সর্বাঙ্গে;
কি এক আশায় বুক বেঁধে থাকে মন;
ভাস্কর্যখচিত মূর্তিতে প্রাণ সঞ্চার ,
সেও কি সম্ভব!
সম্ভব কি আবার পুরনো সত্বাকে ফিরিয়ে আনা!
সন্ন্যাসী তুমি!
ভিক্ষু তুমি!
তবু.....এ তোমার কিসের মোহ!
কিসের এত আশ্ 
এ জীবনে!
ছেড়েছ তুমি পিতা-মাতা-স্বজন!
তবু.......এখনও এত আগুন কিসের, তোমার ও দেহ-মনে!
তবে কি শুধুই এ তোমার বহুরূপী সাজ!
নেই কি তাতে বিধাতা!
ভালবাসা সে তো অনেক বড়!
নিঃস্বার্থ ত্যাগ!
তবে শব্দদেরও দিলাম ছুটি আজ;
তবে পড়ে থাক্ শুধু উষ্ঞ মরুভূমির মত জীবন!
হয়ে যাক্ সব মিথ্যা!
হয়ে যাক্ সব ফানুস হয়ে;
সব কিছু দাও ছুঁড়ে ফেলে!
মিশে যাও জন-সমুদ্রে!









এবং একুশ

বিদিশা সরকার

এইভাবে --- 
বিদিশা সরকার



সন্ন্যাসেও রঙ লেগেছে। কোন মার্গে পৌঁছে যাব এখনও জানিনা। পথ তা বলেনি। 
গগন বৈরাগী পূজাপর্বে চন্দনের রঙ। চারণিক ত্রিপিটকে হাত রাখে। মুখাগ্নির সময়ে
একবারই তার চোখে চোখ! বিস্ময়বোধক বেঁচে থাকা।তারপর সবই তো রোদ্দুর,দেবী 
চলে খদ্দেরের ঘরে।অন্ধ সেজে ভিক্ষে করে সাজানো দুহিতা ।

ঝড় চেয়েছিলাম । দামাল ছেলেটা কান্না চেপে চেপে বিঁড়ি বাঁধে। তার মাঠে বালক সংঘের আয়োজনে "বসে আঁকো ছবি" ! দরাদরি কার ভাল লাগে। সবাই ভিখিরি । 
তুমি শুধু লাইব্রেরী থেকে খুব রাতে বাড়ি ফেরো একা সাইকেলে। বৃত্ত ভেঙ্গে ভেঙ্গে 
পৌঁছানো সহজ ভেবেছিলে, আন্দোলন আদপে ফেরারি। হারিয়ে যাওয়ারা কোথায় মিলিত হয়, কোথায় বৈঠক ! সমবেত ইচ্ছার কাছে নত হয়ে বেঁচে থাকা
বেঁচে থাকা নাকি !









এবং একুশ

সাঈদা মিমি


চুরি হয়ে যাওয়া গল্পগুলির জন্যে
সাঈদা মিমি




চুরি হয়ে যাওয়া গল্পগুলির জন্যে

মৌণমঠে মানত করেছি, আকাশের দেহে
কি সৃষ্টির গন্ধ থাকে?

বেতঝোপের আসন ছেড়ে ওঠা হলো না

আশ্রয়ের অভাবে-- অভাব... অভাব...
বলে তালগোল পাকানো বাতাস
উড়ে গেলো সন্নিধানের দিনে---

কয়েকদিন খরা হবে তারপর কবর উপড়ে

দেয়া ঝড় আসবে.....





ভালোবাসা বুঝবে না?
--------------------

নিঃশ্বাসে কষ্ট, একটা শহর

আলাদা হয়ে গেলে গাছগুলির
বাটোয়ারা হবে আর অ্যাসাগাই দিয়ে
ভাগ করে দেয়া হবে স্পন্দন---

রাত জেগে কাঁদলে চোখ ফুলে ওঠে,

উপশিরাগুলি লাল হয়ে যায়...
'আপেক্ষিক' বলে বলে রঙবাজি করবে?
ভালোবাসা বুঝবে না?
ঢেউ আসবেনা


---------------

খসে গেলো বেপথুমতি জল, ঢেউ আসবেনা--

দিনে দিনে অচল হয়েছো? নিজেকে প্রশ্ন
করি অর্থহীন, জীবন জপে না কোনো মালার আহুতি

পশুভাব জেগে তো রয়েছে!

কে তারে দমন করে পীড়নে, আদরে?



বনসাই বাক্য
----------------

*০১

যতবার ঋণমুক্ত হই, শুঁড়িখানা
চলে আসে ঘুমের চাদরে

*০২

আমি নির্মল অভিশাপ, রোহিনীর
শ্রাপ থেকে জন্ম নেয়া
মাঙ্গলিক পাপ, আমাকে ছুঁয়ো না

*০৩

কবে কোন ফুল যেন ফসিল হয়েছে?
সভাকবি বলেছিলো,
লিখেছিলো অমর পাঁচালি

*০৪

ঘুমঘোরে কতকিছু আসে!

চোখ মেলে তাকালেই ভাড়া ঘর, ছাদ...



এবং একুশ