রবিবার, ১ নভেম্বর, ২০১৫

সম্পাদকীয়




কি বলিস মন? কষ্টকুমারী?
কিসের এত খবরদারী? 
তুই তো জানিস- 
তোর জন্য সব ছাড়তে পারি... 
তোর জন্য ঘুম ভাঙা ভোর 
রাতের আকাশ- সেও তো তোর 
তোকেই দিলাম বৃষ্টি আমার 
ফাগুন রাতে মন হলো ভার...


কি বলিস মন? কষ্টবিলাস? 
সত্যি বল, 
স্পষ্ট করে দেখতে কি পাস? 
মনের ভিতর তোর বসবাস 
রঙিন সুতোয় বাঁধছি যে 
প্রাণ 
দেখ তো চেয়ে, তোরই তো নাম...


সব ছেড়েছি... ‘অগ্রাধিকার’ 
‘আইনানুগ’ 
চাই তো শুধু ‘শেষটুকু থাক’ 
তাও বলবি দুঃখবিলাস?
পারলি এমন? 
আর কি ছাড়বো? 
আর কী কী চাস?



জানি তুমি প্রতিবারই পড়ো, এবারও পড়বে। উত্তরের অপেক্ষায় রইলাম...

ওমা, আপনারা আবার আমার কথা শুনে সময় ব্যয় করছেন কেন? ‘এবং একুশ’ তো তৈরী। আপনারা বরং ডুব দিন একুশ কবিতায়, আমার তো শবরীর প্রতীক্ষা... 


সর্বাঙ্গীন সমৃদ্ধির শুভ কামনা নিরন্তর...
সুস্মিতা বসু সিং

















এবং একুশ

সৌম্য বন্দ্যোপাধ্যায়



তোর উঠোনে
সৌম্য বন্দ্যোপাধ্যায়




আর কি দেবো?
আর কি কি চাস?
এক মহাদেশ প্রাক্‌ইতিহাস
প্রতিবাদের স্বপ্ন-ভরা কলমখানা...
কোথায় কলম? কোথায় কালি?
এমন করে ডাক পাঠালি
সব ফেলে তাই খুঁজতে যাওয়া
তোর ঠিকানা...


পাসনি খুঁজে
শব্দগুলো?
তাই কি আজও একটু ভুলও
এক মহাকাশ বৃষ্টি আনে 
ঘরের কোণে?
ওই তো ক'টা ধুলোয় ঢাকা
ব্যক্তিগত শব্দ রাখা
যুগান্তরের ফাটল-ধরা তোর উঠোনে


নাই বা পেলি
কি আসে যায়...
ব্যক্তিগত তত্ত্বকথায়?
সময় এখন উঠোন জুড়ে 
আঁকছে ছবি
পালটে যাবে তোর মহাকাশ
পালটে যাবে প্রাক্‌ইতিহাস
মন ছুঁয়ে বল, 
তবুও কি তুই আমার হবি...?












এবং একুশ

সুপ্রভাত লাহিড়ী


অন্ধকারের রঙ
সুপ্রভাত লাহিড়ী






বাজারি হতে হতেও-
সওদাগর যুবকের হাত ধরে
ফিরে আসা কচি মেয়েটা
ব্রাত্য হলো সে সংসারে!
রামায়ণে সম্ভব যা
বাস্তবে তার কী নিরিখ?
কাকুতি-মিনতি-শতদিব্যি
ঘোচাতে অক্ষম তার অসতীত্ব!
ওদিকে,
সংসারী হয়েও বাজারি রাতপাখি
হোটেল-ডিস্কোনাচে যৌবন দুলিয়ে-
ঢুলু ঢুলু চোখে কী সুখেই না করছে
ঘরকন্না, সেই বা কী নিরিখে?
‘এ যো আপোষ কা মামলা হ্যায়,
কোথায় হারালো সেই মেয়ে...
আরও কতজন!
















এবং একুশ

পুণ্যশ্লোক দাশগুপ্ত




পাস্টমর্ডানিজম ৩
পুণ্যশ্লোক দাশগুপ্ত


প্রণয়পটু কবির জন্য তরোয়ালের কেশ
তুচ্ছ হয়ে যাচ্ছিল মেঘ মিষ্টি অবশেষ
নেহাৎ কবির ওভারকোটে অশ্বারোহীর পখি
উঁচুনীচু হৃদয়বৃত্তি আলখাল্লায় রাখি
চারদিকে তার ঈগলপাখি যৌনক্ষুধা-শ্রম
ম্যাসাজ করো, তরতা্জা হোলি দোষক, মায়াবী ফ্যান্টম
ক্রাইম-থ্রিলার অউটলেটে বদলে দেবো শ্লেষ
মদের কি দোষ সাজিয়ে রাখে দূরের অবশেষ











এবং একুশ

তহমিনা সামি



কাব্যিক চিঠি
তহমিনা সামি



সক্কালে, ঘুমে ঢুলু ঢুলু চোখ,
খট খট কড়া নাড়ে দরজায়
অসীম বিরক্তি নিয়ে দরজাটা খুলতেই
সফেদ শার্ট পরা কাঁধে ঝোলা ব্যাগ দু’হাত ভর্তি চিঠি
আর গোঁফওয়ালা লোকটা হা হয়ে দাড়িয়ে
কিছু বলার আগেই নাম খানা বললে,
আমি হ্যাঁ সূচক মাথা নাড়াতেই বলে,
‘আগে সইটা দিন’ ততক্ষণে উধাও সব ঘুম
আমি নিশ্চুপ, অবাক হয়ে তাকিয়ে
আমার নামে চিঠি! যেখানে সই করতে বললে
তার প্রতিটি অক্ষরই আবছা অস্পষ্ট
হতবিহ্বল হয়ে খুঁজতে থাকি চশমাখানা....,
সে নোটবুকের বিশেষ এক স্থানে অঙ্গুলি নির্দেশ করে বললে,
‘এখানে ম্যাডাম’। আমি অস্পষ্ট সইখানা দিতেই
একখানা পার্সেল হাতে ধরিয়ে দিয়েই উধাও লোকটা।
ততক্ষণে উবে যাওয়া ঘুম, আমি নিশ্চুপ
রাজ্যের অবাক চোখে খুলে দেখি
একখানা ছয় ফর্মা কাব্যিক চিঠি!











এবং একুশ

মৈনাক সেনগুপ্ত


হে বন্যা, হে বন্য
মৈনাক সেনগুপ্ত



আকাশ যখন ঢাকল আমায় মাঝরা‌তে, 
চাঁ‌দের সা‌থে একলা ছিলাম বর্ষা‌তে। 
চন্দ্রজ‌ল শরীর আমার খুঁড়‌ছিল; 
জোয়ারনদী, আর সেতা‌রে সুর ছিল।
 গলছে চাঁদ, কী উত্তাপ, হায় আগুন! 
বানভা‌সি, তোর তী‌রে, শূন্যতূণ। 















এবং একুশ

কাশীনাথ গুঁই




বিউটিস্পট 
কাশীনাথ গুঁই


অনেক খুঁজেছি -
গালের তিলটা তোমার।
রাতের আঁধারে পেয়েছি
শুধু শরীরী পেলবতা -
ক্ষণিকের ভালোলাগা।
অনেক দূর থেকেও
খুঁজে বেড়াই মনে মনে
গালের তিলখানা -
ফিরে পাই ভালবাসা।













এবং একুশ

ব্রতী মুখোপাধ্যায়



লিখেই একটি পদ
ব্রতী মুখোপাধ্যায়




লিখেই একটি পদ ভাবো কেমন কেউ যদি শুনতে রাজি হয় দু-এক লাইন
এখনো ঝরনাগুলি পাথরভাঙার ব্রতে মাতোয়ারা নিজের খেয়ালে
এখনো ধ্বনিস্নাত শব্দে শব্দে আলো পড়ছে ছায়া পড়ছে চলায় থামায়
এক পশলা বৃষ্টি হয়ে গেল, সোঁদা গন্ধ উঠে আসছে ধুলো থেকে ঘাস থেকে ক্রমশ
কিছু রঙ কিছু রূপ হাসিমুখ, উঁকি দিচ্ছে আনাচেকানাচে, ছুঁয়ে দেখছে এ কেমন বাস
লিখেই একটি পদ ভাবো কেমন কেউ যদি শুনতে রাজি হয় দু-এক লাইন
আকাশভেজানো বৃষ্টি --- চমৎকার কানে বাজছে, ভালো লাগছে – বিদ্যুৎ ডিঙিয়ে গেল
মুহূর্তে মোলায়েম আদুরে বাতাস, মুহূর্তে থামছ তুমি একবার, থামছ একথা ভেবে
কোথাও কল্যাণী নেই, মনোরমা, অপরূপা অথবা ছুটিন --- বর্ষার কবিতায় কেউ নেই এরা ?
তাহলে কি ছেনি হাতে নেবে ? সোনার দোকানে বসে সারাক্ষণ যে বালক কবিতাই লেখে
হো হো শব্দে হেসে উঠবে সে, আর কাগজের নৌকার মতো তোমার ওই লেখা
জলে ভেসে জলে ডুবে বিলক্ষণ কোথায় যে বেহদিশ হয়ে যাবে অতঃপর
সরে এসো তার চেয়ে, দূরে সরে এসো, মায়ার কুহক থেকে, দেখো এইবার
নাচের মুদ্রার মতো হাতের আঙুলগুলি দুলে উঠছে কিনা, দেখো চোখের কাজলে
ভেজা ভেজা আছে কিনা কিছু, দেখো দেখি তাতাথই তাল বলে কিনা পায়ের নূপুর
সরে এসো, সরে এসে দূর থেকে দেখো, সত্যি লাগছে কি গোপন হিয়াটি তার
ভালোবাসিবার মতো, নিদেন ব্যথায় ভরা নেই কোনো কারুকাজ যেরকম একলা প্রদীপ
লিখেই একটি পদ ওইভাবে ভাবো কেন কেউ যদি শুনতে রাজি হয় দু-এক লাইন























এবং একুশ

সুধাংশু চক্রবর্ত্তী



চিন্ময়ী মায়ের দিন কাটে অবহেলায়
সুধাংশু চক্রবর্ত্তী




চরণে চরণে রাশিরশি ধুলো ওড়ে সুসজ্জিত প্যাণ্ডেলের ভেতর
সারিবদ্ধভাবে সকলেই এগিয়ে চলেছে সন্মুখে পরপর
শুধুমাত্র মৃন্ময়ী মায়ের শ্রীমুখখানি দর্শনের অভিলাষে
প্যাণ্ডেলের বাতাসে তাই ধুলিকণা, খড়কুটো ভাসে।
মাতৃদর্শনের এই ব্যকুলতা শুধুই কি বহিঃপ্রকাশ, অন্তরের নয়?
তাহলে সকলকে ডেকে ডেকে একবার শুধোতেই হয়
নিজের চিন্ময়ী মায়ের মুখখানি দেখার ব্যকুলতা ক’জনে প্রকাশ করেছো?
তাঁকে এই মৃণ্ময়ী মূর্তির মতো ক’জনে সযত্নে রেখেছো?
জানি আমার প্রশ্নের কোনো সদুত্তরই পাবো না অনেকেরই কাছ থেকে
মহাপুজোর রঙ্গীন দিনগুলো একসময় হয়ে আসে বিবর্ণ ফিকে
আনমনে বেজে ওঠে মৃণ্ময়ী মায়ের বিদায়ের করুণ সুর
তবুও চিন্ময়ী মায়ের দীর্ঘনিঃশ্বাস ছড়িয়ে পড়ে বহুদূর।













এবং একুশ

অমরেশ দেবনাথ







অঞ্জলি
অমরেশ দেবনাথ



যখন আমার নিভল বাতি, অহঙ্কারে মিছে মানে; আঁধার রাতে,
ভাঙেনি ভুল চরম দাহে, যখন পৃথিবী কাঁদল একা বিজন ঘরেতে,
তবু আমি ঘুরেছি পথে, কোন্‌ আশাতে মিছে মানে; অভিমানে,
রাত যে তবে পোহালনা শেষে, অসীম কালোয় ছেয়েছে মেঘেতে!
আনন্দ তবে গেল কোথায়, কোন্‌ দিশাতে মুখ ফিরিয়ে অহঙ্কারে,
ভিতর আমার পুরেছে ছাইয়ে, কালো ধুয়ায় চরম দহনে, দাবানলে,
একে একে জ্বালিয়ে প্রাণ, সবই গেল আপন নীড়ে গোপন খেয়ালে,
শূন্য পৃথিবী কাঁদছে সেথায়, দু হাত মেলে চোখের পরে অশ্রুরোদনে!
তখনো আমার ভুল ভাঙেনি, শত আঘাতে, প্রবঞ্ছনার বেদনা পুঞ্জে,
দাঁড়িয়ে ছিলেম তোমার দ্বারে, আসবে তবে অভিশাপে কলঙ্কিনী হয়ে,
প্রেম যে তবে পূর্ণ হল তোমারি রূপে নির্মোচনে, আমার ভেলা ছেড়ে,
এসেছে তবে কোন্‌ সে সুর এমন দাহে কলঙ্ক নিয়ে সকল দাগেতে!
তখন আমার হল পূজা সকল দ্বারে গানের মেলায় মুক্ত হৃদয়ে,
একে একে এসেছে পাখী কত রাগের গোপন তানে নীরব মেলাতে,
তখন আমার রাত পোহালো নূতন ভোরে নব কিরণে আন্দোলনে,
বেজে চলছি তপ্ত দুপুরে তোমারি সুধায় অমল শীতলে; সমীরণে!
সকল মেঘ গেল ভেসে, শুভ্র আকাশে ফুটল অরুণ নব উষাতে,
তখন আবার জ্বলল বাতি, শূন্য প্রাণে অসীম প্রেমে করুণাময়ীতে,
প্রেম যে তবে বাঁধন ছিঁড়ে পেল ভাষা গোপন লয়ে রবে নীরবে,
বাজছে সেথায় তোমারি বাঁশী গোপন সুরে নিবিড় প্রেমে অঞ্জলিতে!













এবং একুশ

ত্রিভুবনজিৎ মুখার্জী



মা 
ত্রিভুবনজিৎ মুখার্জী




এক বৃষ্টি ভেজা সকালে
ইন্দ্রধনুকে চেয়েছিলাম কত
রং বেরং জীবনকে
রঙিন করার জন্যে
ফাগুনের সন্ধ্যাতে
ফুলকে অনুরোধ করলাম
আকাশে বাতাসে
সুগন্ধ ছড়ানর জন্যে।
নিরস জীবনকে
হাঁসি ঠাট্টা মিষ্টি ভরা মুখে
জীবন কে উপভোগ করার জন্যে।
হাত পেতে চেয়েছিলাম 'চাঁদ' কে
জ্যোৎস্না থেকে অঞ্জলি ভরে
আমার মায়ের স্নেহের পরশে
অকুণ্ঠ ভালবাসার জন্যে।
সাগর তীরে অন্যমনস্ক
ভাবে ছুটে ছিলাম
ঢেউকে ছোঁয়ার
মিথ্যা অভিলাষের জন্যে।
সমুদ্রের গুরু গম্ভীর সঙ্গীতের
তালে মূর্ছিত হলাম
কিছুক্ষণের জন্যে।
বিভোর হয়ে শুনছিলাম
ঢেউগুলো মাথা ঠুকে
আর্তনাদ করছিল
কিছু বলার জন্যে।
জানিনা কখন যে
হারিয়ে ছিলাম দিগ্বলয়ের
প্রান্তে নির্বাক হয়ে
বোধ হয় কারুর জন্যে।
হঠাৎ চমকে উঠি
কে? বলে কপালে হাত দিয়ে
এইতো আমি আছি
তোদেরই কাছে
আমি তোদেরই ‘মা’
বেঁচে আছি তোদেরই জন্যে।













এবং একুশ

মিজান ভূইয়া


নতুন পৃথিবী
মিজান ভূইয়া




এড়িয়ে যাই
শেষ ইচ্ছে
ছাই চাপা আগুন
টের পাই আলোর আগমন
ফিরে যাওয়া,
মৃদু ঢেউ এবং
সংসারমুখি বাতাস…
উঠোনে খেলা করে দোয়া দরুদ
মুখস্থ মন্ত্র
সিঁড়ি ভেঙ্গে উপরে উঠে দেখি
পাথর আর পাথর
মানুষের জনপদে সেই আশীর্বাদ
মেলে না, অভিশাপ মেলে না, ভালোবাসা
কিছুতেই মেলে না।
জয়া নীলিমা মরিয়মের
তিনটি বাড়ী তিনটি ঘর
ভোরে
বিকেলে
কুয়াশায়
শিশিরে আমাকে জ্বালায়
আমি
দুই চোখের দৃষ্টি তিনভাগ করে
বসে থাকি
আকাশের বুকে অরণ্যের
ছায়া…
অস্ত যায় চাঁদ
বুঝতে পারি পৃথিবীর বুকে জাগে
আরেক
নতুন পৃথিবী।













এবং একুশ

প্রদীপভূষণ রায়




উদ্ভট
প্রদীপভূষণ রায়



মনের মধ্যে কত কি দেয় নাড়া
সময় ঘোরে বড্ড ছাড়া ছাড়া ।
দুলকি চালে আকাশ থেকে নেমে
রোদ এসেছে বড্ড গেছে ঘেমে ।
গামছা দিয়ে ঘাম মুছিয়ে শেষে
জোছনা মাসি বসল পাশে এসে ।
হেসে বলে থাক না ক’দিন এখন
মাসির বাড়ি কাছেই আছে যখন ।
মৃদু হেসে রোদ তখনই বলে
থাকলে পরে আমার কি আর চলে ?
কত যে কাজ রইছে হেথা হোথা
এটা শুধুই আমার মাথা ব্যাথা ।
থাকলে তোমার কাজ হবে যে বন্ধ
কবিগুলো পাগল হয়ে কেঁদে হবে অন্ধ ।
ঘুমের মধ্যে আবোল-তাবোল কত কি যে দেখি
পুকুর পাড়ের গাছের ফাঁকে চাঁদ দিয়েছে উঁকি
ঘুম ভেঙ্গে যায় তাকিয়ে দেখি জানলা দিয়ে এসে
জোছনা মাসি বসে বসে মুচকি মুচকি হাসে ।











এবং একুশ

দোলা ঘোষাল





শরীরী
দোলা ঘোষাল

<<<<<<<<<<<< 
জ্বলন্ত অরুন্ধতী
<<<<<<<<<<<<<< 

স্বপ্নগুলো হারিয়ে যায়
যন্ত্রনার মাঝে,
সামাজিক থেকে মানবিক
পুরোটাই সাজানো পটভূমি
ভালবাসাকে হাটের মাঝে
বিকিকিনির পসরা করা
তাই তো করে সবাই
নীলাঞ্জনা হতে চেয়েছিল
তার প্রেমিকের চোখে
নীল পরী
আজ সে হয়ে গেছে
লাল মাটির লাল পরী;
স্বপ্নগুলো এভাবেই হারিয়ে যায়;
যন্ত্রনার মাঝে;
একবিংশ শতাব্দীর মাঝে
দাঁড়িয়ে আজও চলে
শরীরী বেচাকেনা;
নারী আজও ভোগ্যা!
নারী আজও সস্তা;
শরীরী গন্ধে আজও
জেগে ওঠে পিশাচের দল!
স্বপ্নগুলো হারিয়ে যায়
এভাবেই যন্ত্রনার মাঝে!
















এবং একুশ

তন্ময় বসু







এটা কেমন হল 
তন্ময় বসু



পুরুষ নাকি মুক্ত! কিন্তু প্রকৃতিতে আবদ্ধ!
সেও অজ্ঞানতায়।
ফির্ উপায়?
উপায় ভি, ও প্রকৃতি কা পাশ।
সংসার রূপে যেটা পাশে পাশে ঘুরছে, ফিরছে
ওটা আসলে দুঃখ, কষ্ট!
সময়মত ঢেলে দেবে আর উৎপাত করবে
যাতে পরিমানমত বৈরাগ্য উৎপন্ন হয়,
বিবেক জাগ্রত হয়,
আর পুরুষ মুক্তিলাভ করে।
কেয়া ফরম্যাট!
কেয়া স্ক্রীপ্ট গুরু!
মার কাটারী!
পাবলিক তেতে আছে, হেবি খাবে।
কিন্তু, দুঃখটা আসবে সংসার থেকে -
বিষয়ভোগের অরুচি হলে!
পাবলিক মানবে?
যদি বলে বিষয়ই নেই,
আগে বিষয়আসয় ফেরৎ চায়!
বাতিল, বাতিল
আবার গন্ধটা বেরোচ্ছে।
এ্যাই ধূপ ধুনো নিয়ে আয়!
















এবং একুশ

স্বরূপ সুপান্থ





সেতুটি
স্বরূপ সুপান্থ



সেতুটি পড়ে আছে
সেতুটি পড়ে আছে বারবার
সেতুটি নির্বিকার
তার উপর বিরাশিটি গরু পার হচ্ছে
চল্লিশটি ছাগল
আর পাখিরা দোল খাচ্ছে রেলিং বরাবর
সেতুটি লেগে আছে মেয়েটির হাত
পুরুষটির ভাব
আর বিশ্ব-বরাবর আবেগ,
যে-সংযোগ টেনেছিলো মেয়েটিকে
ধরেছিলো পুরুষটিকে
বিরাশিটি গরু হয়ে যায় ছাগল
আর ছাগলগুলো হয়ে যায় চল্লিশ চোর
সেতুটি পেরোলে...


দোলনা অব্যবহৃত, বাতাস এমনি বয়ে যায়
শিশুটি উঠেনা বলে দোলনাটি নড়ে না।
যে মেয়ের চোখ শিশুর দিকে
যে মেয়ের চোখ প্রেমিকের দিকে
সে মেয়ের চোখ পুরুষের দিকে
সে মেয়ের চোখ দোলনার দিকে
যে পুরুষ শোনায় দীর্ঘশ্বাসের গল্প
মেয়েটি তাকেই ভালবাসে
বসে শুনে কল্পচিত্র
একদিন ঢুকে যাবে ঘোটক-ঘোটকীর প্রেমের গল্পে
তাবৎ গল্পে পৃথিবী মর্মর শব্দসংকুল
এর ভেতর টুপ
ডুব
খুব
চলো সন্ধিক্ষণে
প্রেরিত বাচ্চাটির হাত উর্ধাকাশে ঝুলছে


সেটাই এই শ্বাস মেয়েটি পেয়েছিলো
আর গিলেছিলো রক্তের ফোঁটা
একদিন দীর্ঘদিন বাদে।
তারপর ঢেউয়ের উপর চোখ পাড়ি দিলে
যা দেখেছিল
যেন তা সমুদ্র থেকে বিশাল
যেন তা আকাশ থেকে বিস্তর...
কেন কেউ লিখছে না স্তবের গান
মানুষের উৎপত্তি হলো
মেয়েটিও মানুষ হলো


আয় ভিজি — বলে বৃষ্টি এসেছিল যে-সান্নিধ্য নিয়ে
উচ্চারণ প্রসঙ্গে যত ব্যাঘাতই ঘটুক
মানুষ খুব করে একদিন না একদিন বৃষ্টিতে ভিজতে চায়
যেন আকাশ থেকে পড়া শব্দের নামতা
বেশ করে শেখায় গনিত মাটিকে
মেয়েটা মাটিরই সন্তান
একদিন জন্মে অন্যদিন জন্মদানে
সেই ডাইরি পড়ে বুভুক্ষু মানুষের সে কী কান্না
সৃষ্টি প্রকৃতি রূপের, অনাদায়ে বাকী থেকে যায়!


মেয়েটি আস্ত সেতুটি
এত বড় বডি তার
না সামলাতে পেরে ভীমনৃত্য করি
পৃথিবীর উপর
সে মায়া বয়ে গেছে জলে
পরিপুষ্ট ভূমিতে
আমাদের শ্রমের ক্লান্তির ভালবাসার ফসলে
মেয়েটি আলপথ
আমি ভাগ হয়ে যাওয়া জমি
আয় পৃথিবী, কান্নাগুলি বরং শেয়ার করি।


















এবং একুশ

সিয়ামুল হায়াত সৈকত



চোখ
সিয়ামুল হায়াত সৈকত



মুখস্থ স্বপ্নের পথে হেঁটে চলি
পোড়-খাওয়া মন বুঝুক সে অস্বস্তি।
হৃদয়ের নামতা নিঃসঙ্গের যাত্রী এবেলায়
কেউ তো বুঝুক সমুদ্র পেড়িয়ে সমুদ্র ছুঁয়ে যাই!
বিভ্রাট নেই মুখোমুখি দাঁড়িয়ে জল্পনা
কতটুকু চেয়েছি? সবটুকুই ব্যবচ্ছেদ আজ।
এখন, স্বপ্নের অলিন্দে ছায়াপথ আঁকি
নিজের প্রেমটুকুতে প্রেমিকার গল্প নেই,
রাখিনি আর প্রণয় ভরা ওচোখে!

















এবং একুশ

পলাশ কুমার পাল



কবি
পলাশ কুমার পাল




কত কথা বুকের ভিতর করে কোলাহল!
বলতে চাওয়ার আকুল রোদন খুঁজে যায় তল....
ওড়ে কত ঝরাপাতা নীল আকাশকে ছুঁতে,
ডানাহীন অসহায়তা তবু মাটিতেই সুখ পাতে-
ভাগ্যলিখন প্রচ্ছদে আঁকতে চাওয়া ছবি,
রঙের হাহাকারে প্রাণপিপাসা সে সবই!
তারপরেতেও মাদল বাজে মনের দ্বারে দ্বারে,
কোমর দুলিয়ে মনও নাচে বসন্ত-আঁধারে....
আঁধারেতে নাচে ধূপের ধোঁয়া , একচিলতে ছবি
আত্মদহনের নেশায় দাহ্য ধূপই কবি।













এবং একুশ

স্বর্ণদীপ চট্টোপাধ্যায়



এক বছর আগে অনন্ত গোধূলী-বেলায়
স্বর্ণদীপ চট্টোপাধ্যায়




অনন্ত গোধূলীর দিকে চেয়ে আছি।
আকাশের ওপার থেকে খসে যাচ্ছে
মরা আলো...
এই তো, এখুনি কী আশ্চর্য ছিল;
এখনো কিছুটা লাজুক-মেশা রঙ,
অলোক হয়ে আছে।


এক একটা বছর ফিরে দেখি
তোমার মুখের বলিরেখা।
তখনো ছাত্রী - তাই না কি?
তারপরে স্কুল, কাজ শেখা
পেশাদারী ছাপ পড়ে গেছে।
পেশা তার নেশা-ভুল,
হাঁটু-ডোবা কোহলের তাপে
বুজিয়ে রেখেছে।

এই মুখ, ঠোঁটে ভেজা লালায়িত
তরলের স্বাদ,
Corporate শ্বাস
এইতো, এখুনি তোমার আঙুল, নখ
পরতে-পরতে জড়িয়ে রেখে ছিল।

আর আজ?
ইস্‌!!
এই মুখ-ই ভাল লেগেছিল??
















এবং একুশ

পিনাকী




কর্ণধার
পিনাকী



তোমার আশায় পথ চেয়ে আছি, হে কর্ণধার
রাতের পরে দিন যে আসে, তবু কাটে না আঁধার।
ঝড়ের মাঝে নৌকাখানি হয় বেসামাল, নিলাম তোমার স্মরণ
হাত দু-খানি দাও বাড়ায়ে ধরো শক্ত করে হাল, হে কর্ণধার।

মেঘের সাথে আজ মেঘের আড়ি, ঝগড়া করে দিবারাতি
মাঝে মাঝে বিদ্যুতের ঝলসানি, যেন আঁধার রাতের বাতি।
বাতাস যেমন নদীর বুকে উথাল-পাথাল ঢেউ তোলে
তেমনি তোমার অদর্শন আমার মন আকুল করে,
বৃষ্টি নামে অঝোর ধারায়, ঝড় কমে আসে
যেন ভালবাসার নরম স্পর্শে, অভিমান গলে,
শুধু থামে না ঝড়, আসে না বৃষ্টি আমার মরুভূমে
তীর্থের কাক হয়ে শুধু বসে থাকি বাতায়ন পাশে।




















এবং একুশ

দীপঙ্কর বেরা



আমি চলেছি একান্তর 
দীপঙ্কর বেরা 




এক পা এক পা করে বাইরে এসেও 
দেখতে পেলাম না 
আমার বাইরে কে ? 
তুমি তোমরা সে তাহারা 
জগৎ জুড়ে মাটির খেলায় 
সেই তো আমরা । 
হাত ঘুরিয়ে সেই আবার নাকে এসে 
নাকে দড়ির সীমানা খুঁজছি , 
যেখানেই পা ফেলছি 
শক্ত ভিত কিন্তু একটুও জমি নেই ; 
বাস্তুহারা হয়ে শুধু ঘুঘু পাখির ডাক শুনছি । 
বড় দাঁও মারতে কে আর ছিপ ফেলছে 
সরাসরি পোষ্টিং 
হেলায় দখলদারী 
সমস্ত বাইরে ঢুকে গেল যে যার ঘরের ভেতরে 
আর আমিও ঘাড় ঘুরিয়ে ঘর পাই না ; 
লুকোচুরির ছন্নছাড়া 
অবান্তরের দরজায় খিল তুলে 
হয়তো নাক ডাকছে । 
সম্মুখ আরও সুগভীর 
আমি চলেছি সেই অনাবিল আশায় ।












এবং একুশ

ইন্দ্রাণী সরকার



অলৌকিক
ইন্দ্রাণী সরকার




বিভিন্ন রূপ ও পরিচয়ে এসে যায় 
অদ্ভুত সব চরিত্রের সমাবেশ 
অলৌকিক নদীজল সরে সরে যায় 
সংগ্রামের মাঠে ওড়ে 
একরাশ কালো ধুলো 
লাল শাড়ি সবুজ জামায় 
ঘিরে থাকে মাঠ 
অবাক রাজা খলখলিয়ে হাসে 
চোখ মুখ ঢাকে কাপড় আঁচলে 
ফলের ঝুড়িতে বেচে যাওয়া ইজ্জত 
যত্নে কুড়োয় ভিজে শাড়ির আঁচল









এবং একুশ