মঙ্গলবার, ১ সেপ্টেম্বর, ২০১৫

সম্পাদকীয়



অষ্টম সংখ্যা ব্লগে আপলোড করা শেষ হয়েছে অনেকক্ষণ। রাতও হয়েছে অনেক। ঘুম আসছে না। বাইরে অবিশ্রান্ত ধারায় বৃষ্টি পড়েই চলেছে। সেই ভোর থেকে যে শুরু হয়েছে, এই মাঝরাত পর্যন্ত থামার নাম নেই। মনের ভেতরটা কি এক অজানা কারণে অসম্ভব অস্থির। আজ সত্যিই ‘অশত্থপল্লবে বৃষ্টি ঝরিয়া মর্মরশব্দে নিশীথের অনিদ্রা দেয় যে ভরিয়া...’

সঙ্গপরশহারা অন্ধ বিভাবরীর দুর্নিবার টানে পায়ে পায়ে বারান্দায় এসে দাঁড়ালাম। রাস্তার হলদেটে আলো বাগানের গাছগুলোর ওপর পড়ে এক অদ্ভুত আলোআঁধারির জাফরি কাটা নকশা তোলা মায়ালোকের সৃষ্টি করেছে। বাগানের একদিকে সার দিয়ে তিনখানা বড় বড় আমগাছ। পাঁচিলের ধার বরাবর সুপারি গাছের প্রহরা। বৃষ্টির অবিরল ধারা যেন ধোঁয়ার মতো এক ধূসর অস্বচ্ছ আস্তরণের আচ্ছাদনে সমস্ত ঢেকে দিয়েছে। সব ছাড়িয়ে চোখ চলে গেল দক্ষিণপশ্চিম কোণ বরাবর আমার প্রিয় সুবিশাল গাছটির দিকে। কদম গাছ। প্রায় বছর পনের আগে আমারই হাতে লাগানো। আজ ডালপালা মেলে বাগানের অনেকখানি আর আমার মনের প্রায় সবটুকু জুড়ে বিরাজমান। ফুলে ফুলে সাদা হয়ে গেছে। নেশায় আবিল করা গন্ধে চারিদিক ম’ম’ করছে। বর্ষার এই কটা দিনের জন্য আমি সারা বছর অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করে থাকি। তাকিয়ে থাকতে থাকতে মায়ালোক হতে আমার মনের ছায়াতরণী পাড়ি দিল স্বপ্নপারাবারে...

আরো কত কিছুর সঙ্গেই তো সম্পৃক্ত ছিলে তুমি। সেই দিনগুলোর কথা মনে পড়ে তোমার এখনও? আমি ভালবাসি বলে তিনতলার শ্যাওলাধরা কার্নিশে নেমে কতবার কদমফুল তুলে দিয়েছ... তখন কি পরিতৃপ্ত, পরিপূর্ণ লাগত। এখন ভাবলেও বুকের ভেতরটা ভয়ে হিম হয়ে যায় – যদি পা পিছলে... উফফ, কি অসম্ভব ছেলেমানুষি!! কতই বা বয়স ছিল তখন? পনের কি ষোল হবে। অনুভূতিগুলো অনাস্বাদিতপূর্ব। কথায় কথায় অভিমান করতাম তোমার ওপর। এমনই এক দিনে কি যেন লিখেছিলে তুমি...

আজ আকাশ জুড়ে মেঘের ক্যানভাসে
তোমার আমার না-বলা যত কথা
সারা দিন ভার হয়েছিল ধুসর রঙের 
আভিমানের মত। বিকেলের দিকটায় 
আর বইতে পারল না ভার। ঝরে 
পড়ল অঝোর ধারায়... 
বুকের ভেতর টনটনে ব্যথা যেমন 
ঝরে পড়ে একদিন
অবিরত কান্না হয়ে
এ কেমন ভালবাসা তোমার
গভীর বেদনা যত গভীরে বাজে বুকে
তত আরো নিবিড় করে পাওয়া 
রঙ লাগে ক্যানভাসে মনে
তারপর সব রঙ মিশে মিশে 
রামধনু রামধনু তোমার ভালবাসা 
লাল নীল হলুদ সবুজ রঙ মিলান্তি
নদী হ’য়ে যায়
মিশে যায় তোমার অতলান্ত গৌরবে
সেখানে বিরামহীন ধারায় 
দিগন্ত রেখায় 
যুগলের দৃশ্যপট আঁকে
আত্ম উৎসারণের উষ্ণ প্রস্রবণ
একাত্মতার শেষতম স্বর্গে
উপলব্ধির অন্তিম প্রাপ্তিতে
আর পূর্ণতার সবুজ অন্ধকারে
তখন সেই প্রশান্ত নিমগ্নতায়
সব অশ্রু মিশে যায় 
সারণির গভীর নীল স্রোতে
শেষ হয় পূর্ণ পরিক্রমণ 

সেদিন অনাবিল আবেশে বলেছিলাম, এই কথাটি কবি, পড়বে তোমার মনে বর্ষামুখর রাতে... কিন্তু পরিক্রমণ তো শেষ হল না!! 

আমার দুটো গোল্ডফিশ ছিল, তোমার মনে আছে? বিন্দি আর বুলেট। একদিন সকালবেলা ঘুম থেকে উঠে দেখি বুলেট ভাসছে জলের ওপর। আমার সে কি কান্না! ভাই কত খুঁজল, কিন্তু ওই সাইজের গোল্ডফিশ কোত্থাও পাওয়া গেল না। সারা কলকাতা খুঁজে শেষমেশ তুমি জোগাড় করে দিলে সল্টলেক হবিসেন্টার থেকে... এবারেরটার নাম দিয়েছিলে ‘ফ্যাঁচফ্যাঁচ’। 

সেদিনও সারাদিন অজস্র অবিরাম ধারায় বৃষ্টি পড়ে সমস্ত শহরটা সাদা হয়ে গিয়েছিল। কাঁচের অর্কিড হাউসের ভেতর সেদিন তুমি আমায় প্রথম... কেন চলে গেলে আত্রেয়? এতো বুঝতে তুমি আমায়, আমার সেদিনের সেই অভিমানটুকু বুঝলে না? ভালো করে জানতেও তো তুমি চাওনি কিছু সেদিন!! চলেই যদি গিয়েছিলে, তবে এতোদিন পরে আবার ফিরে আসছো কেন? কি বলতে চাও? জানতে চাও কি কিছু? শেষ করতে চাও কি পরিক্রমণ?

রাত বোধহয় শেষ হয়ে এল। পুবের আকাশে আলোর আভাস। বৃষ্টির বেগও কমে এসেছে অনেকখানি। আমার তো হাজারও সমস্যা, আমি খুঁজে ফিরি আমার প্রশ্নের উত্তর। আপনারা বরং ততোক্ষণ ডুব দিন ‘এবং একুশ’-এ।

ভ'রে থাকুন ভালবাসায়.... 

সুস্মিতা বসু সিং























এবং একুশ

কৃষ্ণেন্দু ব্যানার্জী

বানভাসি সুখ 
কৃষ্ণেন্দু ব্যানার্জী 


কোনো এক রাতের 
শেষ সীমানায়
রক্তাক্ত হওয়ার আগে 
হয়তো ছুঁতে হবে 
জীবন ছাপিয়ে যাওয়া 
কিছু অনুভব 
মেঠোপথে বা আকাশের বাঁকে 
যেখানে রামধনু 
তোমায় ছুঁতে চায় 
ছবি আঁকে মন মাতায় 
স্পর্শের অপেক্ষায়। 

তুমি আসবে তাই 
এই আয়োজনে 
কূল ছাপিয়ে আছড়ে পড়েছিল 
সশব্দে 
স্বার্থপরের মতোই 
উদ্ধত কোনো এক নদী 
ছোট্ট পুকুরের গোপনীয়তা 
হয়েছিল চুরমার 
ভেসেছিল বেশ কিছু 
স্বপ্ন সংসার 

জল সরে যাওয়া 
কাদামাটির আস্তরন 
কত কথা মনে করায় 
রক্তের প্রলেপ ধূসর হয় 
মন ভিজে থাকে 
জলছাপ আরও স্পষ্ট হয়ে 
দাগ রেখে যায় 
সব হারানোর চিহ্ন থেকে যায় 

সাঁঝবাতি একাকী জ্বলতে থাকে 
ভিজে মন আলেয়ায় 
নিবিড় হতে চায় 
তোমার উপস্থিতির আয়োজনে 
জেগে থাকা শরীরের অনুভব 
জানান দেয় আদিমতার 

বন্যতার বন্যায় আরো একবার 
বানভাসি হওয়া
কোনো এক রাতের 
শেষ সীমানায় 
তোমার স্পর্শের অপেক্ষায় ।।














এবং একুশ

কৌশিক গাঙ্গুলী




অন্ধকার
কৌশিক গাঙ্গুলী




সক্রেটিস বলেছিলেন তিনি
জানেন, তিনি কিছুই জানেন না,
আর ওদিকে চায়ের দোকানেরদ
বেঞ্চিতে আলোকিত সবজান্তা পবিত্র
পাপীরা, রাস্তায় কুকুর, কাক আর
আবর্জনা বাড়ছে তবু কাজের
বদলে অকাজ, শান্তির বদলে সন্ত্রাস
বাড়ছে, বেগুন ভবিষ্যতে শুধুই অন্ধকার।










এবং একুশ

অরিন্দম চন্দ্র





কোন বকলমা নয়
অরিন্দম চন্দ্র




কোন বকলমা নয়-
তবু যদি এমনই চলে যাই
কোথাও কেউ ছড়াবে না খই,
রাজবেশ নয়, নয় অগুরু-চন্দন,
বিছানার বাজু- তোমার লাল টিপ,
মুখাগ্নি না,  চুমু দিও শেষ বার।

আমার কিশোরী মেয়ে কাঁদে যদি একা-
বুঝিও-বাবা ছিল ঠিক তুমি,
একটু দেরী হল সব কিছু
তবু সব কিছু যেন বোঝাতে পারো
অঝোরে বৃষ্টি নামুক সে বিকালে।

অন্য অনেকে আসবে সেদিন, দেখো-
দুটো বালিশ মাথায় আমায় দিও,
আর পাশে কিছু বই দিও প্রিয়
সাথে ভডকা রেখো চেনা বোতলে।

চিতাও হয়ত জ্বলবে না সে’দিন
অঙ্গার তুমি জঠরে জ্বালিয়ে রেখো
দিগন্তরেখা বড় বিষময়
ছড়ানো ছেটানো আদরগুলো সব
যত্ন করে বুকের আগুনে সেঁকো।

তোমার আমার সেই দিন এলোমেলো
শব্দগুলো ছড়াবে চারপাশে
তোমার হাতে আমার দুটো হাত
আকাশকে ডেকো-মিলিত উল্লাসে।





































এবং একুশ

জয়া চৌধুরী



আয়না সখা
জয়া চৌধুরী



আমি বেশ ভেবে দেখেছি
আয়নার সঙ্গে আমার প্রাক্তন প্রেমিকের মত সম্পর্ক
যখনই ওর সামনে গেছি ও কেবলই 
আমার মন্দ গুলোই আঙুল তুলে দেখিয়েছে
ক্লাস থ্রি তে পড়বার সময় যে বার পাকানো গোঁফ 
এঁকে দিল বড়মামা দৌড়ে ওর কাছে গেলাম,
বুকের ভেতর ঢিপ ঢিপ সিরাজদৌল্লাকে চাক্ষুষ কেমন লাগবে না জানি !

ওমা, দেখি মাসীমণির শাড়িটাকে ধুতি করে পরা
কাজল পেনসিল দিয়ে গোঁফ আঁকা সেই আমিই দাঁড়িয়ে!
ক্লাস নাইনে প্রথম শাড়ি পরে আনন্দে ডগমগ
এক্কেবারে পাশের বাড়ির সুন্দরী বৌদি লাগছে বুঝি!
সামনে দাঁড়িয়ে সেম কেলেঙ্কারি।
মায়ের ঢলঢলে ব্লাউজ গায়ে শাড়ি পরা জবুথবু
ওই কার্টুনটা কে???

প্রথমবার প্রেমে পড়েই একদৌড়ে ছুট
কুছ কুছ হোতা হ্যায় ফুটে বেরোলো না কি 
যৌবনের ব্রণের মত। যা ভেবেছি ঠিক তাই।
লোকটা আমিই ছিলাম...রানী মুখার্জী নয়। তারপর
আমার ছেলের বাপ যখন নিজেও কারো ছেলে ছিল তখন 
যেদিন লাইব্রেরীতে কফি খাবার প্রস্তাব দিল, দিন এলে
আমিও খুবসে প্রেম করে বাড়ি ফিরে অনেকক্ষণ 
আঁতিপাঁতি করে মুখ দেখলাম। কই! প্রেমে পড়েছি
বোঝা যাচ্ছে নাতো! ধুস... তখন থেকেই জানি আয়নাটা
আমার প্রিয় ক্লাস মেটও যে সব বারেই ফার্স্ট গার্ল হয়ে
বসে থাকে আর আমার ফ্রাস্ট্রু এড়াতে 
স্রেফ এলেবেলেদের সঙ্গে মিশতে হয়। মাঝে সাঝে 
যে সব ঝুটঝামেলা হয়েছে জীবনে সেটা আমি স্নানের সময়
কল খুলেই সামলে নিয়েছি, আমার আয়না লাগেনি তাতে।

কিন্তু যেদিন দুপুরবেলা একলা ঘরে
আপন মনে ‘চন্দ্রা’-র পার্ট টা মুখস্ত করতে করতে
ভাবছি... ইস একবার ‘নন্দিনী’ টা পেলে না ফাটিয়ে দেবো।
দরজায় ঘন্টি বাজতেই খুলে দেখি পোস্টম্যান।
ভাবলাম হেমন্ত কাল তো আসেনি ... তবে পোস্টম্যান কেন?
সে আমায় হাতে ধরিয়ে দিল ছেলের বাপের একটা মুখবন্ধ নোটিশ।
খুলেই কিসব যেন পড়লাম... দৌড়ে
আমার শত্রুর কাছে গেলাম। বেরোতে হবে একটু পরেই
চুল আঁচড়ানো পাউডার দেওয়া বাকী... অথচ
কিছুতেই নিজেকে দেখতে পাচ্ছিলাম না। সব কেমন 
ধোঁয়া ধোঁয়া ।
চোখ ঘসলাম, আয়নাটাও পরনের জামা টা দিয়ে মুছলাম।
নাঃ। রাজ্যের মেঘের কুয়াশা যেন ভিড় করে আছে ওটায়।
একটা আরামের শ্বাস বেরোলো বুক থেকে।
যাক বাবা আয়নাটা প্রাক্তন নয় আমার বর্তমানেই প্রেমিক।
ভাগ্যিস গ্রীষ্ম দুপুরে মেঘ ডেকে আনল। 




  















এবং একুশ

অনুপম দাশশর্মা






বি ও তাঁর অশ্বমেধ ঘোড়া 
অনুপম দাশশর্মা




ঝড়ের খোলা পালে কিংবা ভাসানের পর ভেসে ওঠা মাতৃমুখে
যন্ত্রণার তুষে জ্বলে ওঠা, এ সবেই কবির অমরত্ব

অজস্র অক্ষর প্রতিদিন খোঁজে ক্ষতের উৎস
নিঃস্ব জনতার ক্ষুধাতুর মুখে সাহসের স্ফুলিঙ্গ
এনে দেয় কাব্যিক কলম!
অথচ হৃদয়বৃত্তির ঋতুগুলো জীবনের বিশেষ লগ্নে
সাড়া না দিলে শূন্য বিবরে বয়ে যায় উষ্ণ তরল
কবির কি দায় নেই বিপন্ন মনের কাছে
সুদামা সাজতে?

সমরেখায় থাকুক সুরক্ষিত অদম্য চাবুক
প্রতিদিন কবির নিদ্রাহীন চোখে
জীবন রুদ্ধ করা কাঁটা অবিচল,
প্রয়োজন মাপে না বিষয়
ভরা বর্ষায় কবিকেও টোকা দেয় প্রেমিকা আঁচল!
















এবং একুশ

অঞ্জন বর্মন



আজও আছ নারী 
অঞ্জন বর্মন



তোমার ছিল আগুন আগুন খেলা
আমার ছিল কাগজ ও নীল কালি
তোমার ছিল পুজো, দোলের মেলা 
আমার ছিল বুকটা খালি খালি। 

তোমার ছিল ড্রয়িং ইকেবানা 
আমার ছিল চলতি সিগারেট 
তোমার শো’য়ে টিকিট মিলত না
আমার ছিল কোচিং ক্লাস এ লেট। 

টপ টপিয়ে চড়ছিলে সব সিঁড়ি 
আমি তখন রোজ দুপুরে জিপিও 
হঠাৎ এল পাত্র - ধুত্তোরি 
দুঃখে রাগে খুলেছিলাম ছিপি ও। 

এখন আমি বিদেশ বিভূঁই ঘুরি
দিবানিদ্রায় বাড়ছে তোমার ওজন 
ছেঁড়া ফাটা স্বপ্নকে আজ ধরি
গুনছ তুমি লাইক দিল কজন। 

পুরুষ তাই আমি সবই পারি
তুমি ছিলে, আজও আছ নারী।
    


















এবং একুশ

শুভজিৎ বসাক



অতীত আয়না
শুভজিৎ বসাক



বড় হচ্ছি কিছু সময়কে সঙ্গে নিয়ে,
পিছনে পড়ে থাকছে স্মৃতির আয়নাটা।
যখন আয়নাটাকে যত্ন নেওয়ার কথা ছিল-
সেসময়ে আবেগ-প্রেম-পরচর্চায় নিজেকে সাজিয়েছি।
আজ সময় অতীতে পরিণত হয়েছে,
নিজের চেহারাটাও ভাঙ্গছে প্রতিদিন,
মনে পড়ছে আয়নার কথা।
স্মৃতির চিলেকোঠার ঘরে গিয়ে ঢাকা খুলে দিলাম আয়নার,
দেখি সে মাঝ বরাবর ভেঙ্গে গেছে!
এতটাই “আমি”-ত্বে ভুগেছি যে ওর দিকে ফিরেও চাইনি কোনওদিন,
কখন যে সে ধাক্কায় ভেঙ্গে গেছে!
অন্তত শরীরেও যদি ভাঙ্গা কাঁচ বিঁধতো কোনোদিন,
হয়তো বোঝা যেত।
ভাঙ্গা আয়নায় নাকি মুখ দেখতে নেই,
অভিশাপ লাগে তাতে,
অথচ ভুল যে নিজেদের,
যত্ন নিলে ভাঙ্গত সে আয়না কখনো?
লাগে লাগুক অভিশাপ, ভুলের প্রায়শ্চিত্ত করাটা দরকারী;
অতীতের আয়না অত্যন্ত দামী,
স্মৃতিচারণ এখন মরুভূমিতে জলের সন্ধান করা মাত্র,
তবু মন অতীতের আয়নাকে একবার ছুঁতে চাইছে।











এবং একুশ

পূর্ণচন্দ্র বিশ্বাস

খাবারের সন্ধানে পাখি 
পূর্ণচন্দ্র বিশ্বাস




সেই কবে থেকে -
সকাল দুপুর কিম্বা বিকাল ;
কি চঞ্চল -
উৎকণ্ঠা বুকে নিয়ে !
সংকীর্ণ সরু গলি
ময়লা আবর্জনা ঘেঁটে চলি ,
উলটে পালটে দেখি আঁস্তাকুড় ।
কোন কীট-পতঙ্গ ,
অথবা খাবারের কনাটুকু
পাই যদি ।
শিশু আমার আছে অনাহারে !
কেউ কেউ বলে ছোট ছানা ,
পাখি হলে উড়ে যাবে ,
আর ফিরে আসবে না -
আমার কোলে আমার নীড়ে ।
তাই বা হলে -
কী যায় আসে ?
সরকার পাড়ার শান বাঁধানো ঘাটে -
তোমাদের উঠানের পাইদোরে -
কত ঘোরা ঘুরি কত দিন করি ।
তোমাদের দুষ্টু সোনার আধ খাওয়া ;
বিস্কুটের গন্ধে উড়ে উড়ে আসি । 
আবার উড়ে যাই এক নিমেষে ;
আবার ফিরে আসি অতি সন্তর্পনে ।
চাল ঝাড়া খুদ-কুঁড়ো -
হাঁড়ি কুড়ানো ভাত পাই যদি ;
মহানন্দে ফুড়ুৎ ফুড়ুৎ লাফাই ।
ঘুম নেই দুচোখে -
ডানা গুলি ক্লান্তিহীন !
রাশি রাশি নলেন গুড়ের মোয়া ;
প্লাষ্টিকে ঢাকা ।
নেব কি করে ?
পেনসিলের মতো সরু ঠোঁট ।
শকুনের সজাগ পাহারা ;
মুহুর্মুহু টিনের আওয়াজ -
হৃৎপিণ্ড ভয়ে চৌচির ।
তোমাদের ছোট ছেলে মেয়ে খেলে -
হাসি আর উল্লাসে ।
তবু হাতে কেন ইঁট পাটকেল ?
সাবধানে হোক কিম্বা অজান্তে -
যদি ছোঁড়ে ?
লাগে গায়ে ।
পালকের নিচে খত ;
পড়ে থাকে চিরকাল ।
কোন হাতের নরম ছোঁয়া ;
লাগবে না বুকে ।
মাছরাঙা-বক শঙ্খচিল ,
শালিখ-ঘুঘু-পেঁচা-চিল
ছোট পাখি-বড় পাখি
চল সব ওই দেখ -
শীত আসছে -
এখনই শুকিয়ে যাবে খাল বিল ।

















এবং একুশ

পলাশ কুমার পাল


কাব্যগ্রন্থের প্রচ্ছদ
পলাশ কুমার পাল



বৃষ্টিরা ক্রমান্বয়ে ঝরে ছবি আঁকছে,
এঁকেই চলেছে দিনরাত....
মনের ঘরে খোলা জানালায়
একটা পাহাড় দাঁড়িয়ে আছে।
পাহাড়ের পাঁজরের পাথর ফেটে বেরচ্ছে ফসিল-
পুরানো ইতিকথা নদীর মতো যৌবনে ছুটে আসে
ছন্দে নৌকাটাও দোলে,
দুলতে দুলতে হাল ধরা মাঝি
ন্যাকড়ায় বাঁধা পাণ্ডুলিপি খোলে।
নদীর ঢেউ ও নৌকার মিলিত স্পন্দন ছলাত্‍ ছলাত্‍....
মরচে ধরা রডে হাত রেখে ইতিহাসে ভাসি,
বিম্বিসারের কারাগারে দাঁড়িয়ে দেখি
বিশ্বশান্তি স্তূপ মুখোমুখি:
মুখোমুখি জানলার পাশে পাহাড়।
ইতিহাস, শুধু ইতিহাস খুলি এই মনে....
জানি, কোনো স্বাক্ষর রাখেনি সে
বা কোনো বইয়ে ধরবে না এই অক্ষর-
তবু উঠান ক্ষয়ে বালি ভেসে যায় বৃষ্টিতে
পাললিক হবে বলে;
বারেবারে আত্মহত্যা শুধু-
তারপরে শত শত শব্দের পোকা ছুটে যায় কবিতার গর্তে
শুধু অন্ধকার, পিঁপড়ের আশ্রয় ও খুশি।
মানুষের পদপৃষ্ঠে মুহূর্তে মৃত্যু আসবে জেনেও
পিঁপড়ে হই!
গর্তের ভিতর থেকে শুনি বৃষ্টির ধ্বনি....
প্রকাশের ব্যস্ততায় ধ্বনিরা ক্রমান্বয়ে এঁকে যায়
স্মৃতি
মৃত্যু
জন্ম
আর কাব্যগ্রন্থের প্রচ্ছদ।












এবং একুশ

সৌমেন্দ্রনাথ গুহরায়

খেলা
সৌমেন্দ্রনাথ গুহরায়



আগুপিছু করে সাজিয়ে নিলেইতো 
বাকি যা ছিল 
সব সেরে নেওয়া যেত
কত সম্ভাবনা ছিল
পুড়ে পুড়ে সব ছাই হয়ে
হাওয়ায় মিশে গেল
যে সেজে ছিল 
সে রয়ে গেল
যার যাওয়ার নয়
সে চলে গেল
দিন শেষে হিসেব মিলাতে গিয়ে দেখি
মুঠোর ভিতর হতাশা ছাড়া
আর কিছু নেই

ক্ষমার কলসে প্রেম
তখনো ঘুমায়
উদাসীন মালা হাতে
দয়িত আকাশের বুকে
সে এক নতুন সূর্যোদয়
উন্মুখ জীবনে মৃত্যু এক ব্যর্থ ব্যাধের মত
হাত পাতে কবিতার কাছে
আকাঙ্খার অসহ্য আক্ষেপে
ক্লান্তির কফিনে
তখনো এক জীবনের অতলান্ত সম্ভাবনা
খেলা শেষের খেলায়
শূন্যতায় সে এক নতুন খেলা




















এবং একুশ

অনিন্দ্য মুখোপাধ্যায়


    

আমার কৈফিয়ত
অনিন্দ্য মুখোপাধ্যায়



আমি বরাবর অন্যভাবে
চেষ্টা করে শব্দ সাজাই
ব্যস্ত পথে থ্রোটেল টেনে
স্কিলের জোরে বাইক চালাই।

আমি বরাবর খাতার পাতায়
উগরে ফেলি রাগ অভিমান
ছোট্ট থেকে স্বপ্ন দেখি
কিনবো ভাবি, যুদ্ধ বিমান।

আমি বরাবর হিস করেছি
ঝোপের ধারে,পথের ধারে
এবং তোমায় কিস করেছি
সিঁড়ির তলায়,অন্ধকারে।

আমি বরাবর নির্বিবাদী
জপ করেছি পৈতে হাতে
এবং শুধুই ডাল চেয়েছি
পোস্ত দিয়ে,গরম ভাতে।

আমি বরাবর জনপ্রিয়
মিমিক্রিতে হেমন্ত কুমার
বার্গেনিং এ আস্থা রেখে
স্নিকার্স পরি নকল 'পুমা'র।

আমি বরাবর গাঙ্গুলীয়ান
আদুর গায়ে খাট কাঁপাবো
এবং তোমায় সঙ্গে নিয়ে
ফী ফ্রাইডে তে ডেটিং যাবো।


















এবং একুশ

ইন্দ্রাণী সরকার





তোমার হারিয়ে পাওয়া 
ইন্দ্রাণী সরকার



অসংখ্য ভুলভ্রান্তি বাঁচিয়ে এখনো 
চিরদিনের সেই আমার তুমি !
ঐ গুলঞ্চলতার আবছায়ায় যখন 
তুমি বসে থাক একা আনমনে 
তোমায় ছুঁয়ে যায় শরতের উষ্ণতা |

স্নিগ্ধ কবিতার কপোল ছুঁয়ে
মৃদু বাতাস কাশের বনে ঢেউ আঁকে |
ডাগর দুটি কাজল চোখেতে 
শুকিয়ে থাকা জলের যে দাগ তা কি 
কোনদিন অনুভব করেছো ?

দেখো না তোমায় ফের ভুলতে গিয়ে 
বারে বারেই পথ ভুলে যাই, 
আর হঠাৎ চেয়ে দেখি আমি এখনো 
দাঁড়িয়ে তোমারি দোরগোড়ায় |
দুচোখে আমার একরাশ ডুবুরি স্বপ্ন
আর ফিরে আসা অপ্রতুল সময় |














এবং একুশ

অরিন্দম



জীবন ও শূন্যতা
অরিন্দম




জীবনে চলার পথে
পায়ে পায়ে ফিরতে থাকে
শূন্যতা....
মুখোশ বদলাই। আড়াল করি আত্মরূপ
মঞ্চের আলো; ভরিয়ে দেয় বুক
দমবন্ধ। বমি পায় খুব
দহন চেপে বুঝতে পারি
ভিতরে ভিতরে অন্তহীন ভাঙচুর...!













এবং একুশ

তাপসকিরণ রায়






ঘুম
তাপসকিরণ রায়



বাস্তব আধার কতটা ধরে রাখা যায় ?
শক্ত চেতনা ছিঁড়ে তুমি যখন ঘুমিয়ে পড়ো, 
যে আধার তোমায় গিলে নিচ্ছে ক্রমশ:--
কতটুকু ব্যথা তুমি ধরে আছ বুকে ? 
সংজ্ঞা শক্তিটুকু তোমার সীমা রেখা,
যে ব্যথায় তুমি ঘুমিয়ে পরো--হোক তা স্বপ্ন বা বাস্তব--
তোমার চৈতন্য ভেঙে বারবার জেগে ওঠাই তো জীবন !












এবং একুশ

দেবাশীষ দে



শেষ কবিতা
দেবাশীষ দে




তোমার জুঁই আলোর স্পর্শডগায় এই মাত্র 
জড়তার মুখোশ ছিঁড়ে বেরোলাম আমি - 
তোমার নগ্ন বুকে স্থির হতে হতে 
কালের বিবর্ণরেখা মুছে দিলাম আকাশের ক্যানভাসে।
পৃথিবীর ঘোরতর কালো দিনে স্বপ্ন দিলাম এঁকে 
তোমারই নাভিমূলের চারিদিকে।
এরপর আর কবিতা জন্মাবে না জানি;
শুধু একবার ছুঁয়ে যেতে দাও তোমার ওই 
অশ্রু ভেজা নিভৃত নির্জন যোনি।















এবং একুশ

তন্ময় বসু


মসীহ্
তন্ময় বসু





হায় মসীহ্!

চারপাশের একান্ত মসীহ্,
খবরের কাগজ জীবন!

খবরের কাগজ
- চরিত

হে ক্ষণিক মসীহ্
হাউইবাজী রোশনাই 

- কুর্ণিশ।

হে টবের গাছে ফোটা ফুলবা্হার
নাটমঞ্চ তোতা পাখি,
জাদুগরী পাগড়ী পালক -

বট অশ্বথ্থ বিস্তারের 

চিরকুট সালাম

সিন্দুর রাঙা লোকগাথা
বাস্তুসাপ
ঢাক বাজে চড়কগান --
তুমিই মসীহ্

অনুস্বার বিসর্গ
চন্দ্রবিন্দু চাঁদে

ক্ষণিকের মসীহ্















এবং একুশ

বেলায়েত মাছুম



দ্বিধা 
বেলায়েত মাছুম




আমায় কখন ছুঁয়ে গেলে- হাওয়া
হিজলের বনে কখন তুমি ঝরে গেলে
সন্ধ্যায় একদিন মগ্ন ছিলাম- মনে পড়ে?
পথের কোন দিক ছিল না
আমাদের মত- ডুবে থাকার
নিজেদের ভেতর পতঙ্গ হয়ে।

আমায় ছুঁয়ে যায় হাওয়ার শরীর আর আমরা আমাদের
নিয়ে জেগে থাকি, কোন একদিন ভ্রমণে যাবো- হিজল বনে।

সন্ধ্যার কথা মনে পড়ে?
হাওয়া আর জল?
যেদিন ঠোঁটের ভাঁজে পুড়ে গেল ফুল
লবণ বাগানে ঝুলে থাকলাম চাষীর স্বরূপ।











এবং একুশ

সুরজিৎ চক্রবর্ত্তী




সময় অল্প বাকি
সুরজিৎ চক্রবর্ত্তী




কি দেবে,
ফুল?
দিতে পারো
যদি সম্ভব হয়
ফুলের বাগান দিয়ো
মাটি গন্ধ মাখা
ক্যালেন্ডুলা, পিটুনিয়া, গন্ধরাজ ...

আলো ?
দিতে পারো একমুখো
ভোরের কাঁচা সোনা ঝিলমিল রঙ
চোখে নেবো শ্যাওলা ঢাকা
সবুজ অর্কিড
ছোঁয়া আলো
পরশপাথর .....

যা দেবে তাড়াতাড়ি দিও
সময় অল্প বাকি
ক্ষণজীবী
সূর্যাস্তের আগে
লবণ সাগরে মেশে নদী
ঘাম রক্ত আর যত আবর্জনা
সব কৃষ্ণপক্ষে মিশে যায়
বারুদ বাতাস
এ শুধুই যাওয়া দিগন্তর দিকে
যথানিয়মে
সঙ্গমে।।
















এবং একুশ

পূর্ণচন্দ্র বিশ্বাস

যদি যেতে চাই 
পূর্ণচন্দ্র বিশ্বাস 



যদি যেতে চাই বাধা দেবে নাতো ?
কোনো এক উদ্ধত ঝড়ের রাতে !
অদম্য উত্তাল নিরাকার সাগর পারে ,
কেবলই কলার ভেলা চড়ে ;
নিতান্ত আনকোরা –
মাঝির বেশে যাচ্ছি আমি ।
বহু কান্নার পর পেয়েছি ,
পিতা মাতার আশির্বাদ ।
আত্মীয় পরিজন সক্কলকে –
এমনকি বন্ধুদেরও বলে এসেছি ;
এখন শুধু তোমার অনুমতির
অপেক্ষায় আছি ।
দেবে কি যেতে , যেতে দেবে কি ?
একটি অনুরোধ , বায়না করো না ;
তোমাকে সঙ্গী করতে পারবো না ।
হয়তো কথা ছিল –
তুমি আর আমি এক সাথে যাব !
তবু তুমি থাকো আমি যাই ।
তুমি গেলে পৃথিবী দেখবে কে ?
সমাজ পরিবেশ ঘর সংসার ,
পৃথিবীর সব কোলাহল শেষ হবে !
আমি গেলে তবে –
অরণ্যে পাখিরা জাগবে ।
যেতে দেবে কি , যদি যেতে চাই ?
কোন এক উদ্ধত ঝড়ের রাতে !
অন্ধকার নিঃস্তব্ধ চরাচর ;
দুহাত তুলে ডাকছে আমাকে ।
একটু পরে সেও যাবে চলে ।
আমাকে নিতান্ত একা যেতে হবে !
আমার ভালোবাসা প্রতিক্ষণ ;
তোমাকে করিলাম সমর্পন ।
জানোতো আন্টার্টিকা যাচ্ছি আমি ।
পারোতো সেই হিম দেশের ঘরে ,
তোমার চোখের এক টুকরো
আলো পাঠিয়ে দিয়ো ।
সে বিস্তৃত চোখে আমি –
অনন্ত কাল জেগে থাকব ।
সূর্যের লাল শরীরে –
ধূসর আস্তরণ ফেলে ;
যেন দুরন্ত খরগোশ আমার কোলে ।
মৃদু অন্ধকার পরিপৃক্ত চোখে ;
নিরলস চেয়ে থাকব আমি ।
কেউ কখনো যায়নি যেখানে –
সেখানেই যেতে চাইছি আমি ।
যদি যেতে চাই বাধা দেবে নাতো ?
হয়তো এক সময় দিনে রাতে বারে বারে ,
বিদায় বিদায় বিদায় চাইব আমি ।
সেই – সেই শরতে কি বসন্তে
যখন তখন সর্বক্ষণ ।
বনের পাখির নীড়ের ধারে ;
নাটা গাছের ফল খেয়েছি আমি ,
আজ আমার আর খিদে নেই ।
মনে মনে ভেবেছি সমভূমি ছেড়ে –
ঘর বাড়ি ছেড়ে আফ্রিকান অরণ্যে ;
অতি নিবিড়ে নির্জনে ঘর বাঁধবো ।
অনেক জোছনায় তারার বনে ;
প্রিয় তোমাকে অনন্ত চোখে দেখব ।
প্রিয় কখনো কোথাও বনের ধারে ,
সবুজ ধূসর পাতার ভীড়ে ;
ভাদুরে অষ্টাদশী চাঁদ দেখেছো কি ?
থাক ছাড়ো ওসব কথা –
আমি এখনই যেতে চাই ।
একটি অনুরোধ বায়না ধরোনা ;
তোমাকে সঙ্গী করতে পারবোনা ।
মনে পড়ে কি তোমার –
একদিন আমি ছিলাম ,
এই উপমহাদেশের রাজা !
আমার পাত্র মিত্র পারিসদ দল ;
সকলেই একে একে চলে গেছে ;
যাওয়ার বেলা আমাকেও ডেকে গেছে ।
আমি কথা দিয়েছি তাদের –
একদিন ঠিকই যাব ।
কাল গভীর রাতে ,
যখন অঘোরে ঘুমিয়ে ছিলাম ;
শুকতারা মনে করিয়ে দিলে ।
অন্ধকার নিঃশব্দ চরাচর ;
দু হাত তুলে ডাকছে আমাকে ।
যদি যেতে চাই বাধা দেবে নাতো ?
যে সূর্য্য তোমার আলো দিয়েছে ,
যে পৃথিবী তোমার পালন করেছে ;
তাদের কাছেই তুমি থাকো ।
তুমি গেলে তারা যে বড়ো ব্যথা পাবে !
দেশ সময়ের ক্রান্তি রাতেই আমি যাব ।
যদি কখনো তোমার শ্বাস প্রশ্বাস ,
তোমার প্রেম তোমার আলো ;
ডাকে আমাকে –
একদিন ঠিকই ফিরে আসবো ।
কালের সাথে ইতিহাসের অবক্ষয় ;
মনের সাথে মানসীর মন বিনিময় ,
অনাবিল আশা বাসা বেদনায় ।
প্রিয় তোমার লাবণ্যের উচ্ছ্বাসে ,
পাবে বলে এইসব মাটি ,
ওই সব আকাশ ;
কর্কশ মুখে কাঁপে ।
প্রিয় অন্তত আড়ষ্ট মুখে দিয়োনা বিদায় ।
ঘোর তমসা আমার শিরে !
এখন শুধু তোমার অনুমতির অপেক্ষায় ।














এবং একুশ

মনোজিৎ কুমার দাস



আমি তবুও তোমার সাথে মিলিত হবো 
মূলঃ অমৃতা প্রীতম 
অনুবাদঃ মনোজিৎ কুমার দাস



আমি তবুও তোমার সাথে মিলিত হবো
কেমন করে, কোথায় ? আমি জানি না,
হয়তো আমি তোমার কল্পনায় ধরা দেব ,
আমি নিজেকে তোমার মনের ক্যানভাসে
হয়তো রহস্যময়তায় মেলে ধরতে পারবো,
আমি তোমার দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকবো ।

হয়তো আমি তোমার বুকের উষ্ণতায় রঙধনু হবো 
কোথায়, কেমন করে ? আমি জানি না, 
আমি তবুও তোমার সাথে মিলিত হবো ।
হয়তো আমি একটা ঝর্ণা হয়ে 
ফেনিল জলধারায় তোমাকে ভিজিয়ে দেব ।

শরীর বিনষ্ট হলে সব শেষ হবে
কিন্তু স্মৃতির সুতোগুলো নিরন্তর জাল বুনে যাবে,
স্মৃতিগুলোকে আঁকড়ে ধরে 
আমি তবুও তোমার সাথে মিলিত হবো।






এবং একুশ