মঙ্গলবার, ১ সেপ্টেম্বর, ২০১৫

পূর্ণচন্দ্র বিশ্বাস

যদি যেতে চাই 
পূর্ণচন্দ্র বিশ্বাস 



যদি যেতে চাই বাধা দেবে নাতো ?
কোনো এক উদ্ধত ঝড়ের রাতে !
অদম্য উত্তাল নিরাকার সাগর পারে ,
কেবলই কলার ভেলা চড়ে ;
নিতান্ত আনকোরা –
মাঝির বেশে যাচ্ছি আমি ।
বহু কান্নার পর পেয়েছি ,
পিতা মাতার আশির্বাদ ।
আত্মীয় পরিজন সক্কলকে –
এমনকি বন্ধুদেরও বলে এসেছি ;
এখন শুধু তোমার অনুমতির
অপেক্ষায় আছি ।
দেবে কি যেতে , যেতে দেবে কি ?
একটি অনুরোধ , বায়না করো না ;
তোমাকে সঙ্গী করতে পারবো না ।
হয়তো কথা ছিল –
তুমি আর আমি এক সাথে যাব !
তবু তুমি থাকো আমি যাই ।
তুমি গেলে পৃথিবী দেখবে কে ?
সমাজ পরিবেশ ঘর সংসার ,
পৃথিবীর সব কোলাহল শেষ হবে !
আমি গেলে তবে –
অরণ্যে পাখিরা জাগবে ।
যেতে দেবে কি , যদি যেতে চাই ?
কোন এক উদ্ধত ঝড়ের রাতে !
অন্ধকার নিঃস্তব্ধ চরাচর ;
দুহাত তুলে ডাকছে আমাকে ।
একটু পরে সেও যাবে চলে ।
আমাকে নিতান্ত একা যেতে হবে !
আমার ভালোবাসা প্রতিক্ষণ ;
তোমাকে করিলাম সমর্পন ।
জানোতো আন্টার্টিকা যাচ্ছি আমি ।
পারোতো সেই হিম দেশের ঘরে ,
তোমার চোখের এক টুকরো
আলো পাঠিয়ে দিয়ো ।
সে বিস্তৃত চোখে আমি –
অনন্ত কাল জেগে থাকব ।
সূর্যের লাল শরীরে –
ধূসর আস্তরণ ফেলে ;
যেন দুরন্ত খরগোশ আমার কোলে ।
মৃদু অন্ধকার পরিপৃক্ত চোখে ;
নিরলস চেয়ে থাকব আমি ।
কেউ কখনো যায়নি যেখানে –
সেখানেই যেতে চাইছি আমি ।
যদি যেতে চাই বাধা দেবে নাতো ?
হয়তো এক সময় দিনে রাতে বারে বারে ,
বিদায় বিদায় বিদায় চাইব আমি ।
সেই – সেই শরতে কি বসন্তে
যখন তখন সর্বক্ষণ ।
বনের পাখির নীড়ের ধারে ;
নাটা গাছের ফল খেয়েছি আমি ,
আজ আমার আর খিদে নেই ।
মনে মনে ভেবেছি সমভূমি ছেড়ে –
ঘর বাড়ি ছেড়ে আফ্রিকান অরণ্যে ;
অতি নিবিড়ে নির্জনে ঘর বাঁধবো ।
অনেক জোছনায় তারার বনে ;
প্রিয় তোমাকে অনন্ত চোখে দেখব ।
প্রিয় কখনো কোথাও বনের ধারে ,
সবুজ ধূসর পাতার ভীড়ে ;
ভাদুরে অষ্টাদশী চাঁদ দেখেছো কি ?
থাক ছাড়ো ওসব কথা –
আমি এখনই যেতে চাই ।
একটি অনুরোধ বায়না ধরোনা ;
তোমাকে সঙ্গী করতে পারবোনা ।
মনে পড়ে কি তোমার –
একদিন আমি ছিলাম ,
এই উপমহাদেশের রাজা !
আমার পাত্র মিত্র পারিসদ দল ;
সকলেই একে একে চলে গেছে ;
যাওয়ার বেলা আমাকেও ডেকে গেছে ।
আমি কথা দিয়েছি তাদের –
একদিন ঠিকই যাব ।
কাল গভীর রাতে ,
যখন অঘোরে ঘুমিয়ে ছিলাম ;
শুকতারা মনে করিয়ে দিলে ।
অন্ধকার নিঃশব্দ চরাচর ;
দু হাত তুলে ডাকছে আমাকে ।
যদি যেতে চাই বাধা দেবে নাতো ?
যে সূর্য্য তোমার আলো দিয়েছে ,
যে পৃথিবী তোমার পালন করেছে ;
তাদের কাছেই তুমি থাকো ।
তুমি গেলে তারা যে বড়ো ব্যথা পাবে !
দেশ সময়ের ক্রান্তি রাতেই আমি যাব ।
যদি কখনো তোমার শ্বাস প্রশ্বাস ,
তোমার প্রেম তোমার আলো ;
ডাকে আমাকে –
একদিন ঠিকই ফিরে আসবো ।
কালের সাথে ইতিহাসের অবক্ষয় ;
মনের সাথে মানসীর মন বিনিময় ,
অনাবিল আশা বাসা বেদনায় ।
প্রিয় তোমার লাবণ্যের উচ্ছ্বাসে ,
পাবে বলে এইসব মাটি ,
ওই সব আকাশ ;
কর্কশ মুখে কাঁপে ।
প্রিয় অন্তত আড়ষ্ট মুখে দিয়োনা বিদায় ।
ঘোর তমসা আমার শিরে !
এখন শুধু তোমার অনুমতির অপেক্ষায় ।














এবং একুশ

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন