ফরাসি কোনো জাদুছড়ি
ঋতব্রত ঘোষ
মধুর কণ্ঠস্বর শোনার অবকাশ এখন নেই আর ।
একুরিয়মে ঠোঁট ঠুকে ঠুকে ভেসে আছে ওই গোল্ডফিসটা,
কি অস্বস্তিকর যে লাগে ও যখন তাকিয়ে থাকে আমার দিকে,
বা যখন আমি ওর দিকে তাকাই ।
তাকাতেই হয়।
অস্ফুট কথা, ধ্বনি, পায়ে আটকে থাকা ভেজা স্লিপারের ফত্ ফত্
দূরে কোনো বাড়ির ছাদে পাথর পিটছে,
আনমনে শুনি
শুনি এই শব্দগুলো ।
আর ঠোঁট ঠুকে ঠুকে একুরিয়মের দেয়ালের গায়ে
গোল্ডফিস ।
হঠাৎ মনে হল ও চুরমার করে ফেলেছে কাচ,
জলে ভেসে গেছে ঘর,
দেয়াল বেয়ে বেয়ে জলের স্তর বাড়ছে,
কার্নিশ বেয়ে চুঁয়ে পড়ছে,
রাস্তা, শহর জলের ভেসে যাচ্ছে,
কাচের টুকরো বাড়িময়,
জাদুময় লাগছে সবকিছু,
অনর্গল ছটফট করছে গোল্ডফিসটা শুকনো আবেশে,
মাঝের দেয়ালে ভেজা ক্ষত ভরে উঠেছে,
চিড় ধরেছে দেয়ালটায় ।
দুই আঙুলে তুলে ধরি তাজা মাছটাকে,
শেষবার স্তব্ধ হয়ে যাবার আগে
পরখ করি ওর ঠোঁটদুটো,
ড্যাবড্যাবে চোখের না থাকা পাতা
নজর করি,
আঁশ
আঁশের গড়ন,
জরির কাজ,
আমার চোখ কপালে ওঠে
তখনই যেন দৃশ্য বদলে যেতে অবাক হই,
ছলকিয়ে ওঠা জলের তরঙ্গে ভাসতে ভাসতে
চলে যাই তোমার বাড়ি
সচকিত তোমার আঙ্গন
ভরা যৌবন তোমার,
এক নিঃশ্বাসে
ধোঁয়ার বিস্তারে
পলকের এক লহমায়
নিঃশেষ করি তোমাকে ।
মনে আছে
তোমার ঠোঁট দুটি
আর কাচের স্তন
নিজের ঠোঁটের আয়ত্তে নিতে নিতে নিতে
চুরমার হয়ে গেলাম,
খণ্ড খণ্ড হয়ে অণু,
গুণকের অবশ্যম্ভাবী অনুমানে নিজেকে জেগে উঠতে দেখে
শেষবারের মতো স্তব্ধ হয়ে যাই
নিবিড় শুকনো সান্নিধ্যে ।
এবং একুশ
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন