মহাশ্বেতা
মৌসুমী মন্ডল
সবাই মাতৃজঠরের অন্ধকার থেকে ফিরোজা আলোয় আসে।
আবার ফিরেও যায় নিশাচর হয়ে।
শুধু মাঝেমধ্যে কারো কারোর মধ্যে
আলো থেকে যায় জলপ্রপাতের মতো।
এমনটা কল্লোলিনী মহাশ্বেতার
ক্ষেত্রেও ঘটেছে।
তিনি চলে গেছেন।
গত দু 'দিন ধরে আমরা
শোকগুলো বিছিয়ে রাখছি
নন্দনের ঘাসে, দেয়ালে, কাঠের ফ্রেমে,
ইঁটে, বইয়ের পাতায় আর কিছু অশৌচ ফুলের পাপড়িতে।
পাশেই কাঁচের গাড়িতে শায়িত
'হাজার চুরাশির মা '।
শরীরের পাকেপাকে তাঁর জ্বলছে চাঁদ।
শবরেরা শোকগুলো বিছিয়ে রাখলো কলজের রক্তকিংশুকে আর জারুল
বনে বনে।
শাল পিয়ালেরাও মালভূমির আঁধারে দাঁড়িয়ে কেঁদে কেঁদে লাল কাঁকুড়ে
মাটি ভেজালো।
পাতার ফোঁকর দিয়ে দেখলো একটা অন্ধকার মিছিলে শববাহী গাড়িতে শুয়ে আছে এক আলোর শরীর।
মহাশ্বেতা মেয়েটি ভীষণ ঠান্ডা ছিলো। তার পায়ের ছাপে
ছাপে সোনালি ধানের সুঘ্রাণ।
কথা বেয়ে বেয়ে নেমে আসতো নারী জাগরণ, আদিবাসী আন্দোলন আর সাহিত্যের রেনেসাঁ।
চলে গেলেন মহাশ্বেতা।
তাঁর আলোকে নেভাতে পারে
এমন ঝড়ো বাতাস আর নেই।
এবং একুশ
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন