শনিবার, ১ অক্টোবর, ২০১৬

সম্পাদকীয়


সম্পাদকীয়



প্রকাশিত হলো 'এবং একুশ' অক্টোবর, ২০১৬ সংখ্যা।

এই সংখ্যার নির্বাচিত কবিরা হলেন



চয়ন
আরশাদ উল্লাহ্‌
সলিল বোস
দন্ত্যন ইসলাম
সাবিনা ইয়াসমিন
পাপিয়া গাঙ্গুলি
রতন সেনগুপ্ত
কৌস্তভ
নারায়ণ মেইকাপ
প্রতীক ঘোষ
পারমিতা চক্রবর্ত্তী
তুষার আহাসান
সোমস্নিগ্ধ মুখোপাধ্যায়
কম্পাস মণ্ডল
পরিতোষ মাহাতো
সোমাদ্রি সাহা
মৌসুমী মণ্ডল
সৌম্যদীপ রায়
গোপেশ দে
জাফর পাঠান
পলাশ কুমার পাল




এবং একুশ

চয়ন



ঘেন্না 
চয়ন


ঘেন্না করছে,ঘেন্না করছে,ঘেন্না করছে। 
অল্পবিদ্যা, মধ্য মেধায় পচন ধরছে ; 
গুপ্ত অহং মারণ যজ্ঞে মন্ত্র পড়ছে । 
ঘেন্না করছে। 

সৃষ্টি দুলছে, কাপড় খুলছে চণ্ডীর রামী 
বিনিদ্র রাত, কামার্ত এই লম্পট আমি -- 
হাতের মুঠোয় শ্লথ পৌরুষ কাতরে মরছে। 
ঘেন্না করছে। 

ঘন নিঃশ্বাস, রতির সুবাস, জুগুপ্সা ঘ্রাণ, 
নাগর বাঁশির অতৃপ্ত সুর ,বিরক্ত প্রাণ -- 
আত্মরতির নির্বেদ মাখা বিন্দু ঝরছে। 
ঘেন্না করছে। 

আয় পাড়ে আয়, তোল্ না আমায় পানসিতে তোর; 
হিমেল চুমোয় অনন্ত হোক খণ্ড প্রহর ---- 
যমের দিব্যি ওষ্ঠে প্রলয় বিষাণ তুলব । 
ঘেন্না ভুলব।




এবং একুশ

আরশাদ উল্লাহ্‌






আমার গ্রাম
আরশাদ উল্লাহ্‌




এটি আমার গ্রাম
তিন দিকে তার তিনটি নদি
উত্তরে ‘শালদা’ একটির নাম!
পশ্চিমে বুড়ি নদী বড় আঁকাবাঁকা
পূর্বে মৃত নদী শালদার স্মৃতি ঢাকা
নেই তার কোন নাম
এটি আমার গ্রাম!


গাছের ‘পরে পাখীদের বাসা
সবার মনে অগাধ ভালবাসা
পাশাপাশি ঘর কেউ নয় সার্থপর
সুখেদুখে আসে কাছে নয়তো পর
সবাই স্বজন নেই কোন দুর্জন
যুদ্ধে যারা দিল প্রাণ বিষর্জন
স্তম্ভে লিখা আছে তাদের নাম
এটি আমার গ্রাম!

চাষকরে খায় ফলায় ফসল
চায়না কিছু সুখটাই আসল
সন্ত্রাস নীতির বুঝেনা কিছু
নেই ভয়ভীতি কল্পিত জুজু
নেই হানাহানি পুলিশি হয়রানী
নেই গুম হত্যা ইজ্জতের হানি
যুগে যুগে আছে তার সুনাম
এটি আমার গ্রাম।

এ গ্রামের ছেলেরা যুদ্ধে লড়েছে
রক্তের বদলে স্বাধীনতা এনেছে
রক্ত লাল জবা - ফুটন্ত মিনারে
ফুল দিয়ে সবাই - কুর্নিশ করে
আগলে রেখেছে তারে কৃষ্ণচূড়া
সবার গর্ব গ্রামের সন্তান তারা
এখানে শহিদেরা ঘুমিয়ে রয়েছে
পাথরে লিখা তাদের নাম
এটি আমার গ্রাম!

পতাকায় রয়েছে শহীদের রক্ত স্বাক্ষর
মুছবেনা কোনদিন স্বাধীনতার অক্ষর
স্বাধীনতার নামে ভাঁড়ামি করে
রাজনীতির নামে শহরে নগরে
এনেছে সন্ত্রাস গুম হত্যা ধর্ষণ
খামোশ তোদেরও যাবে জীবন
সে দিন আর বেশি দূরে নয়
এ গ্রামে যদি - অনাচার হয়
শহিদেরা আবার উঠবে জেগে
দাঁড়াবে তারা - সবার আগে
মুছে দিবে তোদের নাম
এটি আমার গ্রাম!









এবং একুশ

সলিল বোস



আপসোস 
সলিল বোস


কল্লোলিত নব যৌবনের চঞ্চল হিল্লোলে
পেরিয়ে গেছে কলেজের মধুময় দিনগুলি
দায়িত্ব মুক্ত সেই সময়টা আমার কেটেছে
কলেজ পালিয়ে সিনেমা হলের কোণের সিটে
কিংবা পার্কে গাছের আড়ালে নিভৃতে
প্রিয় বান্ধবীর সাথে প্রেম প্রেম খেলায়।
একান্ত অন্তরঙ্গতার উত্তেজনাময় মুহূর্তের
সেই দিনগুলি ... আহা!
ভালই চলছিল সবকিছু, হঠাৎ তাল কেটে গেল
সেই ঘনিষ্ট বান্ধবী যখন বিয়ের প্রস্তাব দিল।
কয়েকটা দিন নানা আছিলায় এড়ানোর পর
বেশি দেরী করিনি বেকারত্বের দোহাই দিয়ে
তাকে বিয়ে করার প্রস্তাব উড়িয়ে দিতে ...
অসহায় প্রেয়সীর চোখের জলও পারেনি
অস্বীকারের সিদ্ধান্ত থেকে আমাকে টলাতে।
কিন্তু ঐ ঘটনার ঠিক দুবছর পরেই আমি
সুবোধ বালকের মতো পিতার হুকুমে
গুটি গুটি পায়ে বিয়ের পিঁড়িতে বসেছিলাম
বাবার অফিসের হেড ক্লার্কের মুখরা মেয়েকে
অর্ধাঙ্গিনী বানাতে ... চাকরির প্রলোভনে।


আমার জীবনের পরবর্তী গল্প অতি সাধারণ
আর পাঁচটা ছাপোষা কেরানির মতোই
একনাগাড়ে চলছে ... প্রতিদিন একই রুটিন।
বাজার-অফিস-ঘর-আড্ডার একঘেয়েমী...
সংসার নামক জোয়ালে জুরে থাকা
কলুর বলদ বলেই মনে হয় এখন নিজেকে।

জীবনের এই গোধূলিবেলায় পৌঁছে
আজকাল আমার খুবই মনে পড়ে
হেলায় হারানো সেই বান্ধবীর মিষ্টি ভঙ্গিমা...
তার অসম্ভব সুন্দর মুখ টেপা হাসির ছবি...
ঘনিষ্ট মুহূর্তে আধো আধো স্বরে উচ্চারিত
দাম্পত্য জীবন নিয়ে তার দেখা স্বপ্নের বর্ণনা...
চরম আকর্ষণীয় সোনালী ভবিষ্যতের পরিকল্পনা...
ভালবাসা সিক্ত মধুরতম মিলনাত্মক কাব্যিক নীড়...
শুধু আমরা দুজন .... অন্য কেউ থাকবেনা ...
শাড়ি...গয়না নিয়ে চাপ দেওয়া তো দূর
ডাল ভাত, কিংবা সেটাও রোজ না জুটলেও
কখনও তা নিয়ে ঝগড়া না করার অঙ্গীকার...
সকাল থেকে আমার অফিসের রান্নার ব্যস্ততা...
সারা দুপুর আমার বিরহ জ্বালায় অস্থির সময়...
বিকেল থেকে সেজে গুজে রাস্তা দেখা...
কখন আমি ফিরে আসব অফিস থেকে...
পাঁচ বছর চুটিয়ে প্রেম, তারপর একটি সন্তান...

কুমারী মনের কল্পনার অকাল মৃত্যু ঘটিয়েছি আমি।
তার স্বপ্ন ভঙ্গের বেদনাতুর সেই অশ্রুসজল চোখ
বিনা প্রতিবাদে মাথা নিচু করে তার চলে যাওয়া
আজও আমি ভুলতে পারিনি...বুকে মোচর দেয়।

তাকে ঘরনী করলেই বোধহয় ভাল হোত,
সে কিন্তু খুবই নরম ছিল, এত দজ্জাল ছিল না।
এখন কেবল আপসোস আর আপসোস।





এবং একুশ

দন্ত্যন ইসলাম

এক বৃষ্টির জন্য ভেজা ফুল
[শামসুন্নাহার বৃষ্টির জন্মদিন উপলক্ষে নিবেদিত।]
দন্ত্যন ইসলাম




হাসনাহেনা শুধু গন্ধ বিলাতে জানে
গন্ধ বিলাতে জানে শুধু গন্ধরাজটি
ওরা ফুল নয়, ফুলের চাইতে উন্নত
ওরা মানুষ নয়, তাদের চেয়ে পবিত্র।
যতটুকু রূপালি রৌদ্র আছে তোমার ভেতরে
ততটুকুই আলোকিত করে দেয় তা ফুলের বাগান
যারা খুব স্থির দাঁড়িয়ে আছে নিজের পায়ে
ঠিক হাসনাহেনার ঝুলন্ত ফুলবতী ডাল
গন্ধরাজের অবারিত সৌন্দর্যের ডালপালায়
রোদ সেই তোমাদের মঙ্গল করে আপন রীতিতে।


বৃষ্টিতে মাখা কিছু শব্দ বানিয়ে আজ রুমাল বানালাম
রুমালে লিখে দিলাম বিনম্র উপহার
যার মহাভাণ্ডার ঐশী পারাবত দিয়ে গেছে
সন্ধ্যার কিছু আগে--
যখন তুমি গোলাপের পাতায় মিশ্রিত জলের অতলে
সাঁতার কেটে কেটে স্নান করছিলে।
পর্যাপ্ত মেঘলা দিন পেয়েছিল তোমার বিশেষ দিনটি
যেখানে ছিলাম না অপরিচিত আমি
না থেকেই তুলতুলে পেস্ট্রির বুকে চালিয়েছি
কোমল আঘাত, মজলিশ থেকে তখন
আনন্দের করতালি বাজিয়েছিল খুশিরত অচেনা।
তার পাশে রাখা ছিল হাসনাহেনা আর গন্ধরাজের মুঠো।


হে জন্ম পাহাড় তোমার হৃদয়ে ঠাঁই হবে
জারুলবনের বিশালতা
হরিণের পাল দুষ্টুমি হেঁটে যাবে জ্বলন্ত আগুন পাশ কাটিয়ে,
শপথ নিতে দাও সময়টুকু; রং করা চকমকি ঢেলে
উদযাপন করি তোমার উল্লাস দিন
তোমার মতো করে সাজানোর দিন।
এমন দীর্ঘ নৈঃসঙ্গের কবলে আর পড়িনি আমি
পরপর একাধিক একা ছিলাম
একটা বাড়ি মনে হচ্ছে ফুলের বাগান নয়
যার সবুজ ঘাসের ওপর শুয়ে নেই কোনও রমণী
অথচ জানো, ঘাসগুলো কেমন হলুদ হয়ে উঠছিল বারবার।
যেন কলকল পাখিদের সুরে তাজা হচ্ছিল পাতা
চারিদিকে সিম্ফনি বাজছে সুন্দরে সুন্দরে
টোল পরা গালের স্ফটিক হাসি শুনে
তার কোনও এক বিশেষ দিনে।


2> সমুদ্রের ডাকনাম ঢেউফুল
-----------------


আদর করে ঘুমের মিলনকে পৃষ্ঠার
দ্বিভাঁজ কোটরে শুইয়ে ফেলে
ডুগডুগির কর্ণস্নানে
দমহীন ফুঁ উল্টিয়ে
বহুবিধ আশালতা রোপণ করে উড়ালপুল।
ঘুমন্ত ঘোড়ার আদলে
আষাঢ়ের মেঘচূড়ায় ছায়ার মার্জিন
এঁকে দেয় ক্লাউন নগরী।
মিলনের শহরে বুক এলিয়ে
স্তন্যপায়ী শিশুদের দুধ পান করান
গর্ভবতী কুমারী পাহাড়।
বেশরম দর্শক দূরবীন কাঁধে
হেঁটে বেড়ায় পাহাড়ের খাদে খাদে
কোথাও নতুন গজায় সোনালি চুল
ও চুলের ক্রিসপি শব্দ।









এবং একুশ

সাবিনা ইয়াসমিন




শরৎকে তুমি ভেবে
সাবিনা ইয়াসমিন


মাঝে মাঝে শরৎকে তুমি ভেবে ভুল হয়
তার আকাশের নীল, সাদা মেঘ
আর মিঠাস রোদ্দুর
আমি প্রাণভরে ছুঁই।


তোমাকেও বলি
এভাবেই ছুঁয়ে থাকো
কাশফুলে কোমল হাওয়া হয়ে
অন্তহীন নীলাকাশ হয়ে
শিউলির বোঁটায় হলুদ রঙ হয়ে।

আমি মালা গাঁথবার ছলে
তোমাকেই গাঁথি
খোপায় পরি, বাহুতে জড়াই।

মাঝে মাঝে
শরৎকে তুমি ভেবে ভুল হয়
আমি বরষার শেষ গান দিয়ে
তোমাকে বরণ করি
আমার সবুজে।

তোমাকে বরণ করি
সংসদ ভবনের লেকে, চন্দ্রিমা উদ্যানে
রমনায়
দুপুরে, সকালে, সন্ধ্যায়
রাতগভীরের অবিশ্রান্ত ঝিল্লির ঝংকারে ।

মাঝে মাঝে তুমি ভেবে ভেবে
শরৎকে ছুঁয়ে যাই
আর তোমার আকাশি রঙ দেখতে দেখতে
অন্ধ হয়ে যাই ।

মাঝে মাঝে তাই
শিউলি ফোটার শব্দে
তোমার পায়ের আওয়াজ পাই
আর তোমাকে বসাই রাজাধিরাজ
পৃথিবীর সকল প্রেমিকের অসূয়ার বিপরীতে
আমার সাতনরি হারে।

মাঝেমাঝে তুমি ভেবে ভেবে
শরৎকে ছুঁয়ে ফেলি
আমার তৃষ্ণার ওপারে তখন
পোড়া বনভূমি কাঁপে।



এবং একুশ

পাপিয়া গাঙ্গুলি

চিঠি
পাপিয়া গাঙ্গুলি


রোজই ভাবি মেইল বক্সে একটা চিঠি আসবে।
সেই বিশেষ নাম লেখা, বিশেষ সম্মোধনের,
যে চিঠিটা এলে আমার সব অসুখ সেরে যাবে।
করে ফেলা সব ভুলগুলো একটা যুক্তির সান্তনা পাবে।
ঘুর্নি হয়ে ঘুরতে থাকা ভয়, কুরে খাওয়া কিছু খারাপ লাগা-
উড়ে যাবে ,ছু মন্তরে -রঙ বেরঙ প্রজাপতি হয়ে।
সূর্যটাকে সেদিন একটা হাসি ছুঁড়ে একটু প্রশ্রয় দিয়ে দেবো।
তাই রোজ কছলানোচোখে ,ঘুম স্বপ্নঘোর টুকরো আশায়,
আঙুল পৌঁছে যায়,স্পর্শ ফোনের মোলেম বুকে।
আলতো ছোঁয়ায় হুড়মুড় করে হাজির কতখবর! লটারিতে টাকা পাওয়ার ,কারোর জন্মদিন
রোগা হওয়ার নানা উপায়ের লোভ,
রান্নার হদিস,সস্তায় বেড়ানোর ফিকির,
দিন ভালো যাবে তো! অথবা সংবাদ দৈনিক,
এমন অগোছালো অনেক কিছু,এলোমেলো।
শুধু মেইলবক্সটা চোখে চোখ রেখে বলে, "আসেনি!"
চোখ বুজে ফেলি, সত্যিটাকে মুখ ভেংচে দিয়ে।
একমুঠো অপেক্ষা সড়িয়ে রেখে,খুশির মুখোশ আঁটি।
আচ্ছা, তোমার ওখানে কি ইন্টারননেট নেই?
আমার ইমেইল ঠিকানা দিতে ভুলে গেছিলাম কি ?
মোবাইলটা দিয়ে দিলেই হতো,
একটা ওয়াটস আপ ও করতে পারতে।
যাবার আগে সব শিখিয়ে ছিলাম তো!
আসলে অসুখ করেছে আমার ,মন খারাপের।
তোমার একটা চিঠি এলেই -
একদম ভালো হয়ে যাব ,বাবা!





এবং একুশ

রতন সেনগুপ্ত



ধূর্ত রাত
রতন সেনগুপ্ত



কয়েক লক্ষ ধূর্ত রাত মধ্যে বসে
তোমার আমার
বুকের মধ্যে আগুন জ্বেলে খাচ্ছে
মধ্যযুগ বৃষ্টি জল
শিকড় থেকে গজাচ্ছে ডালপালা


হাল দিচ্ছে সার দিচ্ছে দিচ্ছে অঢেল পানি
উপড়াবে কে
বুকের মধ্যে অন্ধ আশমানি
মগডালে আছেন যিনি জানেন তিনি
কাঁটা থাকলেও এটাই নিরাপদ
অন্ধকার কাটলে যদি হাঁটে সূর্যরথ

মাঝে মধ্যে জামাকাপড় শুকিয়ে নিলেই হল
সুখের মধ্যে অসুখ থাকে - থাক না
কয়েকটা বুলেট দিয়ে ঘুচিয়ে দেব বায়না
অন্ধকার কেটে গেলে মুখের সামনে আলো
এর চেয়ে বেঁচে থাক মৌল .... মৌল .... মৌল ...

কয়েক লক্ষ ধূর্ত রাত মধ্যে বসে
তোমার আমার






এবং একুশ

কৌস্তভ



ঘড়িতে একটা পঁচিশ !
কৌস্তভ



অবশেষে তখন রাত্রি একটা পঁচিশ ¦ শহরের
বড় ঘড়িটা জানান দিলো ¦ এবার
নিশ্চিন্তে আমি আমার সমস্ত ভাবনাকে
রাজনীতিতে বন্দি করে, ঘুমন্ত করে তুলেছি !
শুধু আমি আছি আধোঘুমে ! নিশ্ছিদ্র
নিরাপত্তার ভ্রান্ত ঘেরাটোপে !


চ্যাপলিনরা আজও আমাকে দেখে হাসে ! আমি
ভুলে গেছি কিছু হাসি উপহার দিতে !






এবং একুশ

নারায়ণ মেইকাপ



বাসি ফুল
নারায়ণ মেইকাপ



খোকা খোকা চোখ বয়স
যদিও তলে তলে দুপুর গড়িয়ে
কবে চলে গেছে, যদিও সহসা
বোঝা মুশকিল। তবু যতটা
মাখন মোলায়েম গলায় বলা
যায় সেরকম মিহি সুরে
হাতে ট্যুরিস্টার-এর হাতল
ধরিয়ে দিয়ে বলল, কিছু
মনে করিস না লক্ষ্মীটি,
এবার তুই পথ দ্যাখ।
-আস্ত পৃথিবীর আমি মালিক






এবং একুশ

প্রতীক ঘোষ

গুচ্ছ কবিতা
প্রতীক ঘোষ




১.আকাশ ও সে




অফিস থেকে ফিরে
চার মিনিট এর রাস্তা তাকে হেঁটে আসতে হয়
এই চার মিনিট এর রাস্তাই
তার সাথে আকাশের কথা দেখা করার সময়।
অফিসে ঢোকার সময় থেকে বেরোনোর সময়
আকাশের রঙ পালটে যায়।
সে চশমার উপরে লেগে থাকা বাষ্প মুছে
আকাশের দিকে তাকিয়ে হাসে
আকাশ কি ক্লান্ত,কতোদিন ঘাড় নিচু করে বেঁচক আছে অমানুষ এর মতো।
একটা চুয়াল্লিশ নম্বর বাস চলে গেলে
তার মনে হয় এ জীবন চাই না।
পরের চুয়াল্লিশ এর বাসে
সে দরজায় পা রাখার জায়গা পায়।
বাস এই জীবন না চাওয়া মানুষ দের
ভিড় নিয়ে এগিয়ে যায়
দশ ফুট বাই দশ ফুট এর গন্তব্যে।
এরপর আকাশ মিটি মিটি তারায়
তার দিকে তাকিয়ে
পাঁজর ফাটিয়ে হাসে।


২. আমাদের এই জন্ম


সকাল থেকে লেবু পাতা গুলো
নরম হাওয়ায় দুলছে।
এরপর,
মানুষের ছায়ার দৈর্ঘ্য ছোট হতে থাকে।
ঘেমে ঘেমে গলে নিঃশেষ হয় দায়িত্ববোধ।
#
এখন কাঠবিড়ালির মতো দ্রুত সন্ধে নামছে।
লেবুপাতার দুলুনি থামে না।
#
মানুষ কখনোও ফুলের জন্ম পাবে না।


৩. সংসার




একদিন বিকেল বেলা আমি
বাগানে ফুল কুড়োতে কুড়োতে
ঘুমিয়ে পড়েছিলাম
চোখ লেগে গেছিল আরকি
ঘুম ভাঙতে দেখি আমি
আর উঠতে পারছি না।
#
জানি না কখন আমার পিঠের উপর
কেউ একটা বাগান চাপিয়ে দিয়ে গেছে
সেই বাগানে দুটো পাখি থাকে
#
তারা গান গায়
বাসা বাঁধে।
#
আমি তাদের আর কোনোদিন ছুঁয়ে দেখতে পারি না
#
আমার পিঠের উর্বরতায়
ফলন্ত সংসার দেখি
#
সূর্যাস্ত অব্দি।









এবং একুশ

পারমিতা চক্রবর্ত্তী



স্মৃতি কবিতা
পারমিতা চক্রবর্ত্তী 



শহরে হঠাৎ মেঘ চলাচল
জোনাকি থাকে স্মৃতি দাগে
কাঁপছিল মন ,অন্যরকম ,
ডাক নাম নামল পরাগে

:
সাড়া দেয় অবুঝ মনের
জাইলোফোন
রূপকথা চোখ রাখে নদী
কোলাহলে
:

রোদেলা আলোয় জন্মায়
মোমবাতির চার্জসিট
মনপাহারায় উঁকি মারে
আলতো বিকেল
:
স্মৃতি ঘুম থেকে ওঠা
ব্যাথার ক্ষিদে
এনলিস্টেড হয় শহরের
খোলা ক্যান্টিনে
:
মনের উষ্ণ ভাঁজে হামাগুড়ি
দেয় বেসামাল ট্রাম
মুঠোর চিনাবাদামে ঢাকা প্রেম
ডাক দেয় সুদীর্ঘ মেয়েবেলার
:
ফুরফুরে হাওয়ায় শহর
তোলপাড় করা ইমোশান
জ্বলে ওঠে ত্রিফলার ব্যস্ততায় ...
:
লজ্জা চিবুক হয়ে ওঠে
অনুরাগের শাড়ি ধরা আঁচল










এবং একুশ

তুষার আহাসান



আমাদের কথামালা-১৩৭
তুষার আহাসান




আমরা এখন বিবেক রাখি সিন্দুকে

সোনা রাখি বন্দকে

চিটিং করি বন্ধুকে।



আমরা এখন চাঁদ ভাবি বিন্দুকে

ভয় পাইনে বন্দুকে

যে যা-ই বলুক নিন্দুকে।



আমরা এখন ভরসা রাখি গার্লফ্রেন্ডে

হিসেব রাখি থাউজেন্ডে

ফুর্তি মারি উইক-এন্ডে



আমরা এখন বাবা-মায়ের দোষ খুঁজি

সামলে রাখি গোপন পুঁজি

নিজেকে ছাড়া কাকে বুঝি!



আমরা এখন গাড়ি-বাড়ির গন্যমান্য

নেশায় নাই ভারসাম্য

সবকিছুতে’মানি’ কাম্য



আমরা এখন গুরুর কথায় পাথর ধরি

পড়শিদের কাতর করি

হাঁটা-যন্ত্রে ওজন ধরি



আমরা এখন চোখ রাখি বৃদ্ধাশ্রমে

কি জানি কখন কদর কমে
               ঠাঁই যেন পাই কোন রকমে।




এবং একুশ

সোমস্নিগ্ধ মুখোপাধ্যায়



চাইব সেদিন শুধু একটি ফুল
সোমস্নিগ্ধ মুখোপাধ্যায়




চূড়ান্ত ধ্বংসের পরে -

যদি শুধু বেঁচে থাকি তুমি আর আমি আর আমাদের মেয়ে,

তবে সেই গাঢ় অন্ধকারে,

নক্ষত্রের শাশ্বত আলোয় নতজানু হয়ে,

আমি শুধু চেয়ে নেব, হে ঈশ্বর - বাগানের শুধু এক ফুল,

যে ফুলের নাভীমূলে যত্নে রাখা পরাগকেশর -

আবার নতুন করে সভ্যতার জন্ম হবে বলে,

স্বভূমি যে চিনে নেবে অবিকল নিখুঁত, নির্ভুল।







এবং একুশ

কম্পাস মণ্ডল



বৃষ্টি
কম্পাস মণ্ডল



কাক ভেজা বৃষ্টির জল তোমার পালকে পালকে
কতটা বৃষ্টির ফোঁটায় চোখের কান্না মোছে ?
ভেজা আঁচল বেয়ে সে জল বুকে।
পোড়া কাঠের টুকরোয় এখনও প্রেম লেগে আছে ;
এমন একটা বৃষ্টির দিনে তোমার চলে যাওয়া --
বৃষ্টির কি হৃদয় আছে কোথাও ?
সে তো শুধুই ঝরে যাওয়া!
বৃষ্টি তোমার কি ছিল কখনও কেউ।
ভেজা শাড়ী টা এখনো ভেজাই আছে -
জানালার কাঁচ বেয়ে বৃষ্টির বিনুনি ;
মৃত্যু তুমি কি ছুঁতে পারো আমায় বৃষ্টির আঁচে ?
এ মৃত্যু, এ বৃষ্টি সবই তুমি আমি জানি ;
বৃষ্টি তোমার কি বয়স হয় না কখনো ?
এ বৃষ্টি আমার বার্ধক্য ছুঁয়ে গেছে ।
অতীত তুমি সাক্ষী হয়ে আছো এ বৃষ্টির জন্মানো -
এ বৃষ্টি আমার হৃদয় গলানো চিতায় আজন্ম শুয়ে আছে।





এবং একুশ

পরিতোষ মাহাতো



একান্ত একা
পরিতোষ মাহাতো



দূর্বার পৃথিবীতে আমি একা;
একান্ত একা
নির্জন পথে চলেছি আনমনে
যেন কোন মরু পথে....
ব্যস্ত প্রকৃতিও শান্ত
থেমে গেছে কোলাহল
নিস্তেজ হয়ে গেছে পৃথিবী
মৃত লাশের মতো।

ক্ষত বিক্ষত করেছ আমায়
তোমার নিষ্ঠুর হাতে
ঘৃণার তির ছুঁড়েছ আমার শূন্য বুকে
নিজেকে নিঃশেষ করেছি
তোমায় ভালোবেসে
আজ আমি একা; একান্ত একা
এই আদিগন্ত রাত্রির নির্জনে।







এবং একুশ

সোমাদ্রি সাহা

এই শরতের কবিতা
সোমাদ্রি সাহা



অজস্র বৃষ্টির বিন্দুতে চশমাটা ঝাপসা,
তুমি আসছো হাসনুহানার গন্ধ নিয়ে
একসময়ের লম্বা চুল-সিঁদুর-ব্লাউজহীন
এক নারী।

“দাদাবাবু, টাকা দিবি!!”

মেঘলা শরতে উমারা বুঝি এমনই হয়...







এবং একুশ

মৌসুমী মণ্ডল



গুচ্ছ কবিতা
মৌসুমী মণ্ডল




এক

খোঁপাটা আজ দুরন্ত নদীর ঢেউ
ওর মোহনায় একগুচ্ছ বেলফুল নিজেই একা রাখতে পারলাম, পুরুষহীন বিকেলে।

দুই

উড়ছি শিশিরে ও রোদে
এবং ঘামে ভেজা নিশ্বাসে
জল-ফড়িঙের ডানায়
কেউ নেই, কেউ নেই
কালো পীচের রাস্তায়
শুধু গাড়ি ভর্তি মানুষের দল
চোখের দিঘীর জলে
শুধু ধোঁয়া জমে

তিন

নাছোড়বান্দা শিশু-ক্ষুধারা কোরাস গাইছে
আহা, কোন প্রিয়মুখ যদি ভালবেসে
এক থালা গরম ভাত দিতো,
তবে ওরা প্রজাপতির মতো উড়ে উড়ে
আর রোদের মতো নেচে নেচে
'খুশির দিন' পালন করতো!

চার

মন কুরে কুরে খেয়েছে ইঁদুরের
সুতীক্ষ্ণ ঝকঝকে দাঁত
তবুও আমার আর্চিজ্ কফি মগে
লেগে থাক সেই শীতের রাতটুকু
তোমার চুমুকের দাগের হয়ে


পাঁচ

আমি তোমার চিরকালের
বিশেষণ ছিলাম, রয়েই গেলাম
তুমি হঠাৎই কেন ক্রিয়াপদের পানে
নদীর মতো নিচ্ছো বাঁক?

ছয়

তুমি হয়েই থাকো
শরতের ঘুমন্ত মেঘ।
আমি কান পেতে
শুনবো দুপুরে
পায়রার শান্ত বকবকম্,
হয়তো সাইবেরিয়ান
পাখি হয়ে
উড়ে যাব অন্য দিগন্তে।
আবার বর্ষামেঘ হয়ে
নিতে যাবো না তোমার খোঁজ।

সাত

কষ্টগুলো ছাই হচ্ছে , হোক না
তোমাকে ছুঁয়ে ছুঁয়ে উজানে
গাঙের ঢেউ,
আমার অনুরাগের ঘর
ভাঙছে !

আট

জানালার শার্সি ভিজছে
রিম্্্্ঝিম্্্্রিম্্্্ঝিম্
আয়নার পারদের গভীরে
যে কবিতাদের বসবাস ্্্,
জলের গভীরে যে জলপাখি
মাছরাঙার স্নান ্্্,
তার প্রতিটি পৃষ্ঠা খুলে দেখি
পূর্বপুরুষদের যুদ্ধ- নিষ্ঠার
কালো অক্ষরদের ্্্
শুধু একটা দোয়েলের ডানা ্্্
শ্রাবনের দিকে চোখ রেখে,
ভিজবে একাকী ্্্

নয়

একটা সকাল পেরিয়ে গিয়ে
ইচ্ছের হীরক কঙ্কন
সহস্রমুখী আকাশ হয়ে ঝুলে আছে
প্রতীক্ষার কনকচাঁপার দোলনাতে।
একটা সাগরের নীল নখের
জলতরঙ্গের আঁচড় বসে যাচ্ছে
আমার ত্বকের অন্তর্বাসে।

দশ

দরদাম শেষে,
জেনে গেছে সাঁতার ভুলে যাওয়া মাছ জীবন, হলো অঙ্ক না শেখা
এক মাতাল মহুয়া বন

এগারো

কী ভীষণ গ্রীষ্ম-দিন
যদি চাও, দিও না হয়
ইভ্ আদমের সবুজ পাতার পোশাক আমরা না হয় আবার আদিম
আবার জোছনার পূর্ণিমা
তুমি হবে চৈত্রমাস,
আর আমি সর্বনাশ
তুমি যদি মেঘআদুরে পাখি
রোদের মত ঝিলিক দিয়ে,
চাইবো ভালো বাসাবাসি

বারো

আমি রাজপুতানার
এক ঘুমন্ত নগরীর কুলবধূ
সহমরণ ও রুদালী
আমার কড়ির গহনা
রাত পোড়া গন্ধ কত প্রকারের হয়!
খোলা হাওয়ায় উড়ছে
আমার বাঁধনি শাড়ির আঁচল
ওগো অনার্য বাঁশিওয়ালা
চল এক সাথে কাগজের মতো পুড়ি

তেরো

ছাদের ফুলবাগানে দু'ফোঁটা চাঁদের আলো বিশ্রাম করছে দেখে
মনে হলো, বিরহ — তিনটি মাত্র অক্ষর
কিন্তু অনুভবের অসুখ দীর্ঘ

চৌদ্দ

বেদনারা আসে যখন তখন
নিঃশব্দে
বেড়াল পায়ে, আওয়াজ পাওয়া যায়না
শুধু রেখে যায় এক আকাশ ঝড়
আর দীর্ঘ চুরুটে পোড়া সকাল বা রাত। কিংবা প্রতীক্ষা






এবং একুশ

সৌম্যদীপ রায়



ঘুমোতে যাওয়ার গল্প
সৌম্যদীপ রায়


শুতে শুতে রোজ রাত একটা
ঘুম আসতে আসতে তারপর রাত দুটো
স্বপ্ন আসতে আসতে ভোর ভোর হয়ে যায় প্রায়

এইভাবেই বাতাসিয়া লুপ ঘুরে আসে
আমার ছোট্ট টয় ট্রেন প্রত্যহ

লাল মাফলার আর আমি
গলা জড়াজড়ি করে হেঁটেই চলি
কত গল্প, কত আড্ডা ও এক প্যাকেট চিনেবাদাম

তোমরা কি কোনোদিন রাত জেগেছ?
দেখবে,
যাদের গল্প শুনতে চাইছো
সবাই ম্যালের বইয়ের দোকানে টিনটিন কিনছে
আইস্ক্রীম আর পোকালাগা দাঁতের একটা রোমহর্ষক কাহিনী

ভোর হলেই আমার ঘরের জানালা দিয়ে আদর রোদ আসে
বিছানাপত্র জেগে উঠলেও
গেরস্থালী আলো করা স্বপ্নঘোর
আমার পাশেই ঘুমিয়ে থাকে
তার করুণ আদল দেখে আমি ডেকে উঠতে পারিনা

আমি যে সকাল দেখিনি অনেকদিন
সেটাই একটা নেশা হয়ে দাঁড়িয়েছে এখন
আর আমি কিছুতেই ঘুমোতে যেতে পারিনা
যখনতখন ইচ্ছেমতন।







এবং একুশ

গোপেশ দে

নকটার্ন
গোপেশ দে



ক্যাম্প করেছে ওরা বাড়ির সম্মুখে
উঠানে সন্ধ্যে গেছে বেশ বহুক্ষণ
রাতের উষ্ণতায় নকটার্ন দেখে যায়
গীটারিস্ট একজন।
তার চোখে ক্লান্তি নেই,ঘুম নেই
আছে নির্ঘুম পৃথিবী।
একজন কবি হতে সাধ জেগেছে তার,
সিগারেটে টান মেরে
নিকোটিনে হলদে হয়ে সকলকে
আশ্বস্ত করে।
আচ্ছা তোরা বোস্ আমি গাইছি....
বন্ধু বান্ধবীরা আজ অন্ধকারে হাতরে
নেয় পৃথিবীর গন্ধ।
জোৎস্নায় স্নান করে কোমল চোখের
তারা।
গীটারে রবীন্দ্রনাথ শুনতে কেমন
লাগে?
গীটারিস্ট গান ধরে ওঠে-
আগুনের পরশমণি ছোঁয়াও প্রাণে....
গান হল শুরু....
প্লেটে প্লেটে বিরিয়ানি হল
বিতরণ,
হঠাৎ উলঙ্গ হল পৃথিবী
আদিম জগত হতে পাগলের উৎপাত।
পুরোপুরি উলঙ্গ হয়ে প্লেট নিয়ে বসে,
মেয়েগুলি ইরেরেরে বলে প্লেট
গুলি ঝেড়ে ফেলে অন্ধকারে হাত
পাতে বন্ধুদের হাতে ভয়েতে
স্বাভাবিক ঘৃণায়।
উন্মাদ খেয়ে যায় মাটিতে পড়া
রাইচগুলি।
দূর থেকে সবাই ভয়েতে
অসভ্য রাত্রির নেয় ঘ্রাণ।
কোথাও কেউ নেই....
আছে শুধু গীটারিস্ট সেই একজন
গাইছে করুণ সুরে
হারানো পৃথিবীর লেখা গান।
দূর থেকে বাকী ছয়-তিনটি যুগল
দেবদারু গাছের নীচে
নির্লজ্জের মত চেয়ে থাকে
চেয়ে থাকে আরেকজন-
পোড়োবাড়িটির স্কাইলাইট।
#

মন শুধু উদাসী বাউল
- গোপেশ দে
সময়ের ডানামেলা সন্ধ্যায়
পথের মাঝে পড়ে থাকা কোনো স্মৃতি
তুলতে গিয়ে কেঁদে উঠে মন।
চোখের সড়ক দিয়ে
জলের রেলগাড়ি
নেমে আসে রোমন্থনের ক্লাইম্যাক্স ভেসে।
আমি শুধু প্রতীক্ষায় রত
উদাসী হাওয়ারা সব ট্রামে চেপে
আগন্তুক ভেবে
আমার শরীরে লাগিয়ে দিক
আলতো করে।
ট্রামে বসে জানালার পাশে
বসলেই মন শুধু উদাসী বাউল





এবং একুশ

জাফর পাঠান



গোধূলি বেলার চোর

জাফর পাঠান




মনে দিয়ে দোলা করেছে উদাস আত্মভোলা

মনের ঘরে গিয়ে দেখি- সব কপাট খোলা,

যেমন ছিলো তেমন আছে শুধু খোলা তালা

খুঁজে খুঁজে না পাওয়ার- অধীর অস্ত জ্বালা

চোখ বুজলে দেখি- লাজুক এক পল্লিবালা।



গ্রামে গিয়েছি সেই কবে দেখতে গাছপালা

কলকল কল্লোলিত কল্লোলের- নদী নালা,

প্রকৃতি দিয়ে ছাওয়া- ছনের ছাউনি চালা

হঠাৎ দেখি, তালা খোলা চোর করছে খেলা

গোধূলি তেমনই আছে, আসেনি উষা বেলা।






এবং একুশ

পলাশ কুমার পাল






এক বুকে
পলাশ কুমার পাল




একবুক শব্দের বেলুন ফেটে,
কিছু শিশির ঝরছে
নক্ষত্র চুঁইয়ে...
একটা উপন্যাসী সমুদ্র-সৈকতে
নাম লেখে উপোসী আঙুল...

গরম চা'য়ে খসে খসে পরা বিস্কুটে
তবু সকাল আসে-যায়
আর প্রত্যহের বাসি-খবর...

একবুক।
একবুক জলে স্নান সেরে
সূর্যও ডোবে...

আবারও রাত।
একবুক রাতের অভিমান।
টুপ্ করে শব্দেরা দেয় ঢুব-
কম্পাসে আঁকা তরঙ্গে
তরঙ্গায়িত কথারা আবারও বেলুনে;

অ্যাস্ট্রেতে আগুন ধোঁয়া;
সিগারেট থাকে চুপ।



































এবং একুশ